কলকাতা, 13 এপ্রিল: বেহালার 121 নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ঝামেলার প্রকৃত কারণ হিসেবে উঠে এল নয়া তথ্য় ৷ জানা গেল কাটমানি এবং তোলাবাজির টাকা ভাগ করাকে কেন্দ্র করেই দুই গোষ্ঠীর মধ্য়ে গন্ডগোল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের (Clash at Behala) ৷ প্রায় 14 ঘণ্টা অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। পাশাপাশি কীভাবে ওই এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা হাতের বাইরে গেল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাইল লালবাজার।
মঙ্গলবার রাতে বেহালার চড়কতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের আদি বনাম নব্য দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় । প্রথমে ইট ছোড়া, ভাঙচুর দিয়ে শুরু হলেও পরে গুলি চলতে শুরু করে । জানা যায়, বেহালা থানার পুলিশ এলেও ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আসেনি । পুলিশের সামনেই চলে গুলি । এলাকায় একটি চড়ক মেলা হয় । সেই মেলার কমিটির দায়িত্ব কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি গাড়ি, মোটরবাইক, স্কুটি–সহ একাধিক গাড়িতে চলে ভাঙচুর । ভাঙচুর চালানো হয় তৃণমূল (Trinamool Congress) পার্টি অফিসেও । ভেঙে দেওয়া হয় সিসি ক্যামেরা, জানালার কাচও । সংঘর্ষের আঁচ গিয়ে পড়ে স্থানীয় কিছু বাড়িতেও । বাড়িও ভাঙচুরের পাশাপাশি ভাঙা হয় বাইক । 10টি বাড়ি ও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ।
আরও পড়ুন : TMC Inner Clash at Behala : মেলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত বেহালার চড়কতলা, আটক 9
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চড়ক মেলাকে ঘিরে গন্ডগোল হলেও আসল ঘটনা কাটমানি নিয়ে। চড়কের মেলায় কোন গোষ্ঠী কোথা থেকে অস্থায়ী দোকান বসাবে সেই নিয়ে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এলাকার দুই যুবক বাপ্পাই এবং তানা ভট্টাচার্যের অনুগামীদের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলছিল ৷ গতকাল রাতে সেই ঘটনা ভয়াবহ রূপ নেয় । বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, ওই এলাকায় কোন গোষ্ঠী হকারদের অস্থায়ী দোকান বসাবে, সেখান থেকে কত টাকায় রফা হবে এবং সেই টাকা কোথায় কোথায় ভাগবাটোয়ারা হবে সেই নিয়ে গন্ডগোল শুরু হয়।
অবশ্য এই ঘটনার তদন্ত করতে দেখার ভার দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার হাতে। আজ দুপুর বারোটার পর থেকে এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিতে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এখনও পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ কিন্তু অন্যতম দোষীদের নাগাল এখনও পায়নি পুলিশ।