ETV Bharat / state

Netaji and Rabindranath : রবীন্দ্রনাথের ‘দেশনায়ক’ নেতাজি বিশ্বভারতী থেকে কার্যত ব্রাত্য

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । দুই কিংবদন্তির মধ্যে বহু চিঠিপত্রও আদান-প্রদান হয় (Relation Between Netaji and Rabindranath Tagore) ৷ তবুও বিশ্বভারতীতে নেতাজির আগমন দিবস স্মরণ করা হয় না ৷

viswabharati university never remember netaji subhas chandra bose
Netaji and Rabindranath : রবীন্দ্রনাথের ‘দেশনায়ক’ নেতাজি বিশ্বভারতী থেকে কার্যত ব্রাত্য
author img

By

Published : Jan 22, 2022, 9:09 PM IST

Updated : Jan 23, 2022, 3:31 PM IST

শান্তিনিকেতন, 22 জানুয়ারি : গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন ‘দেশনায়ক’ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhas Chandra Bose) ৷ শান্তিনিকেতনে তিনবার এসেছিলেন তিনি ৷ আম্রকুঞ্জে গুরুদেবের উপস্থিতিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ৷ দুই কিংবদন্তির মধ্যে বহু চিঠিপত্রও আদান-প্রদান হয় ৷

তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University) থেকে একপ্রকার ব্রাত্য নেতাজি ৷ তাঁর আগমনের দিন স্মরণ করা হয় না (Visva-Bharati university never remember netaji subhas chandra bose) ৷ পাশাপাশি রবীন্দ্রভবনে প্রদর্শিত হতে দেখা যায় না সেই সময়ের স্মৃতিগুলি । যা নিয়ে রীতিমতো আক্ষেপ বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের ।

1914 সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন প্রথমবার শান্তিনিকেতনে আসেন সুভাষচন্দ্র বসু ৷ তখন শান্তিনিকেতন আশ্রম থাকলেও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি ৷ পরবর্তীতে আরও দু’বার শান্তিনিকেতনে আসেন নেতাজি । 1939 সালে শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতিতে সুভাষচন্দ্র বসুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ৷ পরে শান্তিনিকেতন-সহ শ্রীনিকেতন ঘোরেন নেতাজি ৷

viswabharati university never remember netaji subhas chandra bose
বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

আরও পড়ুন : Netaji statue at India Gate : নেতাজির সৌজন্যে সংশোধিত হল এক ঐতিহাসিক অসঙ্গতি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পল্লী-উন্নয়ন সংক্রান্ত মত দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সেই সময় উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন নেতাজি ৷ শান্তিনিকেতন বসে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ধারা নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল তাঁর ৷ তাঁকে ‘দেশনায়ক’ ও ‘নেতাজি’, এই বলে সুভাষচন্দ্র বসুকে সম্বোধন করেছিলেন স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

এছাড়া, 'দ্য ইন্ডিয়ান স্ট্রাগেল 1920-34' শীর্ষক পত্রিকার জন্য লেখা চেয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়েছিলেন নেতাজি ৷ তখন গুরুদেব শান্তিনিকেতনে ছিলেন । এমনকি, 'সঞ্চয়িতা' পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে 1937 সালে বিশ্বকবিকে চিঠি দিয়ে সম্মান জ্ঞাপন করেছিলেন নেতাজি ৷ পাশাপাশি শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণে বসে 1939 সালে গুরুদেব নেতাজিকে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন ।

viswabharati university never remember netaji subhas chandra bose
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । দুই কিংবদন্তির মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া কমপক্ষে 68টি চিঠি রয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Modi to unveil Netaji Statue at India Gate : ইন্ডিয়া গেটে বসছে নেতাজির মূর্তি, 23 জানুয়ারি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

1933 সালে যে সুভাষচন্দ্র বসুকে কবিগুরু তাঁর 'তাসের দেশ' উৎসর্গ করেছিলেন ৷ সেই মানুষটি কালের স্রোতে কবির প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী থেকে ব্রাত্য ৷ প্রসঙ্গত, 1915 সালের 10 মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার ফিনিক্স স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে প্রথম শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধি । সেই দিনটি বিশ্বভারতীতে আজও "গান্ধি পূর্ণাহ্য" হিসাবে উদযাপিত হয়ে আসছে ।

রবীন্দ্রনাথের ‘দেশনায়ক’ নেতাজি বিশ্বভারতী থেকে কার্যত ব্রাত্য

বিশ্বভারতীর অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "গুরুদেব যে দেশনায়কের বর্ণনা দিয়েছিলেন, সেই দেশনায়ককে সুভাষচন্দ্র বসুর মধ্যে দেখেছিলেন ।" বিশ্বভারতীর আরেক অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, "নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আমাদের হৃদয়ে রয়েছে ৷ তবে বিশ্বভারতীর আরও কিছু করা প্রয়োজন ছিল ৷ তাঁর আগমনের দিন থেকে শুরু করে কথোপকথন সংক্রান্ত তথ্য যদি বিশ্বভারতীতে প্রদর্শিত হয় খুব উপকার হবে ৷ যারা নেতাজিকে নিয়ে গবেষণা করেন তারাও অনেক কিছু জানতে পারবেন ।"

বিশ্বভারতীর ইতিহাস বিভাগের ছাত্র সৌরভ বন্ধু দাস বলেন, "আমাদের আক্ষেপ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিশ্বভারতী থেকে ব্রাত্য ৷ যাঁকে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এতটা গুরুত্ব দিয়েছেন, উচ্চস্থানে রেখেছেন সেই নেতাজি বিশ্বভারতী থেকেই ব্রাত্য ৷ এটা দুর্ভাগ্যের ।"

শান্তিনিকেতন, 22 জানুয়ারি : গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন ‘দেশনায়ক’ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhas Chandra Bose) ৷ শান্তিনিকেতনে তিনবার এসেছিলেন তিনি ৷ আম্রকুঞ্জে গুরুদেবের উপস্থিতিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ৷ দুই কিংবদন্তির মধ্যে বহু চিঠিপত্রও আদান-প্রদান হয় ৷

তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University) থেকে একপ্রকার ব্রাত্য নেতাজি ৷ তাঁর আগমনের দিন স্মরণ করা হয় না (Visva-Bharati university never remember netaji subhas chandra bose) ৷ পাশাপাশি রবীন্দ্রভবনে প্রদর্শিত হতে দেখা যায় না সেই সময়ের স্মৃতিগুলি । যা নিয়ে রীতিমতো আক্ষেপ বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের ।

1914 সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন প্রথমবার শান্তিনিকেতনে আসেন সুভাষচন্দ্র বসু ৷ তখন শান্তিনিকেতন আশ্রম থাকলেও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি ৷ পরবর্তীতে আরও দু’বার শান্তিনিকেতনে আসেন নেতাজি । 1939 সালে শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতিতে সুভাষচন্দ্র বসুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ৷ পরে শান্তিনিকেতন-সহ শ্রীনিকেতন ঘোরেন নেতাজি ৷

viswabharati university never remember netaji subhas chandra bose
বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

আরও পড়ুন : Netaji statue at India Gate : নেতাজির সৌজন্যে সংশোধিত হল এক ঐতিহাসিক অসঙ্গতি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পল্লী-উন্নয়ন সংক্রান্ত মত দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সেই সময় উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন নেতাজি ৷ শান্তিনিকেতন বসে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ধারা নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল তাঁর ৷ তাঁকে ‘দেশনায়ক’ ও ‘নেতাজি’, এই বলে সুভাষচন্দ্র বসুকে সম্বোধন করেছিলেন স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

এছাড়া, 'দ্য ইন্ডিয়ান স্ট্রাগেল 1920-34' শীর্ষক পত্রিকার জন্য লেখা চেয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়েছিলেন নেতাজি ৷ তখন গুরুদেব শান্তিনিকেতনে ছিলেন । এমনকি, 'সঞ্চয়িতা' পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে 1937 সালে বিশ্বকবিকে চিঠি দিয়ে সম্মান জ্ঞাপন করেছিলেন নেতাজি ৷ পাশাপাশি শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণে বসে 1939 সালে গুরুদেব নেতাজিকে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন ।

viswabharati university never remember netaji subhas chandra bose
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । দুই কিংবদন্তির মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া কমপক্ষে 68টি চিঠি রয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Modi to unveil Netaji Statue at India Gate : ইন্ডিয়া গেটে বসছে নেতাজির মূর্তি, 23 জানুয়ারি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

1933 সালে যে সুভাষচন্দ্র বসুকে কবিগুরু তাঁর 'তাসের দেশ' উৎসর্গ করেছিলেন ৷ সেই মানুষটি কালের স্রোতে কবির প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী থেকে ব্রাত্য ৷ প্রসঙ্গত, 1915 সালের 10 মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার ফিনিক্স স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে প্রথম শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধি । সেই দিনটি বিশ্বভারতীতে আজও "গান্ধি পূর্ণাহ্য" হিসাবে উদযাপিত হয়ে আসছে ।

রবীন্দ্রনাথের ‘দেশনায়ক’ নেতাজি বিশ্বভারতী থেকে কার্যত ব্রাত্য

বিশ্বভারতীর অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "গুরুদেব যে দেশনায়কের বর্ণনা দিয়েছিলেন, সেই দেশনায়ককে সুভাষচন্দ্র বসুর মধ্যে দেখেছিলেন ।" বিশ্বভারতীর আরেক অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, "নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আমাদের হৃদয়ে রয়েছে ৷ তবে বিশ্বভারতীর আরও কিছু করা প্রয়োজন ছিল ৷ তাঁর আগমনের দিন থেকে শুরু করে কথোপকথন সংক্রান্ত তথ্য যদি বিশ্বভারতীতে প্রদর্শিত হয় খুব উপকার হবে ৷ যারা নেতাজিকে নিয়ে গবেষণা করেন তারাও অনেক কিছু জানতে পারবেন ।"

বিশ্বভারতীর ইতিহাস বিভাগের ছাত্র সৌরভ বন্ধু দাস বলেন, "আমাদের আক্ষেপ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিশ্বভারতী থেকে ব্রাত্য ৷ যাঁকে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এতটা গুরুত্ব দিয়েছেন, উচ্চস্থানে রেখেছেন সেই নেতাজি বিশ্বভারতী থেকেই ব্রাত্য ৷ এটা দুর্ভাগ্যের ।"

Last Updated : Jan 23, 2022, 3:31 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.