কলকাতা, 20 জুন: গোটা দেশে গণতন্ত্র নেই । মণিপুরের মধ্যযুগীয় বর্বরতা প্রসঙ্গে এটাই মত অভিনেত্রী অপর্ণা সেনের । বৃহস্পতিবার কলেজ স্ট্রিটের মহাবোধি সোসাইটি হলে নাগরিক কনভেনশনের আয়োজন করে এপিডিআর । সেই কনভেনশনে উপস্থিত হয়ে অপর্ণা সেন মণিপুর নিয়ে আক্ষেপের সুরে বলেন, নারীমেধ যজ্ঞ চলছে ৷
মণিপুর কাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ দিন অপর্ণা সেন বলেন, "কী বলব ! কী বলা উচিত ! আপনারাই বলে দিন । কারণ শুধু আমি একা নই । সাধারণ মানুষও তাঁর নিজের ভাষা হারিয়েছে । কিছু বলেই বা কী হবে ? গত কয়েক দশক ধরেই তো বলে আসছি । কোনও কিছুর কি পরিবর্তন হল ? গণতন্ত্রের আর কোনও কিছু কি অবশিষ্ট আছে ? আমাদের রাজ্যের শাসক দল এবং সরকার-সহ সমস্ত রাজনৈতিক দল দেশের প্রত্যেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত । ছোটবেলা থেকে যা দেখে আসি আজও কি তার পরিবর্তন হয়েছে ? নারীমেধ যজ্ঞ চলছে ৷"
মণিপুর নিয়ে আজ লোকসভার বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । দুই মহিলার উপর নৃশংস অত্যাচার যারা চালিয়েছে, তাদের কড়া শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি ৷ পাশাপাশি মেয়েদের নিরাপত্তা বাড়ানোর কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী ।
এ প্রসঙ্গে অপর্ণা সেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট বলেন, "আমি জানি না বিরোধীরা এই দাবি জানাবে বলেই প্রধানমন্ত্রী আগেভাগে এটা বলেছেন কি না । সে বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই । কিন্তু রাজ্য প্রশাসন, শাসক-বিরোধী সব যদি এক জায়গায় হয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের কিছু বলার থাকে ? কী করার থাকে সাধারণ মানুষের ? আমি জানি না, এই যে কথা বলছি আগামী দিনে এই সুযোগ থাকবে কি না !"
শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহারও মণিপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৷ মণিপুরের হিংসার জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করে তিনি বলেন, "আমি বিস্মিত । আমি ক্ষুব্ধ । আমি আশাহত । বুঝতে পারছি না কোন পথে এর অবসান ঘটানো যায় । যারা প্রশাসনে আছে তারা অপদার্থ । তা না হলে মণিপুরে দিনের পর দিন এত দিন ধরে এ সমস্ত চলত না । যাদের প্রতিবাদ করা দরকার তারাও আজ অনৈতিকতা পোষণ করে । দেশ, ভাবনা, গণতন্ত্র আজ তাদের মধ্যে নেই । তা না হলে গণতন্ত্র বলে গণতন্ত্রের সাধনা করত । যে কারণে মণিপুর আজ জ্বলছে ।"