কলকাতা, 2 নভেম্বর: ভোটার তালিকা সংশোধনের (Accurate Voter List) কাজ শুরু হবে আগামী 9 নভেম্বর থেকে । আর তার আগেই আজ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) পক্ষ থেকে সর্বদলীয় বৈঠকের (All Party Meeting) ডাক দেওয়া হয় । সেই বৈঠকে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির উপরই বেশি জোর দিয়েছে সব দল ৷
বৈঠক শেষে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, "আজ বৈঠকে আমরা যেই বিষয়টি উপর বেশি জোর দিয়েছি, সেটি হল রাতের অন্ধকারে যাতে চক্রান্ত করে ভোটার তালিকা থেকে যোগ্য ভোটারের নাম বাদ না চলে যায় । যাঁরা যোগ্য, তাঁদের প্রত্যেকের যাতে ভোটার তালিকায় নাম থাকে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে ।"
বিজেপির পক্ষ থেকে শিশির বাজোরিয়া বলেন, "মূল যে বিষয়টি বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেটি হল মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে । কীভাবে এটা নিশ্চিত হবে সেই বিষয়টি কমিশনকেই দেখতে হবে । এছাড়াও কন্ট্রাকচুয়াল কর্মীদের দিয়ে ভোট করানো চলবে না । কারণ প্রতিটি ভোটের আগে রাজ্য সরকারের কন্ট্রাকচুয়াল কর্মীর সংখ্যা বেড়ে যায় ।"
আজ সর্বদলীয় বৈঠকে কংগ্রেসের গলাতেও একই সুর শোনা গেল । কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ব্লক লেভেল অফিসারা বেশিরভাগ সময়ই অদৃশ্য থাকেন । 90 ভাগ সময় তাঁদের পাওয়া যায় না । কখনও কখনও তাঁদের বাড়িতেও পৌঁছে গিয়ে ডেকে আনতে হয় । এই সমস্যার নিষ্পত্তি কী করে করা যায়, তা কমিশনকেই ভাবতে হবে । এই বিষয়ে কমিশনের মূল দফতর থেকে যাতে কড়া নজরদারি চালানো হয়, তার উপর জোর দিতে বলেছি । চূড়ান্ত তালিকায় যেন কোনও ভুয়ো ভোটারের নাম না ওঠে এবং এই তালিকা প্রকাশ করার পরে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে পাঠাতে হবে । পাশাপাশি এ বছর নিয়ম এবং ফর্মের ক্ষেত্রে অনেক রদবদল করা হচ্ছে । এই রদবদলগুলি যাতে প্রতিটি ভোটারের কাছে পৌঁছয়, সেইভাবে সর্বত্র প্রচার চালাতে হবে ।"
আরও পড়ুন: সরকারের তাঁবেদারি করে পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে জিতিয়ে দিতে চাইছে কমিশন, অভিযোগ শুভেন্দুর
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সৌম্য আইচ রায় জানান যে, কমিশনকে স্বচ্ছ ও অবাধভাবে ভোট করবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । তিনি জানিয়েছেন, "পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র জালিয়াতি হয় । মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়ো ভোট পড়ে যায় । আমরা এই অভিযোগ বারবার জানানো সত্বেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি । কন্ট্রাকচুয়াল কর্মীদের দিয়ে ভোট করানো যাবে না । শাসকদলের একাধিক ক্যাডারকেই কন্ট্রাকচুয়াল কর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে । এটা এখন আমাদের রাজ্যে রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে । কারণ এঁরা যদি কোনও ভুল করেন, তাহলে তার দায় কে নেবে । তাই সরকারি কর্মচারীদের এই কাজের জন্য নিযুক্ত করা হোক ।"
বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে কল্লোল মজুমদার জানিয়েছে, "প্রতিটি বুথে ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ । তালিকায় একাধিক নাম রয়েছে, যাঁরা হয় মারা গিয়েছেন, নয় অন্যত্র চলে গিয়েছেন । ভোটার তালিকা যথাযথ ভাবে সংশোধন করতে হবে । আধার কার্ডের সঙ্গে এপিক কার্ড যোগ করা বা লিংক করা বাধ্যতমূলক নয় । এই বিষয়টি যাতে ভোটারদের সঠিকভাবে জানানো হয়, তাও নিশ্চিত করতে হবে ।"