কলকাতা, 24 এপ্রিল : লকডাউনের মাঝেই বুধবার দিল্লি থেকে রাজ্যে এসেছেন প্রশান্ত কিশোর। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধীদের প্রশ্ন, যেখানে ভিনরাজ্যে পড়ুয়া, অসুস্থ, শ্রমিক সবাই আটকে পড়েছে সেখানে দিল্লি থেকে কীভাবে বিমানে করে এরাজ্যে পৌঁছালেন প্রশান্ত কিশোর । প্রশান্তের আসা যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ।
সুজনবাবুর কথায়, "বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতেই নানা ষড়যন্ত্র চলছে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে। চিঠি, পালটা চিঠি এ সবই পূর্বপরিকল্পিত ।" তাঁর কথায়, "মানুষের কষ্টকে ব্যবহার করে, রাজনীতির দ্বৈরথে পারস্পরিকভাবে নামছেন রাজ্যপাল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । এটা অনভিপ্রেত। আসল বিষয় থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে এইসব চলছে। মানুষ কষ্টে রয়েছে। লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের চারদিন সময় দেওয়া হল না ঘরে ফেরার জন্য। অথচ এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর কার্গো বিমানে করে কলকাতায় চলে এলেন দিল্লি থেকে । এর থেকেই বোঝা যায় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোপনে যোগাযোগ রয়েছে। সবটাই আইওয়াশ।"
তিনি আরও বলেন, "এখানে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক ভালো নেই, এমনটাই দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে । পনেরো পাতা, পাঁচ পাতার চিঠির বিষয় অন্যদিকে ঘুরে গেল। পরিকল্পনা করেই সব হচ্ছে। প্রশান্ত কিশোরের ঘটনাই স্পষ্ট করে দিচ্ছে সবটাই ষড়যন্ত্র। "
বিশেষজ্ঞ কমিটি, অডিট কমিটি সব ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সুজন চক্রবর্তী। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ও আসল তথ্য গোপন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। রাজ্য়ের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সুজনের বক্তব্য, "সাধারণ মানুষ খেতে পাচ্ছে না । অর্থের অভাব । চূড়ান্ত সংকটে দিনমজুররা। যাঁরা কোরোনায় আক্রান্ত নয়, তাঁদের চিকিৎসা পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। আর যাঁরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ। প্রকৃত চিকিৎসা হচ্ছে না তাঁদের। রাজ্য সরকার কেবল সংখ্যা এবং তথ্য কমাতে ব্যস্ত। কেন্দ্রের ঘোষিত সংখ্যার সঙ্গে এরাজ্যের কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যা মিলছে না।"
বিষয়টি নিয়ে সরব সূর্যকান্ত মিশ্রও । তিনি বলেন, "কলকাতায় তড়িঘড়ি উড়ে এসে মমতার কৌশল ঠিক করে দিয়েছেন ভোট ম্যানেজার প্রশান্ত কিশোর ।"