কলকাতা, 27 জুন : কলকাতা হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতিকে অপসারণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি রাজ্য বার কাউন্সিলের । কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির অতীত এবং বর্তমান কর্মকাণ্ড বিচার করলে, তাঁকে অনেক বেশি প্রশাসনিকভাবে দায়বদ্ধ মনে হয়; যত না তিনি একজন বিচারপতি হিসেবে দায়বদ্ধ ।
চিঠিতে বলা হয়েছে বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এর আগে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি ছিলেন । সেখানে 2019 সালের 16 সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীর বার অ্যাসোসিয়েশন বিরক্ত হয়ে তাঁকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।
সেখানে আরও উল্লেখ রয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নারদ মামলায় যেভাবে তিনি অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থন করতে না দিয়েই সিবিআইয়ের একটি চিঠির ভিত্তিতে চার নেতার জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন, তা দৃষ্টান্ত স্বরূপ । বিচারপতির নির্দেশ এক হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল । কলকাতা হাইকোর্টের কর্মরত এক বিচারপতি চিঠি লিখে এই বিষয়টির সমালোচনাও করেছিলেন ।
নারদ মামলা বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে শুনানি চলছে । সেখানে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল সিবিআইকে তাদের হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছেন । কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক যখন হলফনামা জমা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন, তখন তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন । এর থেকেই বোঝা যায় তিনি পক্ষপাত দুষ্ট । এমনটাই দাবি করছে রাজ্য বার কাউন্সিল ৷
আরও পড়ুন : Narada Case : নারদ মামলা : হাইকোর্টকে আগে মমতার আবেদন শুনতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টে একটি ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে । সেই মামলাটি বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর সিঙ্গল বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় । মামলাটি বিচারপতি শুনবেন বলেও জানান । বার কাউন্সিলের তরফে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর বেঞ্চ পরিবর্তন করে বিচারপতি কৌশিক চন্দকে মামলাটি দেন । তিনি জানেন, বিচারপতি কৌশিক চন্দ দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য ছিলেন । স্বাভাবিক নীতি-নৈতিকতার জায়গা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মামলাটি বিচারপতির বেঞ্চে তার রাখা উচিত ছিল না ৷ কিন্তু তিনি রেখেছেন ।
অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ছবি এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ছবি যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে তিনি বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলেই মনে হয় । কলকাতা হাইকোর্টের যে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এর ফলে । এই অভিযোগ তুলে অবিলম্বে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির অপসারণের দাবি করা হয়েছে ওই চিঠিতে ৷