কলকাতা, 11 জানুয়ারি: একদিকে শহরে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক বইমেলা, অন্যদিকে মকর সংক্রান্তিতে পুণ্যস্নানের জন্য লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী যাবেন গঙ্গাসাগরে । তাই এই সময় যাতে মানুষকে বাসের জন্য অসুবিধায় না পড়তে হয় তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে পরিবহন দফতর ৷ বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ।
বইমেলার জন্য বিশেষ পরিষেবা :
18 থেকে 21 জানুয়ারি পর্যন্ত সল্টলেকের করুণাময়ীতে চলবে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা । যাত্রীদের সুবিধার্থে তাই অন্যান্য দিনের তুলনায় করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই 6 দিন অনেক বেশি সংখ্যক বাস ছাড়বে ৷ বইমেলার কথা ভেবে অতিরিক্ত 200টি বাস দেওয়া হচ্ছে । যেগুলি করুণাময়ী স্টেশন থেকে যাবে শিয়ালদা স্টেশনে, হাওড়া স্টেশন, পর্ণশ্রী, শকুন্তলা পার্ক, ঠাকুরপুকুর, গড়িয়া, কামালগাজি, টালিগঞ্জ মেট্রো, বারাসত, বালি হল্ট, বারুইপুর, যাদবপুর, ব্যারাকপুর, সাঁতরাগাছি, উলটোডাঙা, রথতলা, বেলগাছিয়া, বারাসত ও ডানকুনি । মূলত এই জায়গাগুলোতে মেট্রোর সুবিধা নেই তাই বিশেষভাবে এখানে পৌঁছনোর জন্য ঘন ঘন বাস পরিষেবা থাকবে ৷ মেট্রো পরিষেবার পাশাপাশি বিকেল 3টে থেকে রাত 10টা পর্যন্ত বাস পাওয়া যাবে ।
এছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাতে দ্রুত পরিষেবা দেওয়া যায় তাই বেশ কিছু বাস রিজার্ভে রাখা হবে । পাশাপাশি করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত থাকছে অটো পরিষেবা । তবে যাতে গতবারের মতো ভাড়া নিয়ে কোনও জটিলতা তৈরি না হয় তাই এবার আগে থেকেই অটোর ফেয়ার চার্ট টাঙিয়ে দেওয়া হবে বাসস্ট্যান্ডে । এবার সেখানে একটি হেল্পলাইন নম্বরও থাকবে । কোনও সমস্যা হলে যাত্রীরা ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন ।
এর পাশাপাশি বইমেলার জন্য বিশেষভাবে অ্যাপ ক্যাব পরিষেবা থাকছে । একটি নামজাদা বেসরকারি অ্যাপ ক্যাব সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে পরিষেবা দেওয়া হবে । সেই জন্য একটি নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডও ঠিক করে দেওয়া হবে যেখান থেকে ওঠা নামা করতে পারবেন যাত্রীরা ।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা :
অন্যদিকে, 11 থেকে 17 জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে গঙ্গাসাগর মেলা । এই মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের জন্য এবার প্রায় আড়াই হাজার বাসের ব্যবস্থা করেছে পরিবহণ দফতর ৷ গঙ্গাসাগর মেলা চলার ক'দিন পুরো ব্যবস্থা মনিটরিং করতে পরিবহনমন্ত্রী থেকে শুরু করে পরিবহণ বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা সবাই গঙ্গাসাগরেই থাকবেন । এছাড়াও যাত্রী দর্শনার্থী এবং আগতদের নিরাপত্তার জন্য মেলা প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের কন্ট্রোলরুম ৷ পুরো মেলার নজরদারির জন্য এখানে 24 জন আধিকারিক থাকবেন ৷
বাবুঘাট এবং হাওড়া স্টেশন থেকে টিকিট কাটা যাবে । একটি টিকিট দিয়েই লট থেকে কচুবেরিয়া পর্যন্ত পারাপার করা যাবে । গত বছরও এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল । এছাড়াও নামখানা থেকে থাকছে 32টি ভেসেল, 100টি লঞ্চ, ছয়টি বার্জ দেওয়া হচ্ছে ৷ এছাড়াও থাকছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স । এছাড়াও থাকছে বহু বেসরকারি বাস । গঙ্গাসাগরে যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশন, বাবুঘাট এবং ধর্মতলায় বিশেষ টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে ।
আউট্রাম ঘাট ও কালীঘাট থেকে 10টি ট্যুরিস্ট বাসের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে । একটি বেসরকারি অ্যাপ ক্যাব সংস্থা এবং পরিবহণ দফতরের যৌথ উদ্যোগে আউট্রাম ঘাটে একটি প্রিপেইড ট্যাক্সি বুথ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৷ এখান থেকে হলুদ ট্যাক্সি ও অ্যাপ ক্যাব পরিষেবা পাওয়া যাবে । এছাড়াও গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীদের জন্য শিয়ালদা ডিআরএম-কে অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী । শিয়ালদা-নামখানা সেকশনে অতিরিক্ত ট্রেন পরিষেবা দেওয়া আবেদন করা হয়েছে ।
হাওড়া স্টেশন থেকে লট 8 হয়ে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত যাওয়ার জন্য 145 টাকা ভাড়া ঠিক করা হয়েছে । পাশাপাশি বাবুঘাট থেকে লট 8 হয়ে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষেত্রে 140 টাকা ঠিক করা হয়েছে । ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত 2টি ট্যুরিস্ট বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে । ঠিক একইভাবে 70টি বেসরকারি ভেসেল থাকছে । অল ইন্ডিয়া বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, গঙ্গাসাগর মেলায় কচুবেড়িয়া থেকে সাগর পর্যন্ত 218টি বাস চলাচলের জন্য ওপারে যাওয়া শুরু করেছে । সংগঠনের পক্ষ থেকে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার একটি টিম সাগরে আজ থেকে 17 জানুয়ারি পর্যন্ত থাকবে ।
আরও পড়ুন :