কলকাতা, 26 এপ্রিল: বেড়ে চলা দূষণের জেরে ক্রমশ বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া। প্রভাব পড়ছে মানব জীবনে। সেই দূষণ ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। তৈরি হয়েছে আইন। উন্নত শহরগুলোয় দূষণের অন্যতম কারণ নির্মাণ বর্জ্য। আর সেই বর্জ্য এবার সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াকরণ ও পুনর্ব্যবহার যোগ্য করতে কলকাতা কর্পোরেশনের জমিতে রাজারহাটে অত্যাধুনিক সিএনডি প্ল্যান্ট তৈরি হল ৷ আগামিকাল তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। কর্তৃপক্ষের দাবি, দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই প্ল্যান্ট থাকলেও পূর্ব ভারত তথা এরাজ্যে এটাই প্রথম ৷
কলকাতার মতো শহরে প্রতিনিয়ত চলছে নির্মাণ কাজ। আর তার জেরে উৎপন্ন হচ্ছে ধুলো যা বাতাসে মিশে দূষণ ঘটাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এতদিন নির্মাণ কাজে তৈরি হওয়া বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা হত না। অলিগলি বড় রাস্তার ধারে পড়ে থাকত সেই বর্জ্য। আবার নীচু বা জলা জমি ভরাট করতে ব্যবহার করা হতো সেই বর্জ্য। যার ফলে লাগামহীন দূষণ সৃষ্টি হতো। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের বেশ কিছু বছর আগে তৈরি হয়েছে আইন। আইনমাফিক দূষণে লাগাম দিতে এই সমস্ত বর্জ্যের সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ করতে পদক্ষেপ নিল কলকাতা কর্পোরেশন।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সিএনডি প্ল্যান্ট একটি বেসরকারি সংস্থা তৈরি করেছে। তাকে রাজারহাটে পাথরঘাটায় কলকাতা কর্পোরেশন 5 একর জমি দিয়েছে। চুক্তি অনুসারে তারা কলকাতার এই নির্মাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে। পাশাপশি সেটা থেকে পুনর্ব্যবহার যোগ্য বিভিন্ন জিনিস তৈরি করবে। কলকাতায় প্রতিদিন 4.5 মেট্রিক টন জঞ্জাল উৎপাদন হয় যার মধ্যে 800 মেট্রিক টন নির্মাণ বর্জ্য। এবার কলকাতা কর্পোরেশন সেই বর্জ্য সংগ্রহ করবে তার জন্য একটি টোল-ফ্রি নম্বর চালু করছে পৌরনিগম।
আরও পড়ুন: বর্জ্য প্লাস্টিকের দুর্গন্ধে ঈদের খুশবু খোঁজে কালিয়াচকের 35 হাজার মানুষ
তাতে ফোন করলেই কর্পোরেশন সেই বর্জ্য নিয়ে যাবে। তার জন্য অবশ্য নির্দিষ্ট হারে ফি-জমা দিতে হবে কর্পোরেশনের কাছে। এই প্ল্যান্ট চালাতে ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ কলকাতা কর্পোরেশন ওই বেসরকারি সংস্থাকে প্রতি বছর 5.5 কোটি টাকা দেবে। 10 বছরের চুক্তি অর্থাৎ 55 কোটি টাকা কর্পোরেশনকে দিতে হবে। এই বিষয় কলকাতা কর্পোরেশনের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিক জানান, দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় এই প্ল্যান্ট আছে। তবে পূর্ব ভারতে এই প্রথম। আপাতত প্রতিদিন 500 মেট্রিক টন নির্মাণ বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হবে। ভবিষ্যতে প্ল্যান্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে তা আরও বাডা়নো হবে। সিমেন্ট বা ইট থেকে লোহা আলাদা করা হবে। তারপর লোহা ও অন্যান্য ধাতব কাজে লাগানো হবে। সিমেন্ট ও ইটের বর্জ্য গুঁড়ো করে ফেলা হবে। সেটা থেকে রাস্তা তৈরির কাঁচামাল তৈরি হবে।