কলকাতা, 7 মার্চ : 2019 সালের 8 এপ্রিল। এরপর আজ। 2021 সালের 7 মার্চ। ব্রিগেডের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেবারের লক্ষ্য ছিল বাংলায় বিজেপির হাতকে আরও শক্তিশালী করে কেন্দ্রের ক্ষমতা আরও একবার নিজেদের দখলে রাখা। আর এবারের লক্ষ্য় গঙ্গাপাড়ের নীল বাড়ি দখল করা।
আসন্ন বাংলর নির্বাচন বিজেপির কাছে পাখির চোখ। ক্ষমতা দখল করতে কোনও কিছুর খামতি রাখা হচ্ছে না। কেন্দ্রের তাবড় তাবড় নেতাদের নিয়ে আসা হচ্ছে দলের হাল ধরতে। বেশ কয়েকজন নেতা রীতিমতো এখানে ঘর নিয়ে থাকছেন। বিশেষ নজর রাখছেন অমিত শাহ। তাঁর নির্দেশ মতোই কাজ চলছে বাংলায়। সেরকমই আজ ব্রিগেড ভরানোর টাস্ক দিয়েছেন অমিত। তাঁর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে কোনও কসুর রাখছে না দল।
ব্রিগেডে কত জমায়েত করতে পারছেন তার উপর নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপ। বাংলার বিজেপি নেতারাও চাইছেন অমিতের থেকে সম্মানজনক গ্রেড পেতে। ব্রিগেডে জমায়েত করে শুধু মোদিকে নয় অমিত শাহকেও চমকে দিতে চান রাজ্য় নেতৃত্ব।
সকাল 9টা নাগাদ ব্রিগেড গ্রাউন্ডে গিয়ে দেখা গেল লোকজন আসতে শুরু করেছেন বিভিন্ন জেলা থেকে। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতার কথায় প্রায় একশো থেকে দেড়শো বাস ইতিমধ্য়ে এসে গেছে। ট্রেনে করেও প্রচুর কর্মী সমর্থক গতরাত থেকে আসছেন। তাঁদের রাখা হয়েছে শহরের বেশ কয়েকটি গেস্ট হাউসে। এবং বিভিন্ন জায়গায় টেন্ট করে তাদের থাকা খাওয়ার ব্য়বস্থা করেছে দল। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল পৌঁছচ্ছে ব্রিগেডে।
জানা গেছে, জঙ্গলমহল থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো বাস আসছে ব্রিগেডের সমাবেশে। সেকান থেকে প্রায় 50 হাজার লোক আনার টার্গেট নিয়েছে বিজেপি। খবর অনুযায়ী, সকাল 10টা পর্যন্ত ব্রিগেডে পৌঁছে গেছেন প্রায় 30 হাজার কর্মী, সমর্থক। বিজেপির দাবি সবথেকে বেশি কর্মী সমর্থক আসবেন দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলি থেকে। পাশাপাশি বীরভূম ও নদীয়া থেকেও প্রচুর কর্মী সমর্থক আনার টার্গেট নিয়েছে দল।
আরও পড়ুন- রাতে কৈলাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ , মিঠুন কি বিজেপিতেই?
রবির ব্রিগেড ভরাতে প্রতি সাংসদদের নির্দিষ্ট টার্গেট দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। তার সঙ্গে যারা সদ্য় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদেরকেও টার্গেট দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পুরো বিষয় নিয়ে শেষ মুহূর্তের আলোচনা করতে গভীর রাত পর্যন্ত কলকাতায় বৈঠক করেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। ছিলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ। এদিকে আজ সকাল থেকেই ব্রিগেডে পৌঁছে গিয়ে পুরো বিষয় নজর রাখছেন শমীক ভট্টাচার্য।
ব্রিগেড সমাবেশকে কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি?
বিজেপির তরফে এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই। তবে এখানেও মমতার চালেই মমতাকে পরাস্ত করতে চাইছে বিজেপি। 1992 সালে বামফ্রন্টের মৃত্য়ুঘণ্টা বাজিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। আজ মোদি সেই ব্রিগেডের মাঠেই পরিবর্তনের ডাক দেবে। 2021 এ গেরুয়া শিবিরের একটাই লক্ষ্য় নীল বাড়ির দখল। সেই দখলের ডাক দিতেই আজ ব্রিগেড গ্রাউন্ডকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু জমায়েতের প্রতিফলন কি সবসময় ভোটবাক্সে পড়ে? রাজনৈতিক মহলের অনেকের মত, 1992 সালে 25 ডিসেম্বর মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যে ব্রিগেডে বামেদের মৃত্যুঘণ্টা বাজানোর ডাক দিয়েছিলেন সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন লাখ আট কর্মী সমর্থক। কিন্তু ক্ষমতা থেকে বামেদের সরাতে সময় লেগেছিল 19 বছর। তাহলে এবার? হাতে আর কয়েকটা দিন। ফল প্রকাশ হবে মে মাসে। ব্রিগেড সভার পর এত কম সময়ের মধ্য়ে পরিবর্তন সম্ভব? উত্তর পাওয়া যাবে 2 মে।