কলকাতা, 9 অক্টোবর: রাজভবনের সামনে ধরনা কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । সোমবার 100 দিনের কাজের কর্মীদের অধিকারের দাবিদাওয়া নিয়ে রাজভবনে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল । রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে 20 লক্ষ 75 হাজার একশোদিনের শ্রমিকের অভিযোগপত্র তুলে দিয়ে এসেছে তারা । সেখান থেকে বেরিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ধরনা তুলে নেওয়ার ঘোষণা করেন ৷
অভিষেকের দাবি, তৃণমূলের প্রতিনিধিদের 24 ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজ্যপাল রাজ্যপালের এই সৌজন্যেকে গুরুত্ব দিয়ে পালটা সৌজন্য দেখাল তৃণমূল । রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পর তৃণমূলের প্রবীণ নেতৃত্ব কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, সৌগত রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করেন । এরপরই রাজভবনের সামনে ধরনা কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করেন তিনি ।
রাজ্যপালকে তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য 31 অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন অভিষেক । তাতেও যদি ইতিবাচক ফল না হয়, আগামী 1 নভেম্বর থেকে আরও বড় আকারে আন্দোলন শুরু করবে তৃণমূল । ধরনা মঞ্চে এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক কথাই ঘোষণা করেন অভিষেক । একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘31 অক্টোবরের মধ্যে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ না দেখলে 1 নভেম্বর থেকে ফের আন্দোলন । পরের বার আন্দোলন শুরু হলে অধিকার আদায় না করে থামব না ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যে বলছেন উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলেই বিষয়টি নিয়ে এগোবেন, সেটিও যুক্তিযুক্ত ।’’ অভিষেক আবার জানিয়েছেন, 100 দিনের কাজের দুর্নীতি হলে তদন্ত হোক । অপরাধী কেউ থাকলে তাদের শাস্তি হোক, তা নিয়ে কিছু বলার নেই । কিন্তু 20 লক্ষ 75 হাজার মানুষ একশো দিনের কাজ করার পরেও যে তাঁদের বকেয়া গত দু'বছর ধরে পাচ্ছেন না, তার একটা বিহিত হোক ।
অভিষেক এ দিন জানিয়েছেন, তৃণমূলের দিল্লি যাত্রা বা রাজভবনে ধরনা, এই উভয় ক্ষেত্রে কেন্দ্রের টনক নাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা । যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা দিল্লিতে তাঁদের মেরে ধরে বের করে দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি, তাঁদের এই আন্দোলনের কারণেই 24 ঘণ্টার মধ্যে বাংলায় এসে ব্যাখ্যা দিয়েছেন । অভিষেকের কথায়, ‘‘এখানে আমার কোনও কৃতিত্ব নেই এটাই মানুষের শক্তি । পাঁচদিনের ধরনায় বাংলার মানুষের শক্তি দেখালাম । পিকচার আভি বাকি হ্যায় ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে রাজভবনে ধরনা পুরো কর্মসূচিতে কোথাও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী উপস্থিত ছিলেন না । তাতেই কাঁপন ধরেছে দিল্লির সরকারে । পরেরবার আন্দোলন হলে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তখন তাঁকে সামলাতে পারবেন তো ।’’
এই মঞ্চ থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানিয়ে দিয়েছেন, 100 দিনের কর্মীদের পাশে আছে তৃণমূল । যদি তাঁদের টাকা কেন্দ্র নাও দেয়, তার ব্যবস্থা করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার । কিন্তু স্পষ্ট করেছেন কোনোভাবেই দাবি আদায় না করে ছাড়বেন না তিনি ।
আরও পড়ুন: জরুরি তলবে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক সেরে দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল