কলকাতা, 23 জুন: রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের তরফ থেকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ পঞ্চায়েত মামলার শুনানিতে নির্বাচন অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করার জন্য 2013 সালের থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে। সেই মতো রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে মোট 822 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে মাত্র 337 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এবার এই বাহিনী নিয়ে বিজেপি নেতাদের পালটা আক্রমণের পথে হাঁটল তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজ্যের চাওয়া বাহিনী না পাঠানো নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারদের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "এবার কি বাহিনী দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিরোধী দলের নেতারা ?" শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদাররা এবার তাঁদের রাজনৈতিক বাবা অমিত শাহের কাছে গিয়ে গন্ডগোল করুক, যে কেন তারা রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে পারছে না। রাজ্য তো চেয়েছে 800 কোম্পানি, এবার কেন দিচ্ছে না কেন্দ্র, তাই নিয়ে আন্দোলন করুক। এবার অমিত শাহ মুর্দাবাদ বলুক।"
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে বাহিনী তরজা অব্যাহত ৷ কমিশনের তরফে যে সংখ্যক বাহিনী চাওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়, এই অভিযোগে ফের আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের ইঙ্গিত দিয়েছে বিজেপি নেতারা ৷ আর তার মাঝেই পালটা বিজেপিকে আক্রমণের পথে হাঁটল তৃণমূল ৷ এদিন তিনি আরও বলেন, "বিজেপি নেতারা এখন কী বলছেন তা আমরা শুনতে চাই। আমরা যখন বলেছিলাম অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ নিয়ে আসব তখন ওদের পছন্দ হয়নি। তখন বলেছিল ওতে হবে না আরও চাই। এখন ওরা আন্দোলন করে কতটা কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আসতে পারে সেটাই আমরা দেখতে চাই।" যদিও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কেন্দ্র যে পর্যাপ্ত পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যকে দিতে পারবে না সেই খবর ছিল রাজ্যের বিজেপি নেতাদের কাছে ৷ তাই রাত থেকেই বিজেপির নেতারা বাহিনী নয়, নির্বাচনের দফাবৃদ্ধির দাবি তুলতে শুরু করেছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
আরও পড়ুন: আজই আসছে 315 , আরও 485 কোম্পানি বাহিনী চাইল কমিশন
এদিন বিরোধী দলনেতার তরফ থেকেও আদালতে দফা বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করেছে তার আইনজীবী। আর তা নিয়েও এদিন পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "এই মুহূর্তে বিজেপির নেতাদের মানুষের দরবারে থাকার কথা ছিল। কারণ দিনের শেষে ভোট দেবে মানুষই। কিন্তু মানুষের উপর ভরসা না রেখে তারা বারবার আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। ওরা ভালোভাবেই জানে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনওভাবেই জিততে পারবেন না তারা। তাই নানান অভিযোগ এনে ভোট প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে বিজেপি নেতারা।" অন্যদিকে, এই বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইট করে লিখেছেন, "ভোটার পিছু একজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিলেও তৃণমূল জিতবে। বাহিনীর বিরোধিতা শুধু নীতিগত কারণে। দলের কর্মীদের জেদ বাড়ছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে সেনা আনলেও পঞ্চায়েত ভোটে জিতবে তৃণমূল। যাঁরা এসব নিয়ে লাফাচ্ছেন, তাঁরা 11 জুলাই রাতে পরাজয়ের কী অপযুক্তি দেবেন ভেবে রাখুন।"