কলকাতা, 15 অগস্ট: কলকাতার ভিতর রয়েছে আর এক কলকাতা ৷ কালো পিচঢালা রাস্তায় আপন গতিতে চলতে থাকা ট্রাম স্বাধীন ভারতের অন্যতম সাক্ষী ৷ 77তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গড়িয়াহাট ট্রাম ডিপোতে আয়োজন করা হয়েছিল এক ট্রাম যাত্রার ৷ ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল এই ট্রাম যাত্রার। আর উল্লেখযোগ্য বিষয়, যে ট্রাম ধুঁকছে বলে বন্ধ করার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল, আজকের দিনে সেই ট্রাম রেকর্ড ব্যবসা করেছে বলে জানা গিয়েছে ৷
ট্রামকে প্রাসঙ্গিক করে রাখতে স্বাধীনতা দিবসে অভিনব উদ্যোগ সিটিইউএ-র। মঙ্গলবার প্রায় 50 বছরের পুরনো ট্রামকে জাতীয় পতাকা এবং ফুল দিয়ে সাজিয়ে আয়োজন করা হয় মিনি ট্রাম যাত্রার। যে যাত্রায় দেশের অন্যপ্রান্ত থেকে আসা অনেকেই অংশগ্রহণ করেন এই দিন ৷
ট্রাম গবেষক ও ট্রামপ্রেমী ডক্টর দেবাশীষ ভট্টাচার্য ৷ তিনি আবার ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ৷ আজকের দিনে বলেন, "স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে এই ট্রাম যাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। তবে আজ শুধুই ট্রামে চেপে এই দিনটি উপভোগ করার জন্যেই এই অনুষ্ঠান। আর কিছুই নয়। সাধারণ মানুষের কাছে ট্রামের ঐতিহ্য এবং ইতিহাস আর একবার মনে করিয়ে দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা।"
সংস্থার আর এক সদস্য মহাদেব শী জানান, "আমরা চাই আবারও স্বমহিমায় কলকাতার সবক'টি রুটে চলুক ট্রাম। পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে ট্রামের যেমন ভূমিকা রয়েছে তেমনই কলকাতার সংস্কৃতির সঙ্গেও ট্রাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাই সবটাই মানুষের কাছে আরও একবার তুলে ধরার চেষ্টা।"
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে এই প্রথম রেড রোডে পুরস্কৃত হলেন সরকারি আমলারা
এই অনুষ্ঠানে যেমন শহরের ট্রামপ্রেমীরা অংশগ্রহণ করেছেন তেমনই চেন্নাই থেকে এই ট্রাম যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন একই পরিবারের সদস্যরা ৷ চাকরি সূত্রে একসময় কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউতে থাকতেন রাজা মণি ও তাঁর পরিবার ৷ তখন থেকেই ট্রামের প্রেমে পড়েন তিনি। এই অনুষ্ঠানের কথা জানতে পেরে তিনিও সপরিবারে যোগ দিয়েছেন এই যাত্রায়। দেখা গিয়েছে, মেঘালয় থেকে আসা বেশ কিছু তরুণীর দলকে। তাঁরা জানিয়েছেন, কলকাতায় ঘুরতে এসে এই ট্রাম যাত্রা সম্বন্ধে জানতে পারেন এক বন্ধুর থেকে। তারপরেই জীবনে প্রথমবার ট্রাম চড়ার লোভ সামলাতে না পেরে চলে এসেছেন। জানা গিয়েছে, ট্রামটি প্রথমে যায় এসপ্লানেড ৷ সেখান থেকে শ্যামবাজার ট্রাম ডিপো। আবার ফিরেও আসে একই পথে ৷