কলকাতা, 7 জুন: গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতেই অস্বস্তিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আর সেই কারণেই বালাসোর রেল দুর্ঘটনায় সাহায্য করা নিয়ে এত উষ্মা প্রকাশ করছেন তিনি । বুধবার এভাবেই বিরোধী দলনেতার অভিযোগের পালটা জবাব দিল তৃণমূল কংগ্রেস ।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবারই তড়িঘড়ি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের তরফ থেকে মৃতদের পরিবার ও আহতদের সাহায্য তুলে দেওয়ার জন্য যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা । এরপর বুধবার টুইট করে তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন । শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণের টাকা রেল দুর্ঘটনার সহায়তায় দিচ্ছে রাজ্য সরকার । তাঁর প্রশ্ন, কেন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিজস্ব রিলিফ ফান্ড থেকে এই অর্থ প্রদান করছেন না । যে প্রক্রিয়ায় তড়িঘড়ি মৃতদের পরিবারকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা ।
এর পালটা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বুধবার শুভেন্দুকে একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার । তিনি বলেন, ‘‘বালাসোরের রেল দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের পরিবারকে কোন ফান্ড থেকে অর্থ সাহায্য দেওয়া হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণভাবে একটা প্রশাসনিক বিষয় । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে এই রেল দুর্ঘটনার পর রাজ্যের গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে অস্বস্তিতে বিরোধী দলনেতা । রাজ্যের সাধারণ মানুষ যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছে, তাই শুভেন্দুর এত গাত্রদাহ । সে কারণেই তাঁর এত গোঁসা ।’’
আরও পড়ুন: 'মমতা এপাং-ওপাং-ঝপাং করবেন বলে স্বজনহারাদের কলকাতায় আনা হচ্ছে', কটাক্ষ শুভেন্দুর
একই সঙ্গে সকাল থেকে চলা পৌর দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তল্লাশি নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি । জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে বিজেপির মূলমন্ত্রই সিবিআই । বিজেপির রাজনীতি এই মুহূর্তে সিবিআই আর ইডির চারদিকে ঘোরাঘুরি করছে । কিন্তু আমার প্রশ্ন তদন্তগুলির ফল কী বেরিয়ে আসছে ? গত এক দেড় বছর ধরে সিবিআই-এর একাধিক বিষয় সংবাদের শিরোনাম হয়েছে । এক্ষেত্রে তারা প্রায় 100 জনের কথা বলেছেন, কিন্তু তাদের কী হয়েছে ?’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ এতগুলো পুরসভায় তল্লাশি চলছে ৷ সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ৷ কিন্তু কয়েকদিন গেলে সাধারণ মানুষ হয়তো ভুলেই যাবেন এর ফলাফল কী হয়েছে । আমাদের প্রশ্ন হল, এখানে সিবিআই-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা যা সাধারণ মানুষের পকেটের টাকায় পরিচালিত হয় । তাঁকে কেন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যসাধনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে । বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধনের জন্য ব্যবহার করছে ।’’
তিনি আরও বক্তব্য, সিবিআই-এর এত সক্রিয়তার পরবর্তী ফলাফল কী, তা প্রকাশ্যে আনা হোক । আজই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন সিবিআইকে একটি তদন্ত ধামাচাপা দিয়ে আরেকটি তদন্তকে তুলে আনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে । কিন্তু দিনের শেষে মানুষ সত্যি জানতে চায় । সেই সত্য কোথায় ! যারা প্রকৃত দোষী তাদের শাস্তি দেওয়ার বদলে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিজেপির তৈরি নেগেটিভ তুলে ধরার চেষ্টা করছে । বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধনে সাহায্য করা ছাড়া এই মুহূর্তে সিবিআই-এর কোনও সাফল্য নেই ।
আরও পড়ুন: পৌর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তল্লাশির সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল