কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর : যাদবপুরে যারা বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থা করেছে তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে ৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক করে এই হুঁশিয়ারি দিলেন BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশবিরোধীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি ৷
গতকাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল বাবুল সুপ্রিয়কে ৷ তাঁর চুলের মুঠি ধরে টানা হয় ৷ সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ তাঁর গাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ পরে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে সেখানে তাঁর গাড়ি করেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন বাবুল ৷ তাঁর হেনস্থাকারীদের গ্রেপ্তারির দাবিতে আজ মিছিল করে BJP ৷
এই সংক্রান্ত আরও খবর : যাদবপুরে "ক্ষুব্ধ" রাজ্যপাল, বিক্ষোভের মাঝেই বের করে আনলেন বাবুলকে
এরপর বিকেলের দিকে সাংবাদিক বৈঠক করেন দিলীপবাবু ৷ তাঁর বক্তব্য, গতকালের ঘটনায় অনেকেই বহিরাগত ছিল ৷ তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ ইতিমধ্যে পাশ করে গেছে ৷ দিলীপবাবুর কথায়, "বহিরাগতরা হাজির ছিল ৷ দাদাগিরি করছিল ৷ বিশেষ মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত হলেও তাদের সমাজবিরোধী বলা যায় ৷ "এরপরই যাদবপুরের পড়ুয়াদের হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলীপবাবু বলেন, "যারা বাবুল সুপ্রিয়ের গায়ে হাত দিয়েছে, তাদের কীভাবে হাত ভেঙে দিতে হয়, তা আমরা জানি ৷" গতকাল যাদবপুরের কলা বিভাগের ইউনিয়ন রুমে ABVP ভাঙচুর চালিয়েছে বলে স্বীকারও করে নেন তিনি ৷ বলেন, "যাদবপুরের ইউনিয়ন রুম 100 বার ভাঙা উচিত ৷ আবারও ভাঙা উচিত ৷" আর সেগুলি দেশবিরোধীদের আখড়া বলে মন্তব্য করেন তিনি ৷ আর তা ভেঙে দিতে BJP পিছপা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন ৷ বলেন, "পাকিস্তানে যেমন সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছে, সেরকম দরকারে আমরা ইউনিয়ন রুম ভেঙে দেব ৷ এখনই ভাঙছি, পরেও ভাঙব ৷" যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তুলে দিলীপবাবু বলেন, "যাদবপুর না কি আমাদের গৌরব ! আর সেখানে কারা তৈরি হচ্ছে ৷ দেশদ্রোহী তৈরি হচ্ছে ৷ যারা দেশের আইন, সংবিধান মানে না ৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় থাকার দরকার নেই ৷"
এই সংক্রান্ত আরও খবর : বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থার প্রতিবাদে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে অবস্থান-বিক্ষোভ ABVP-র
যাদবপুরের পড়ুয়াদের যাঁরা সমর্থন করছেন, তাঁদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন দিলীপবাবু ৷ বলেন, "এরা (যাদবপুরের পড়ুয়ারা) বেহায়া হয়ে গেছে ৷ সামান্যটুকু শ্লীলতা নেই ৷ লজ্জা হওয়া উচিত কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন ৷ কোনও আইন, সংবিধান মানে না ৷ কোন দেশের সংবিধান পড়েছে এরা ? পাকিস্তানের সংবিধান !" যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস "অসুস্থতার ভান" করছে বলে দাবি করেন দিলীপবাবু ৷ সেজন্য কালবিলম্ব না করে এখনই তাঁর পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন BJP-র রাজ্য সভাপতি ৷
এই সংক্রান্ত আরও খবর : "বাবুল সুপ্রিয়র হেনস্থাকারীদের গ্রেপ্তারি চাই", মিছিল রাজ্য BJP-র
গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ না শুনেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় যাদবপুরে গিয়েছিলেন বলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় ৷ এনিয়ে দিলীপবাবু বলেন, "রাজ্যপাল সকলকে ফোন করেছেন ৷ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ৷ সেখানে যাওয়ার জন্য তাঁকে কেন শিক্ষামন্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে ? উলটে শিক্ষামন্ত্রীর উচিত রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে যাদবপুরে যাওয়া ৷" পুরো ঘটনায় রাজ্য সরকার ও পুলিশের ভূমিকারও সমালোচনা করেন দিলীপবাবু ৷ বাবুলকে আটকে রাখার পর 6 ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কেন পুলিশ পাঠানো হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ বলেন, "বাবুলকে ঘিরে হয়তো মেরে ফেলার পরিকল্পনা হচ্ছিল ৷"
এই সংক্রান্ত আরও খবর : যাদবপুর ইশুতে তৃণমূলের বিবৃতি দুর্ভাগ্যজনক : রাজভবন
দিলীপবাবুর বক্তব্য, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এই ঘটনার সমালোচনা করা উচিত ৷ বাবুল সুপ্রিয় তো শুধু একজন BJP নেতা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নন, তিনি একজন শিল্পীও বটে ৷ তাহলে কেন তাঁকে হেনস্থার মুখে পড়তে হবে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ বলেন, "শিল্পী, শিক্ষাবিদরা BJP-তে এলে তাঁদের আক্রমণ করা হচ্ছে ৷ আমরা না হয় রাজনীতির লোক ৷ আমার উপর আক্রমণ করলে বুঝে নেব, কাকে কী ওষুধ দিতে হবে ৷ "
এই সংক্রান্ত আরও খবর : বাবুলের প্ররোচনায় গুন্ডারা ভাঙচুর করে ইউনিয়ন রুম, বললেন SFI-এর রাজ্য সম্পাদক