কলকাতা, 29 এপ্রিল: বজ্রপাতে রাজ্যে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা 17। গ্রীষ্মকালে ঝড়-বৃষ্টি স্বাভাবিক ঘটনা। তা থেকে এই মর্মান্তিক ঘটনায় জনমানুষের সচেতনতা এবং সতর্কতা জরুরি বলে মনে করছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আগামী পাঁচদিনের পূর্বাভাসে দুই বঙ্গেই ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। তা পারদ পতনের ইঙ্গিত। গত কয়েকবছরে বজ্রপাত এবং তা থেকে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে। হাওয়া অফিস এই ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছে । পাশাপাশি সচেতনতা অবলম্বনের কথা বলছে ৷ তবে রবিবার থেকে দুই বঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি বাড়বে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় আধিকারিক সঞ্জীব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী পাঁচদিনের যে পূর্বাভাস জানিয়েছেন তার নির্যাস হল-
- আগামী পাঁচ দিন অর্থাৎ 29 তারিখ থেকে 3 তারিখ পর্যন্ত এই সময়ে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গ দুই জায়গাতেই ঝড়-বৃষ্টি সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে ৷
- একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে যা পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে । এর ফলে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। সতর্কতা হিসেবে আজ 29 তারিখ শনিবার ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনার কম থাকলেও আগামিকাল অর্থাৎ রবিবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। এর সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। যার গতিবেগ ঘণ্টায় 40 থেকে 50 কিলোমিটার হবে।
- বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া এই জায়গাগুলোতে আগামিকাল বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে মূলত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝোড়ো হাওয়া 40 থেকে 50 কিলোমিটার বেগে বইবে।
- আগামী 1 মে বীরভূম, পুরুলিয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হবে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোতে শুধু বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টি থাকবে। 2 মে, মঙ্গলবার এবং 3 মে বুধবারও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ।
- আজ 29 এপ্রিল উত্তরবঙ্গের বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে। আগামিকালও ঝড়-বৃষ্টি হবে। এই দুই জেলার সঙ্গে যুক্ত হবে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার। 1 মে ভারী বৃষ্টি হবে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে। উত্তরবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হবে।
- বজ্রবিদ্যুতের সময় কয়েকটি সতর্কতা মাথায় রাখতে হবে- ওইসময় খোলা জায়গায় না-থাকা, বড় গাছের নীচে আশ্রয় না নেওয়াটাই উচিত। এই ব্যাপারে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের যে অ্যাপস রয়েছে তার নাম দামিনী। এই অ্যাপস ব্যবহার করা উচিত। এর মাধ্যমে আপনি সরাসরি জানতে পারবেন কোন সময়ে বজ্রপাত হবে এবং কোথায় হবে। এই ব্যাপারে সতর্কতা পাবেন। 20 কিলোমিটারের মধ্যে যেখানে বজ্রপাত হবে তার সতর্কতা মিলবে। বেশ কিছু কিছু জেলায় আমরা শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছি। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে। খাদ্য শস্য এবং ফুলচাষের ওপরে প্রভাব পড়তে পারে। যেহেতু হাওয়া বেগ থাকবে 40 থেকে 50 কিলোমিটার কাঁচাবাড়ি এবং শক্তপোক্ত নয় এমন কিছু কাঠামোর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকছে।
- কলকাতার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে শুধু আগামিকাল। সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া 30 থেকে 40 কিলোমিটার বেগে বইবে। আজ এবং আগামিকাল তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন নেই।
শুক্রবার কলকাতা এবং তৎপ্বার্শবর্তী অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 34.2 ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের চেয়ে 1.4 ডিগ্রি কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 22.7 ডিগ্রি যা স্বাভাবিকের চেয়ে সাড়ে তিন ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা 96 শতাংশ। আজ শনিবার দিনের আকাশ আংশিক মেঘলা। ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 35 ডিগ্রি এবং 26 ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে।