কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর : রীতিমতো কেঁচো খুঁড়তে কেউটের সন্ধান । সরকারি মেডিকেল কলেজে ভরতি প্রতারণা চক্রের তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইমের বড়সড় চক্রের পর্দা ফাঁস করলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা ৷ গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে । তারা প্রত্যেকেই বিহারের বাসিন্দা ।
গত মাসে দমদম রোডের বাসিন্দা অনির্বাণ সাহা নামে এক ছাত্র লালবাজার সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ চলতি বছর জয়েন্ট পরীক্ষায় ভালো র্যাঙ্ক করেছিলেন তিনি ৷ এরপর ভালো কলেজে ভরতি হওয়ার জন্য ইন্টারনেটে খোঁজ শুরু করেন । তখনই দেখতে পান একটি ওয়েবসাইট ৷ যেটি ভারত সরকারের নামে ছিল । তাতে মেডিকেল কাউন্সিল ও ভারত সরকারের লোগো-স্ট্যাম্প দেওয়া ছিল । সঙ্গে ছিল একটি ইমেইল। সেই ইমেইল মারফত যোগাযোগ করেন অনির্বাণ । এরপর তাঁর থেকে 6 লাখ 19 হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় ৷ পরে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে অভিযোগ দায়ের করেন অনির্বাণ ৷
তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে, প্রতারণা চক্রটি ঘন ঘন নিজেদের ফোন নম্বর এবং মোবাইল পরিবর্তন করে । পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য মোবাইলে ক্লোন করা IMEI নম্বর ব্যবহার করা হয় । পাশাপাশি অ্যাপে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট দিয়ে ঘন ঘন টাকার লেনদেন করে চক্রটি । সেই সূত্র ধরেই তদন্তকারী অফিসার শুক্লা সিংহ রায়ের নেতৃত্বে একটি দল বিহারের নওয়াদায় যায় । সেখান থেকে ওংকার কুমার ওরফে সুরজ কুমার (22), রাকেশ কুমার (19) এবং রনধীর কুমারকে (19) গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে 10 টি মোবাইল, বেশ কয়েকটি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, বেশ কয়েকটি ATM কার্ড এবং বেশ কয়েকটি পাসবুক ৷ তাদের অ্যাকাউন্টে থাকা এক লাখ 40 হাজার টাকাও ফ্রিজ় করেছে পুলিশ ।
এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে জানা যায়, শুধুমাত্র জাল ওয়েবসাইট তৈরি করে মেডিকেল কলেজে ভরতির সুযোগ করে দেওয়াই নয়, দেশজুড়ে স্ন্যাপডিল, সপ ক্লুজ, পেট্রোল পাম্প ডিলারশিপের লটারির নামে প্রতারণা চক্র চালাত তারা । এভাবে অনেকেই জালে পা দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে ধৃতেরা ।