কলকাতা, ২৮ মার্চ : শুনলে আপনিও হয়তো অবাক হয়ে যেতে পারেন। অদ্ভুত হলেও সত্যি। একটি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করে তোলার জন্য দেশের সংবিধানে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া আছে নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু, সেখানে এমন কোনও ক্ষমতা দেওয়া নেই যা প্রয়োগ করে নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দল বা কোনও নেতা-মন্ত্রীকে কঠোর শাস্তি দিতে পারে।
১০ মার্চ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়েছে। সেদিন থেকেই সারাদেশে চালু হয়েছে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি। বিধিভঙ্গের অভিযোগে ইতিমধ্যে রাজ্যের অনেককেই করা হয়েছে শো-কজ। বিভিন্ন জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে পাঠানো হয়েছে রিপোর্ট।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, এসবের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ যে পদক্ষেপগুলি নিতে পারে তা হল, কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা মন্ত্রী বা কোনও ব্যক্তি যদি কুরুচিকর মন্তব্য বা অসাংবিধানিক মন্তব্য করেন তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছ থেকে প্রথমে তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়। রিপোর্ট দেখে কমিশন ঘটনার সবকিছু বিচার করে। এরপর কমিশন যদি মনে করে তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে শো-কজের চিঠি পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন আধিকারিকের মাধ্যমে। সেই নোটিশে উল্লেখ থাকে, ২৪ ঘণ্টা অথবা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে উত্তর দিতে হবে। অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টে জেলাশাসক বা জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে জানাতে হয়, তিনি কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ গেল প্রথম ধাপ।
কমিশন যদি সেই রিপোর্টে খুশি না হয় তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে প্রথমে সতর্ক করতে পারে। যদি উক্ত ব্যক্তি কমিশনের সেই সতর্কবার্তা না শোনে তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে তার গতিবিধির উপর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের এক আধিকারিকের সাহায্য নিয়ে ওই ব্যক্তিকে কমিশন ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখতে পারে। পরবর্তী পর্যায়ে তাঁকে ভোটের দিন বা তার ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে গৃহবন্দী রাখার নির্দেশ দিতে পারে কমিশন বা নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে নিষেধ করতে পারে।
কমিশন জানাচ্ছে, এর পাশাপাশি ওই ব্যক্তি যদি ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় থাকেন তাহলে দেশের আইনে যে শাস্তির কথা বলা আছে তা খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োগ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অনুমতির কোনও প্রয়োজন হবে না।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন কখনোই একজন সাধারণ ব্যক্তি থেকে শুরু করে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা বা মন্ত্রী কারও বিরুদ্ধে সেই অর্থে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে না। অন্যদিকে কমিশন জানাচ্ছে, যদি আইন মোতাবেক কিছু হয় তাহলে আইনে যা বলা আছে সেই মতোই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।