কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি : শুরু যেভাবে করেছিলেন শেষটা সেইমতো হল না । যেন আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল তাপস পালের কাছ থেকে । শেষ জীবনে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন । সিনেমা বা রাজনীতি, কোথাও সেভাবে দেখা যায়নি তাঁকে । 61 বছর বয়সে আজ ভোররাতেই চলে গেলেন তিনি । তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের এলাকার প্রথম বিধায়ক ছিলেন তাপস পাল । প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শোভন । তিনি জানান, একটু আগে খবর পেয়েছি । মুম্বইয়ে মেয়ের কাছে গিয়েছিল সেখানেই না কি মারা গেছে । আমার এলাকা থেকেই প্রথম বিধায়ক হয়েছিলেন তাপস পাল । পারিবারিক সম্পর্ক ছিল । বহুবার ওর বাড়ি গেছি আমি । তাপসও আমাদের বাড়ি আসতেন । খুবই জনপ্রিয় ছিলেন । সবার সঙ্গে মিশতে পারতেন । সিনেমা অভিনেতা বলে কোনও ইগো ছিল না । বহু সিনেমা করেছেন । তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি । তাপস পালের মতো অভিনেতা মারা যাওয়ায় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।
দেবশ্রীর সঙ্গে দাদার কীর্তি ছাড়াও সমাপ্তি, চোখের আলোয়, পর্বত প্রিয়, আগমন, সুরের আকাশেসহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তাপস পাল৷ এভাবে সহঅভিনেতার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন দেবশ্রীও । তিনি বলেন, ''কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না তাপস নেই ৷ আপনজনকে হারিয়ে ফেললাম ৷''
একসময়ের সহকর্মী ও তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত জানান, "আর একটা দাদার কীর্তি হলে মনটা শান্তি পেত । ছোটো ভাইকে হারালাম । জীবনের শেষের দিনগুলি ভালো কাটল না ।"
শোকপ্রকাশ করেন বাবুল সুপ্রিয় । তিনি বলেন, "সকালে হঠাৎ খবরটা শুনে আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, তাপসদা আর নেই । ওনার সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকেই পরিচয় । শেষ সময়টা খুব একটা ভালোভাবে কাটল না । খুবই দুঃখজনক । একটা সময় বাংলা সিনেমায় খুব দাপুটে অভিনেতা ছিলেন । তাঁর মৃত্যুতে সেই স্থানটা শূন্য হল । রাজনৈতিক মতার্দশ আলাদা হতেই পারে । কিন্তু আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ।"
তাপস পালের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন বর্ষীয়াণ তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় । বলেন, "খুব মিস্টি স্বভাবের ছেলে ছিল তাপস । ভালো অভিনেতা ছিল । আমাদের সঙ্গে রাজনীতিও করেছে । আমাদের সাংসদ ছিল । সবার সঙ্গে মিশত এবং সবার উপকার করার চেষ্টা করত । ওর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত ।"
শোকপ্রকাশ করেন অভিনেতা ও BJP নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় । বলেন, "খুবই দুঃখজনক । উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর দাদার কীর্তি ও সাহেব ছবিতে তাপস পালের অভিনয়ে উত্তম কুমারের প্রতিচ্ছবি দেখেছিল বাংলার মানুষ । অভিনেতা হিসেবে খুবই ভালো ছিলেন । কিন্তু শেষ জীবনে টাকার প্রতি একটা লোভ ছিল । আর সেটাই তার জীবন গ্রাস করল ।"