ETV Bharat / state

সাতদিনের মধ্যে ছাড়তে হবে মিউচুয়াল বদলির আবেদন, নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর

আজ মিউচুয়াল বদলির একটি পোর্টালের সূচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী । আগামীকাল থেকে পোর্টালে মিউচুয়াল বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়
পার্থ চট্টোপাধ্যায়
author img

By

Published : Oct 7, 2020, 4:41 PM IST

Updated : Oct 7, 2020, 6:48 PM IST

কলকাতা, 7 অক্টোবর : সাতদিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে পড়ে থাকা সব মিউচুয়াল বদলির আবেদন । আজ বিকাশ ভবনে একটি অনুষ্ঠানে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কমিশনারকে কড়াভাবে নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । পাশাপাশি, আজ মিউচুয়াল বদলির একটি পোর্টালের সূচনাও করেন তিনি । আগামীকাল থেকে পোর্টালে মিউচুয়াল বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা । এছাড়া, শিক্ষক বদলি নিয়ে একাধিক বড় ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী ।

এদিন বিকাশ ভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান থেকে শিক্ষক বদলি নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী । বলেন, "আজকে মিউচুয়াল ট্রান্সফার পোর্টালের উন্মোচন করা হচ্ছে । অনেকেই বলেন, ও তো ওখানে যাচ্ছে, কিন্তু আমি তো ওখানে যেতে চাই । এবার সেটা আমরা পোর্টালেই দিয়ে দেব । যাতে কে যেতে চান, কে আসতে চান সেটা বোঝা যাবে । ম্যাচিং আবেদনকারী থাকলে যেমন এই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে, তেমনই ম্যাচিং আবেদনকারী সহজে খুঁজে পাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে । পরবর্তীকালে একক আবেদনের ব্যবস্থাও করা হবে ।"

মিউচুয়াল বদলির জন্য আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককেই খুঁজে নিতে হত এমন শিক্ষক, যিনি তাঁর জায়গায় আসতে চান ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তাঁর জায়গায় যেতে চান । তারপরে দু'জনে রাজি থাকলে আবেদন জানাতে হত স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে । স্কুল সার্ভিস কমিশন আবেদন খতিয়ে দেখে হিয়ারিংয়ের জন্য ডাকতেন আবেদনকারী শিক্ষকদের । তারপরেই হত বদলি । আজ শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, মিউচুয়াল বদলিতে আর প্রয়োজন নেই হিয়ারিংয়ের । তিনি বলেন, "মিউচুয়াল ট্রান্সফারে কোনও হিয়ারিং চলবে না । দু'জনে রাজি থাকলে করে দিতে হবে ।"

একইসঙ্গে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কমিশনারকে তিনি নির্দেশ দেন, মিউচুয়াল বদলির সব কেস সাতদিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে । তিনি বলেন, "আমি কমিশনার সাহেবকে অনুরোধ করছি, মিউচুয়াল বদলির যতগুলি কেস আছে সবক'টি আগামী সাতদিনের মধ্যে ছেড়ে দেবেন । এগুলি ফেলে রাখা যাবে না । এখানে কোনও ইন্টারভিউয়ের তো দরকার নেই । এটার সরলীকরণ করতে হবে । আমলাতান্ত্রিক একটা জট রয়ে যাচ্ছে এখানে । আবেদনের সময় টাকা লাগবে । আমি বলছি, কোনও টাকাপয়সা নেওয়া যাবে না । আবেদন করাটা চাকরির অংশ । এর জন্য আবার টাকা কেন লাগবে ? এসব বহুকাল থেকে চলে আসছে । আমরা আস্তে আস্তে সরলীকরণ করার চেষ্টা করছি । আগামী সাতদিনের মধ্যে এগুলি ছেড়ে দিতে হবে । আমি স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাইব ।"

এদিন শুধু মিউচুয়াল বদলি নয়, শিক্ষক বদলি নিয়ে আরও অনেক ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী । মূলত, বদলির নির্দেশ হয়ে যাওয়ার পর স্কুল থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না দেওয়ার বিষয়ে কড়া অবস্থান গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী । প্রথমে বলেন, "কিছুদিন আগেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকদের যত বেশি সংখ্যক নিজের জেলায় বা পার্শ্ববর্তী জেলায় আনা যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই আমাদের তরফে প্রথম পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় 6 হাজারের কাছাকাছি শিক্ষককে বদলির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । তাঁরা নিজেরাও যোগাযোগ করতে পারেন । আমরা এখান থেকে ছেড়ে দিলাম, আর জেলা পরিদর্শকরা ঘোরাবে, তা হবে না ।" তারপরেই NOC না দেওয়ার ঘটনায় কড়া হুঁশিয়ারি দেন তিনি । পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমার নজরে কয়েকটি ঘটনা এসেছে । যেখানে বদলি হয়ে গেছে, কিন্তু NOC দিতে চাইছে না । তাঁকে দিয়ে লেখানো হচ্ছে যে, NOC দেব । কিন্তু, আমি একটা গেস্ট টিচার নেব । তাঁর মাইনে তোমাকে দিতে হবে । আমি অবিলম্বে এটার তদন্ত চাই । অবিলম্বে যাঁদের NOC দেওয়ার কথা তাঁদের দিতে হবে । কমিশনারের তরফে যখন গেছে তখন জেলা পরিদর্শক বা অন্য কেউ এটা আটকাতে পারবেন না ।"

এরপর থেকে বদলির ক্ষেত্রে NOC লাগবে না বলেও আজ ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, " আর আমরা NOC-ও চাইব না । NOC-ও দরকার হবে না । তাঁরা গিয়ে সরাসরি যে স্কুলে তাঁদেরকে বলা হয়েছে সেই স্কুলে গিয়ে যোগ দেবেন । জেলাশাসক, জেলা পরিদর্শক ও প্রশাসনের আধিকারিকদের জানিয়ে রাখবেন । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে NOC-র নাম করে অসুবিধার সৃষ্টি করা হচ্ছে । আমি নিজে দুটি ঘটনা জানি । একটা লোক দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন । অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় । অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন এবং তাঁর বেতন থেকে কিছু কাটা যাবে না । আর যাঁরা এই ধরনের কাজ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে । NOC-র ব্যাপারে নজর রাখতে হবে । শুধু এখান থেকে বদলির নির্দেশ দিয়ে দিলাম, আর তাঁরা NOC পাচ্ছে না স্কুল থেকে, সমস্যা তৈরি হচ্ছে । বিশেষ করে মাধ্যমিক স্তর থেকে সব থেকে বেশি এই সমস্যা হচ্ছে । আমরা অনেকদিন আগে ছেড়ে দিলেও হচ্ছে না । শিক্ষা সচিবকে বলব, এগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে । আমাদের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে । নাহলে কিন্তু মুশকিল হয়ে যাচ্ছে ।"

তবে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা কার্যকর করতে গিয়ে একাধিক সমস্যা দেখা গেছে । তার ফলে কিছু এলাকায় বদলি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী । তিনি বলেন, "প্রাথমিক স্কুলের রেশিও মেইনটেইন করে আমরা জেলায় তাঁদের আনতে পারব । যদি জেলায় না হয়, তাহলে পার্শ্ববর্তী জেলায়, যতটা কাছাকাছি সম্ভব, পাশের জেলায় না হলে তার পাশের জেলায় যাতে হয় সেটা আমরা দেখব । আমরা ইতিমধ্যেই ছয় হাজার ছেড়ে দিয়েছি । কিন্তু, সবাই কলকাতায় আসতে চাইছেন । ঝাড়গ্রাম থেকে আসতে চাইছেন । কিন্তু, কেউ ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা বা পূর্ব মেদিনীপুরে ফিরে যেতে চাইছেন না । যাঁরা ছিলেন তাঁরা এখানে চলে আসতে চাইছেন । এইসব আমাদের যা নিয়ম তার ভিত্তিতেই করতে হবে । কেউ যেন না বোঝেন যে, বলেছি বলে এখানেই হয়ে যাবে । সেটা হবে না । কারণ, স্কুলসংখ্যা যা আছে তার ভিত্তিতেই হবে । পূর্ব মেদিনীপুর খালি করে দিয়ে তো কলকাতায় আনা যাবে না । কলকাতা থেকেও যেতে হবে । কেউ দূরে যেতে চাইবে না, শুধু দূর থেকে কাছে আসতে চাইবে । সেক্ষেত্রে যে রকম শূন্যপদ থাকবে তার ভিত্তিতেই করা হবে ।"

এই সমস্যা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, "পুজোর আগে প্রায় ছয় হাজার প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের বদলি যেমন ছেড়ে দিয়েছি তেমনই কিছু এলাকায় প্রথম ধাপে করা সম্ভব হয়নি । কারণ, একটি জেলার যতজন আসতে চাইছে, আর যতজন সেখান থেকে অন্য জেলায় যেতে চাইছে এই দুই সংখ্যার মধ্যে বিরাট ফারাক রয়েছে । তাই ছাত্র স্বার্থ মাথায় রেখে পঠন-পাঠনে যাতে কোনও বিঘ্ন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে ধীরে ধীরে পরের ধাপে তাঁদের আবেদন নিশ্চয়ই বিবেচনা করা হবে ।"

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের বদলি নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "হাইস্কুল শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া আমরা সরল করেছি । আগে জেলা পরিদর্শক, স্কুল সার্ভিস কমিশন- এমন বিভিন্ন জায়গায় যেতে হত । অর্থাৎ, অনেক জটিলতা ছিল । এখন সেটার আমরা সরলীকরণ করেছি । সেইসঙ্গে অনলাইনে সহজে আবেদন করার ব্যবস্থা হচ্ছে । আমরা অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা রাখব । অর্থাৎ, কোথায় ফাঁকা আছে, কোথায় নেই সেটা সহজেই বুঝতে পারবে ।"

কলকাতা, 7 অক্টোবর : সাতদিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে পড়ে থাকা সব মিউচুয়াল বদলির আবেদন । আজ বিকাশ ভবনে একটি অনুষ্ঠানে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কমিশনারকে কড়াভাবে নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । পাশাপাশি, আজ মিউচুয়াল বদলির একটি পোর্টালের সূচনাও করেন তিনি । আগামীকাল থেকে পোর্টালে মিউচুয়াল বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা । এছাড়া, শিক্ষক বদলি নিয়ে একাধিক বড় ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী ।

এদিন বিকাশ ভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান থেকে শিক্ষক বদলি নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী । বলেন, "আজকে মিউচুয়াল ট্রান্সফার পোর্টালের উন্মোচন করা হচ্ছে । অনেকেই বলেন, ও তো ওখানে যাচ্ছে, কিন্তু আমি তো ওখানে যেতে চাই । এবার সেটা আমরা পোর্টালেই দিয়ে দেব । যাতে কে যেতে চান, কে আসতে চান সেটা বোঝা যাবে । ম্যাচিং আবেদনকারী থাকলে যেমন এই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে, তেমনই ম্যাচিং আবেদনকারী সহজে খুঁজে পাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে । পরবর্তীকালে একক আবেদনের ব্যবস্থাও করা হবে ।"

মিউচুয়াল বদলির জন্য আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককেই খুঁজে নিতে হত এমন শিক্ষক, যিনি তাঁর জায়গায় আসতে চান ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তাঁর জায়গায় যেতে চান । তারপরে দু'জনে রাজি থাকলে আবেদন জানাতে হত স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে । স্কুল সার্ভিস কমিশন আবেদন খতিয়ে দেখে হিয়ারিংয়ের জন্য ডাকতেন আবেদনকারী শিক্ষকদের । তারপরেই হত বদলি । আজ শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, মিউচুয়াল বদলিতে আর প্রয়োজন নেই হিয়ারিংয়ের । তিনি বলেন, "মিউচুয়াল ট্রান্সফারে কোনও হিয়ারিং চলবে না । দু'জনে রাজি থাকলে করে দিতে হবে ।"

একইসঙ্গে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কমিশনারকে তিনি নির্দেশ দেন, মিউচুয়াল বদলির সব কেস সাতদিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে । তিনি বলেন, "আমি কমিশনার সাহেবকে অনুরোধ করছি, মিউচুয়াল বদলির যতগুলি কেস আছে সবক'টি আগামী সাতদিনের মধ্যে ছেড়ে দেবেন । এগুলি ফেলে রাখা যাবে না । এখানে কোনও ইন্টারভিউয়ের তো দরকার নেই । এটার সরলীকরণ করতে হবে । আমলাতান্ত্রিক একটা জট রয়ে যাচ্ছে এখানে । আবেদনের সময় টাকা লাগবে । আমি বলছি, কোনও টাকাপয়সা নেওয়া যাবে না । আবেদন করাটা চাকরির অংশ । এর জন্য আবার টাকা কেন লাগবে ? এসব বহুকাল থেকে চলে আসছে । আমরা আস্তে আস্তে সরলীকরণ করার চেষ্টা করছি । আগামী সাতদিনের মধ্যে এগুলি ছেড়ে দিতে হবে । আমি স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাইব ।"

এদিন শুধু মিউচুয়াল বদলি নয়, শিক্ষক বদলি নিয়ে আরও অনেক ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী । মূলত, বদলির নির্দেশ হয়ে যাওয়ার পর স্কুল থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না দেওয়ার বিষয়ে কড়া অবস্থান গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী । প্রথমে বলেন, "কিছুদিন আগেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকদের যত বেশি সংখ্যক নিজের জেলায় বা পার্শ্ববর্তী জেলায় আনা যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই আমাদের তরফে প্রথম পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় 6 হাজারের কাছাকাছি শিক্ষককে বদলির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । তাঁরা নিজেরাও যোগাযোগ করতে পারেন । আমরা এখান থেকে ছেড়ে দিলাম, আর জেলা পরিদর্শকরা ঘোরাবে, তা হবে না ।" তারপরেই NOC না দেওয়ার ঘটনায় কড়া হুঁশিয়ারি দেন তিনি । পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমার নজরে কয়েকটি ঘটনা এসেছে । যেখানে বদলি হয়ে গেছে, কিন্তু NOC দিতে চাইছে না । তাঁকে দিয়ে লেখানো হচ্ছে যে, NOC দেব । কিন্তু, আমি একটা গেস্ট টিচার নেব । তাঁর মাইনে তোমাকে দিতে হবে । আমি অবিলম্বে এটার তদন্ত চাই । অবিলম্বে যাঁদের NOC দেওয়ার কথা তাঁদের দিতে হবে । কমিশনারের তরফে যখন গেছে তখন জেলা পরিদর্শক বা অন্য কেউ এটা আটকাতে পারবেন না ।"

এরপর থেকে বদলির ক্ষেত্রে NOC লাগবে না বলেও আজ ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, " আর আমরা NOC-ও চাইব না । NOC-ও দরকার হবে না । তাঁরা গিয়ে সরাসরি যে স্কুলে তাঁদেরকে বলা হয়েছে সেই স্কুলে গিয়ে যোগ দেবেন । জেলাশাসক, জেলা পরিদর্শক ও প্রশাসনের আধিকারিকদের জানিয়ে রাখবেন । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে NOC-র নাম করে অসুবিধার সৃষ্টি করা হচ্ছে । আমি নিজে দুটি ঘটনা জানি । একটা লোক দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন । অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় । অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন এবং তাঁর বেতন থেকে কিছু কাটা যাবে না । আর যাঁরা এই ধরনের কাজ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে । NOC-র ব্যাপারে নজর রাখতে হবে । শুধু এখান থেকে বদলির নির্দেশ দিয়ে দিলাম, আর তাঁরা NOC পাচ্ছে না স্কুল থেকে, সমস্যা তৈরি হচ্ছে । বিশেষ করে মাধ্যমিক স্তর থেকে সব থেকে বেশি এই সমস্যা হচ্ছে । আমরা অনেকদিন আগে ছেড়ে দিলেও হচ্ছে না । শিক্ষা সচিবকে বলব, এগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে । আমাদের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে । নাহলে কিন্তু মুশকিল হয়ে যাচ্ছে ।"

তবে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা কার্যকর করতে গিয়ে একাধিক সমস্যা দেখা গেছে । তার ফলে কিছু এলাকায় বদলি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী । তিনি বলেন, "প্রাথমিক স্কুলের রেশিও মেইনটেইন করে আমরা জেলায় তাঁদের আনতে পারব । যদি জেলায় না হয়, তাহলে পার্শ্ববর্তী জেলায়, যতটা কাছাকাছি সম্ভব, পাশের জেলায় না হলে তার পাশের জেলায় যাতে হয় সেটা আমরা দেখব । আমরা ইতিমধ্যেই ছয় হাজার ছেড়ে দিয়েছি । কিন্তু, সবাই কলকাতায় আসতে চাইছেন । ঝাড়গ্রাম থেকে আসতে চাইছেন । কিন্তু, কেউ ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা বা পূর্ব মেদিনীপুরে ফিরে যেতে চাইছেন না । যাঁরা ছিলেন তাঁরা এখানে চলে আসতে চাইছেন । এইসব আমাদের যা নিয়ম তার ভিত্তিতেই করতে হবে । কেউ যেন না বোঝেন যে, বলেছি বলে এখানেই হয়ে যাবে । সেটা হবে না । কারণ, স্কুলসংখ্যা যা আছে তার ভিত্তিতেই হবে । পূর্ব মেদিনীপুর খালি করে দিয়ে তো কলকাতায় আনা যাবে না । কলকাতা থেকেও যেতে হবে । কেউ দূরে যেতে চাইবে না, শুধু দূর থেকে কাছে আসতে চাইবে । সেক্ষেত্রে যে রকম শূন্যপদ থাকবে তার ভিত্তিতেই করা হবে ।"

এই সমস্যা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, "পুজোর আগে প্রায় ছয় হাজার প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের বদলি যেমন ছেড়ে দিয়েছি তেমনই কিছু এলাকায় প্রথম ধাপে করা সম্ভব হয়নি । কারণ, একটি জেলার যতজন আসতে চাইছে, আর যতজন সেখান থেকে অন্য জেলায় যেতে চাইছে এই দুই সংখ্যার মধ্যে বিরাট ফারাক রয়েছে । তাই ছাত্র স্বার্থ মাথায় রেখে পঠন-পাঠনে যাতে কোনও বিঘ্ন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে ধীরে ধীরে পরের ধাপে তাঁদের আবেদন নিশ্চয়ই বিবেচনা করা হবে ।"

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের বদলি নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "হাইস্কুল শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া আমরা সরল করেছি । আগে জেলা পরিদর্শক, স্কুল সার্ভিস কমিশন- এমন বিভিন্ন জায়গায় যেতে হত । অর্থাৎ, অনেক জটিলতা ছিল । এখন সেটার আমরা সরলীকরণ করেছি । সেইসঙ্গে অনলাইনে সহজে আবেদন করার ব্যবস্থা হচ্ছে । আমরা অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা রাখব । অর্থাৎ, কোথায় ফাঁকা আছে, কোথায় নেই সেটা সহজেই বুঝতে পারবে ।"

Last Updated : Oct 7, 2020, 6:48 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.