কলকাতা : বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্গা বা হাজার হাতের চমক নেই ৷ নতুন কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা নয় ৷ নেই থিমের আতিশয্যও ৷ এবার বর্তমান সময় থেকে একটু পিছিয়ে গেছে দেশপ্রিয় পার্ক ৷ 82 তম বছরে দেশপ্রিয় পার্কের ভাবনা চালচিত্র ৷ পটশিল্পের মাধ্যমে শোলার দ্বারা সজ্জিত হবে পুরো মণ্ডপ ৷ দেওয়ালে দেওয়ালে তুলে ধরা হবে মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গলের চরিত্রগুলি ৷
গত তিন মাস ধরে চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজ । নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর থেকে এসেছেন শিল্পীরা । শিল্পী প্রশান্ত পালের নেতৃত্বে রাতদিন চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজ । মণ্ডপের একদিকে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা । প্রতিমা নির্মাণ করছেন কুমোরটুলির প্রদীপ রুদ্র পাল ৷ বলা বাহুল্য, প্রতিমার মধ্যেও রয়েছে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া । মণ্ডপসজ্জা প্রসঙ্গে পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অভিষেক দে বিশ্বাস বলেন, "এবার আমরা সময়কে একটু পিছিয়ে নিয়ে গেছি ৷ ফিরে গেছি চালচিত্রের কাজে ৷ বাংলায় নানা সময়ে যে বারোয়াড়ি পুজো হয়েছে, তার নানা চালচিত্র পুরো মণ্ডপজুড়ে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি লোকশিল্পের নানা চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে৷ তৎকালীন সময়ের পুজোর দেব-দেবীদের ছবিও আঁকা হয়েছে ৷
এর আগে নিত্যনতুন থিমে বারবার শহরবাসীর মন ভরিয়েছে দেশপ্রিয় পার্ক ৷ এবার হঠাৎ থিম থেকে সাবেকিয়ানায় ফিরে গেলেন তারা ৷ এপ্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, "না এরকম কিছু না ৷ একদিক দিয়ে দেখতে গেলে যেটা আমরা করছি, সেটাও একধরনের থিম ৷ আসলে আমাদের দাদু ঠাকুমার সময়ে কীভাবে পুজো হত, আজকের প্রজন্ম সেভাবে তা জানেই না ৷ এবার আমরা সেই সময়ের পুজো ফিরিয়ে এনেছি৷ দেখানোর চেষ্টা করছি,তখন কীভাবে পুজো হত ? কেমন হত মণ্ডপসজ্জা ?"
চতুর্থীতেই প্রতিমা দর্শনের জন্য মণ্ডপ খুলে দেওয়া হবে । প্রতিবছর দর্শকদের ঢল নামে দেশপ্রিয়তে৷ অনিবার্য পরিস্থিতিতে 2015 সালে পঞ্চমীর দিনই সাধারণের জন্য বন্ধ করতে হয়েছিল প্রতিমা দর্শন ৷ তাই এবার পুজোয় প্রতিমা দর্শনের ক্ষেত্রে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করেছে পুজো কর্তৃপক্ষ ৷ অভিষেক জানান, কলকাতা পুলিশের অফিসাররা নিয়মিত আসছেন ৷ মণ্ডপ পরিদর্শন করছেন ৷ আমরাও আমাদের দিক থেকে সহযোগিতা করছি৷ তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি৷ তাঁদের অশেষ পরিশ্রম রয়েছে ৷ প্রতিবছর আমাদের খুব সাহায্য করেন তাঁরা ৷ এজন্য আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ ৷"