কলকাতা, 6 মার্চ: পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Elections 2023) তৃণমূলের লক্ষ্য মহিলা ভোট । তাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে (International Women's Day) 10 হাজার মহিলার বাড়িতে পৌঁছাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) । সেখানে পৌঁছে জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে ঘাসফুলের নেতৃত্ব । মহিলাদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার কী কী করেছে, সেটা তুলে ধরাই ঘাসফুল শিবিরের আসল উদ্দেশ্য ৷
তবে প্রত্যেক বছরই নারী দিবসে রাজ্যজুড়ে বড় কর্মসূচি গ্রহণ করে রাজ্যের শাসক দল । সারা রাজ্যের পাশাপাশি কলকাতাতেও একটা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আয়োজন করা হয় । এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না । এবারও শাসক দলের মহিলা শাখার তরফ থেকে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু ওই দিন 10 হাজার বাড়িতে পৌঁছে মহিলাদের মুখোমুখি হওয়াই তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য ৷
এমনিতেই এই মুহূর্তে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি চলছে রাজ্যজুড়ে । এই কর্মসূচিতে তৃণমূল কর্মীরা সরাসরি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়ে যে বিভিন্ন প্রকল্প রাজ্য সরকারের রয়েছে, তা নিয়ে কথা বলছেন তাদের অভাব-অভিযোগ শুনছেন এবং লিপিবদ্ধ করে তা দলের কাছে জানাচ্ছেন । তার সঙ্গেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এই মহিলাদের সঙ্গে সংযোগস্থাপনের আলাদা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ।
তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি চলছে আমাদের রাজ্যে । বাংলার মেয়েরা যে দিদির শাসনে সুরক্ষিত, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না । সেই কারণেই আমরা একটি শুভেচ্ছা পত্র নিয়ে আগামী 8 মার্চ অর্থাৎ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন 10 হাজার বাড়িতে পৌঁছে যাব ৷ দলের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই সরকার মহিলাদের জন্য কী কাজ করেছে বা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্যকে মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত কেন বলা হচ্ছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করব ।’’
ঘাসফুল শিবির সূত্রে খবর, সাগরদিঘি নির্বাচনের পরে শাসক দলের সমর্থন জনমানসে যে সামান্য হলেও কমেছে, তার একটা প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে । ফলে শাসক দলের তরফ থেকে প্রায় প্রত্যেকটি সংগঠনকে জনসংযোগের জন্য আরও বেশি সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই অবস্থায় তারা জনমত সম্পর্কে একটা আঁচ পেতে চাইছেন । আর সেই কারণেই রাজ্যের 36টি সাংগঠনিক জেলায় অন্তত 300টি করে বাড়িতে যাওয়ার টার্গেট দেওয়া হয়েছে । সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে একদিনে মোট 10 হাজার বাড়িতে পৌঁছাবে তৃণমূল ৷ এর জন্য রাজ্যের শাসকদলের তরফ থেকে একটি ক্যাম্পেন সং তৈরিরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিজেপি (BJP) নেত্রী তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের এই কর্মসূচিতে কোনও লাভ হবে না । কারণ এই সরকার এবং এই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মা-বোনেদের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছেন, তা বাড়ি বাড়ি সাধারণ মহিলারা বুঝতে পেরেছেন ।’’
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কিসের দিদির সুরক্ষা ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কামদুনির 10 বছর হয়ে গিয়েছে, বিচার পাননি কামদুনির মানুষ । হাঁসখালির ক্ষেত্রে বলেছিলেন নির্যাতিতার পেটে বাচ্চা আছে, বিচার পায়নি তার পরিবারও । এই আমলেই বগটুইয়ের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটেছে । অতএব এই সরকারের সময় কি সুরক্ষা রয়েছে মেয়েদের !
আরও পড়ুন: মমতাকে সারদার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী আখ্যা দিয়ে মোদিকে চিঠি শুভেন্দুর