কলকাতা, 4 নভেম্বর : দীর্ঘদিন পার্টনারশিপের পর জুটি ভেঙে গিয়েছিল 2017 সালে। আগেই চলে গিয়েছেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী। বাংলায় ডানপন্থী রাজনীতির এক তারা খসে যাওয়ার পর জুটিহীন অবস্থায় ছিলেন তিনি ৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে ইহলোকের মায়া কাটিয়ে তিনিও চলে গেলেন। আলোর উৎসবে বাংলার রাজনীতিতে নেমে এল অন্ধকার। বাংলা হারাল ষাটের দশকের রাজনীতির অন্যতম উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ককে। এদিন রাতে এসএসকেম-এ মারা গেলেন ষাটের দশক থেকে মাঝামাঝি সময় থেকে সত্তরের দশকের ডানপন্থী ছাত্র-যুব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৷ প্রিয়-সুব্রত নামেই তাঁরা পরিচিত ছিলেন ৷ অতীতে এমনটাই বারবার জানিয়েছিলেন সুব্রত। আলাদা করে প্রিয় অথবা সুব্রত বলে কারও পরিচয় ছিল না।
তাঁরা শুরু করেছিলেন ছাত্র রাতজীতি দিয়ে। নকশাল আন্দোলন, সিপিএম, যুক্তফ্রন্ট সরকার, সব মিলিয়ে বাংলা ছিল টালমাটাল। সেই পরিস্থিতিতে ছাত্র পরিষদ নাম দিয়েই প্রিয়রঞ্জনই সারা বাংলায় ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে প্রিয়রঞ্জনের নেতৃত্বে ছাত্র আন্দোলনের জেরেই বামপন্থীরা বিদায় । আন্দোলনে যোগ্য সাহায্য করেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। মহাজাতি সদনের ওপরে একটি ঘরে রাতে তাঁরা থাকতেন।
আরও পড়ুন : সিদ্ধার্থের মন্ত্রিসভা থেকে মমতার মন্ত্রী, সুব্রতর বর্ণময় রাজনৈতিক জার্নি
প্রিয়রঞ্জনের মৃত্যুর পর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, প্রিয়দা নেই ! দ্বিতীয়বার পিতৃহারা হলাম ৷ মাথার উপর থেকে ছায়াটা সরে গেল ৷ প্রিয়দা ছিলেন আমার বন্ধু, অভিভাবক ও পথপ্রদর্শক ৷ রাজনীতি না-করে প্রিয়দা যদি অন্য কিছু করতেন, তা হলেও হয়তো আমিও তা-ই করতাম ৷ অন্ধ অনুসরণ করতাম প্রিয়দাকে ৷ তাই আজ প্রিয়দা সর্ম্পকে কী স্মৃতিচারণা করব ? আমার রাজনৈতিক জীবনের ভালো-মন্দ সবটাই প্রিয়দাকে ঘিরে ৷ সবই তো আজ স্মৃতি ৷ রাজনীতিতে আমাদের জুটি, অর্থাৎ ‘প্রিয়-সুব্রত’র জুটির পরে আর কোনও জুটি গড়ে ওঠেনি ৷ মানুষ ভাল কাজের জন্য বলত প্রিয়-সুব্রত করেছে, মন্দ করলেও বলত ওরা করেছে ৷ দু’জনের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হত ৷
বঙ্গ রাজনীতিতে শেষবার তৈরি হওয়া জনপ্রিয় জুটির পথ চলা আজ শেষ। প্রিয়দার পর আজ চলে গেলেন সুব্রতও।