কলকাতা, 19 অক্টোবর : মানুষকে চোখ রাঙিয়ে চলছে রাজ্য সরকার । বহু প্রশ্নের উত্তর পায়নি রাজ্যের আমজনতা । বিরোধীরা তো বটেই, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনেক প্রশ্নের জবাব পায়নি সাধারণ মানুষও । এর আগেও একাধিকবার চিঠির সংকলন নিয়ে এককভাবে বই প্রকাশ করেছে বামফ্রন্ট ৷ আজ কংগ্রেস পরিষদীয় দলকে সঙ্গে নিয়ে 54টি চিঠির সংকলন প্রকাশিত হল ।
বামফ্রন্ট পরিষদীয় দল এবং কংগ্রেস পরিষদীয় দলের যৌথভাবে পেশ করা চিঠির সংকলন "জবাব দিন জনতাকে" আজ প্রকাশিত হল । ন্যাশনাল বুক এজেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে আজ প্রকাশিত হল এই বইটি । 60 টাকার বিনিময়ে রাজ্যের সমস্ত বইয়ের দোকানে মিলবে বইটি ।
সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য চরম জনবিরোধী ৷ দুই সরকারের নীতিতে এরাজ্যের মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন । কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না । এখন কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষা করতে দুই সরকার মিলে তাদের কৃষি থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে আইন পরিবর্তন করছে । মহামারি আর লকডাউনে শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছেন । বেকারদের কাজের সুযোগ নেই । শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে । স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষ পরিষেবা না পেয়ে চরম বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন । আর মহামারির এই বিপদের মধ্যেই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো কেড়ে নিয়ে উল্লাস করছে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার ।’’
তিনি আরও বলেন, "কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলার মাটিতে শাসক দল সম্প্রীতি ও ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য ভেঙে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথা তোলার সুযোগ করে দিচ্ছে । ধর্ম, ভাষা, জাতি ইত্যাদির নামে বহুমুখী বিভাজনের কৌশলে মানুষকে অধিকার অর্জনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে । বিগত সাড়ে চার বছর ধরে জনজীবনের সমস্যাগুলির সমাধানের দাবিতে এবং মহামারির পরিস্থিতিতে মানুষের স্বার্থে নানা পদক্ষেপের দাবিতে বিধানসভায় বামফ্রন্ট পরিষদীয় দল রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । মানুষের সমস্যার কথা নিয়েই এই চিঠির সংকলন প্রকাশিত হল ।"
সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ কাট আউট, বিজ্ঞাপন আর অনুপ্রেরণার ঢক্কা নিনাদ । সরকারি অর্থের নয়ছয় । লুট, তোলাবাজি আর মিথ্যাচারের একটা সরকার । "দিদিকে বলো" কিংবা "বাংলার গর্ব" মার্কা কম্পানির প্রচারের আড়ালে মুখ লুকোতে চায় সরকার । শাসক দল এবং মেরুদণ্ডহীন প্রশাসন । মানুষের কাছে জবাবদিহির কোনও দায় যেন এদের নেই । প্রবঞ্চনা আর প্রতারণাই একমাত্র অবলম্বন । বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে মুখ্যমন্ত্রী অনুপস্থিতি । এই আমলেই সর্বোচ্চ । স্বল্পকালীন বিধানসভার অধিবেশনে রেকর্ড করেছে রাজ্য সরকার । আমরা বহু চিঠি দিয়েছি । কোনও চিঠির উত্তর পাইনি? এবার বাংলার জনতা শাসক দলের কাছে জবাব চাইছে ।’’
আবদুল মান্নান বলেন," দুর্ভাগ্যক্রমে সংসদীয় রীতিনীতি এই বিধানসভায় বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে । প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় না । চিঠি দিলে জবাব পাওয়া যায় না । এমনকী গুরুত্বপূর্ণ বহু বিষয়ে আলোচনার জন্যও সময় পাওয়া যায় না । অদ্ভুত এক ব্যবস্থা । আজ যে ক'টি চিঠির সংকলন প্রকাশিত হল, সিংহভাগ চিঠি বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস যৌথভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দিয়েছি । কোনও চিঠির উত্তর পাইনি । বস্তুতপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে যৌথভাবে আন্দোলনের পাশাপাশি নানা বিষয়ে বেশ কিছু চিঠি এবং প্রস্তাব কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে । বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক সংকলনটিতে যৌথ চিঠিগুলো স্থান পেয়েছে ।''