কলকাতা, 31 জানুয়ারি: কাঁথি ধর্ষণ মামলায় (Contai Rape Case) রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)৷ অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র নেতা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করলে সেই মামলার আজ শুনানি হয় ৷ মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে । কাঁথি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত শুভদীপ গিরির সঙ্গে নির্যাতিতার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে আদালতে দাবি করলেন অভিযুক্তের আইনজীবী । যদিও শুভদীপ ওই মহিলাকে বিয়ে করতে রাজি নন বলে জানালেন রাজ্যের আইনজীবীরা ।
উল্লেখ্য, কাঁথির তৃণমূল ছাত্রনেতা শুভদীপ গিরির বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে ভিডিয়ো তুলে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নিগৃহীতার পরিবার । ক্ষুব্ধ বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা অভিযুক্তকে নিম্ন আদালত যেন জামিন না দেয় সেই নির্দেশ দেন । তাঁর এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন শুভদীপ গিরি ।
মঙ্গলবার সেই আপিল মামলার শুনানিতে শুভদীপের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, মেয়েটির মা থানায় এফআইআর করেন 10 জানুয়ারি । 18 অক্টোবর 2022-এ একটা ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ জানান তিনি । তারপর 19 জানুয়ারি আদালতে মামলা হয় । একটা স্পেশাল টিম গঠন করে পুরো ঘটনার তদন্তের আর্জি জানানো হয় একজন আইপিএস অফিসারের তত্ত্বাবধানে । এর পরিপ্রেক্ষিতে 2023 সালের 20 জানুয়ারি বিচারপতি রাজা শেখার মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তর জামিন মঞ্জুর না করার নির্দেশ দেন ।
অভিযোগ, 17 অক্টোবর মেয়েটিকে দিঘায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় এবং সেই ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখানো হয় । আক্রান্ত মেয়েটির 17 বছর বয়স । আর শুভদীপ গিরির বয়স 20 বছর । তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল বলে দাবি শুভদীপের আইনজীবীর । তিনি আদালতে বলেছেন, সম্মতির ভিত্তিতেই যৌন সম্পর্ক হয়েছিল দুজনের মধ্যে । এই ধরনের মামলায় অভিযুক্ত শুভদীপের যাতে জামিন না দেওয়া হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ । এই ধরনের নির্দেশ একতরফা বলে দাবি করেন অভিযুক্তের আইনজীবী ।
আরও পড়ুন: কাঁথি নাবালিকা ধর্ষণ মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ অভিযুক্ত ছাত্র নেতা
অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে জানানো হয় যে, ভয় দেখানো হচ্ছে নিগৃহীতার পরিবারকে । মেয়েটির গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে । হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে ৷ ভিডিয়ো দেখিয়ে নির্যাতিতাকে দুবার গর্ভপাত করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ । 8 জানুয়ারি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে সে । রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, যদি সত্যিই ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে, তাহলে বিয়ে করার কথা বলা উচিত অভিযুক্তের । কিন্তু তাও করতে অস্বীকার করছে ছেলেটি ।
শুভদীপ গিরি নিজে তাঁর মোবাইল পুলিশকে দেননি । দিয়েছেন তাঁর দিদি । এখন সে পলাতক । অথচ সিঙ্গল বেঞ্চে তাঁর আইনজীবী জানান যে তিনি তদন্তে সহযোগিতা করবেন । আত্মসমর্পণ করতেও তিনি প্রস্তুত । অভিযুক্তর তরফে আর এক আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী নিম্ন আদালতের বিচারপর্বে কেন বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তোলেন । নিম্ন আদালতে যাতে এই মামলার বিচার হতে দেওয়া হয় সেই আর্জি জানিয়েছেন ।