কলকাতা, 28 ডিসেম্বর: নতুন তৃণমূলের বার্তা দিয়ে শুদ্ধিকরণের কথা বলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) । একই সঙ্গে দিয়েছিলেন পাশে থাকার বার্তা । যে কোনও বিষয়ে অভিযোগ জানাতে দিয়েছিলেন নিজের নম্বর । এবার 'এক ডাকে অভিষেক'-এ অভিযোগ জানিয়ে সুফল পেল মানুষ (TMC orders Panchayat Pradhan to resign) ।
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের শান্তিপুর-1 গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এসকে সেলিম আলির বিরুদ্ধে । কাঁথিতে জনসভা করতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় 'এক ডাকে অভিষেক'-এ হেল্পলাইন ফোন করে নিজেদের অভিযোগ জানাতে বলেছিলেন মানুষকে । নেতার কথা মতোই সেখানে সাধারণ মানুষ সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান । প্রধানের বিরুদ্ধে অবশেষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ আর তাঁকে ফোন করতেই মুশকিল আসান ৷ স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে এবার কড়া সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল কংগ্রেস । সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দিল দল ।
দলীয় সূত্রে খবর, অভিষেকের চালু করা হেল্পলাইন নম্বরে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ এসেছিল । এমনও অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল, শাসকদলের নামকে কাজে লাগিয়ে সেলিম আলি বেনামে 60টিরও বেশি সম্পত্তি তৈরি করেছিল । একই সঙ্গে তিনি সরাসরি ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত । অভিযোগ পেয়েই দলীয়স্তরে তদন্ত শুরু করে তৃণমূল । তদন্তে শুরু হতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হয় ।
এক প্রেস বিবৃতিতে তৃণমূল জানিয়েছেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, দলে থেকে দুর্নীতি করা যাবে না । একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন ঠিকাদারির সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত থাকা যাবে না । সেই কারণেই দল সেলিম আলিকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন: অভিষেককে কুরুচিকর মন্তব্য করে বরখাস্ত বারাসতের ডিআইবি ইন্সপেক্টর
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কড়া অবস্থান এই প্রথমবার নয়, এর আগে কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে সভা করতে গিয়ে মারিশদা পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি । একই সঙ্গে স্থানীয় অঞ্চলের প্রধানকেও পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । তারপর এইভাবে ফোনে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, গত কয়েকমাসে দুর্নীতি সংক্রান্ত ঘটনায় রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস । ফলে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তৃণমূল এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে যে, কোনও ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে আপোস করে না তারা । এখন দেখার, নিয়োগ দুর্নীতি, গরুপাচার, কয়লাপাচার-সহ একাধিক অভিযোগে জর্জরিত ঘাসফুল শিবিরকে তাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই পদক্ষেপ বাড়তি কোনও সুবিধা এনে দিতে পারে কি না ।
আরও পড়ুন: কাঁথির সভামঞ্চ থেকে 'বিশ্বাসঘাতক ও বেইমানমুক্ত মেদিনীপুর' গড়ার ডাক অভিষেকের