কলকাতা, 9 অক্টোবর : "পুজোর সময় কোরোনাকে কোয়ারানটিনে পাঠিয়ে দেব"— মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ এবং আতঙ্কিত বিরোধী দলের নেতারা এবং চিকিৎসক মহলের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানতে অনুপ্রাণিত করবে এবং যার ফল ভয়ংকর হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা ।
CPI(M) নেতা তথা চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম বলেন, "এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। এমন অসংলগ্ন এবং দায়িত্বহীন মন্তব্যই কোরোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি করবে। অতীতে আমরা দেখেছি মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থীর পর কীভাবে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । তিরুপতির মন্দিরের কত পূজারী সংক্রমিত হয়েছেন তাও আমরা জানি । এই পরিস্থিতিতে এই মন্তব্য সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করবে বেহিসেবি হতে, যার ফলে উৎসবের মরশুমের পর সংক্রমিতের সংখ্যা প্রবলভাবে বৃদ্ধি পাবে।"
একই মত কংগ্রেসের চিকিৎসক নেতা তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাসের। কেরালার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ওখানেও দেখা গেছে যে ওনামের সময় বেহিসেবি আচরণের ফলে উৎসবের পর সংক্রমিতের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্য একদমই অবৈজ্ঞানিক। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ যে উনি যেন কোনও রকম ঢিলেমি না দেখান এবং পুজো কমিটিগুলোকে যে টাকা সরকার দিয়েছে তা যেন মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ারের জন্য খরচ করা হয় ।
BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এবার উৎসব না হয়ে শুধু পুজো হলেই ভালো হয়, যাতে মায়ের আশীর্বাদে এই দুর্যোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। " তিনি আরও বলেন, এবার উৎসব না হলেই ভালো । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এখন উৎসবের কথা বলছেন সেটাই চিন্তার। অতীতে অনেক উৎসব হয়নি। রামনবমী হয়নি। মহরম হয়নি। এমনকী দোল উৎসবও হয়নি। সেই জন্যই বোধহয় গতকাল পুলিশ রঙিন জল ছিটিয়ে দোল উৎসব না হওয়ার দুঃখ ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল ।
এর আগেও অনেক চিকিৎসক আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন, যে দুর্গাপুজোর পর সংক্রমিতের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়বে। অনেক চিকিৎসকই সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে তারা বাড়ি থেকেই এবার পুজোয় সামিল হয়। জানা গিয়েছে যে, অনেক চিকিৎসকই মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে রীতিমত ক্ষুব্ধ। যদিও প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে এই ব্যাপারে অনেকেই মুখ খুলতে চাইছেন না।