কলকাতা, 4 অগস্ট: বেহালার মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ ৷ সেই শেল ছিটকে গিয়ে পথচলতি এক মহিলার গাল ফুটো করে দিল ৷ তিনি গুরুতর জখম অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ৷ আজই তাঁর অস্ত্রোপচার হবে ৷
জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস: বেহালা চৌরাস্তার পথদুর্ঘটনায় দ্বিতীয় বর্ষের স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জেমস লং সরণি । ঘাতক লরিকে সামনে না পেয়ে পরপর পুলিশের গাড়ি, সরকারি বাস ও বেসরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে উত্তেজিত জনতা ৷ প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ডায়মন্ডহারবার রোডের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগকারী রাস্তা অবরোধ করেন এলাকার বাসিন্দারা । জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ লাঠি চালাতে বাধ্য হয় । এলাকা খালি করতে ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস । আর তখনই ঘটে গেল আরও এক ভয়ানক ঘটনা ।
মহিলার গালে টিয়ার গ্যাসের শেল: যখন বাসিন্দাদের অবরোধের ফলে জেমস লং সরণি এলাকা অগ্নিগর্ভ চেহারা নিয়েছে, ঠিক সেই সময় বেহালা 14 নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে পায়ে হেঁটে বেহালা চৌরাস্তার দিকে যাচ্ছিলেন এক মহিলা । তিনি পরিচারিকার কাজ করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর । জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ যখন টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায়, তখন শেল ছিটকে গিয়ে ওই মহিলার গালে লাগে । রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি ।
এসএসকেএম-এ অস্ত্রোপচার: ওই মহিলাকে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশের গাড়িতেই পৌঁছে দেওয়া হয় স্থানীয় বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে । কিন্তু সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ার ফলে তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে । চিকিৎসকরা সেখানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে জানান, তাঁর গালের হার ফুটো হয়ে গিয়েছে । টিয়ার গ্যাসের গরম শেল তাঁর গালে লেগে চামড়া ভেদ করে হার ফাটিয়ে দিয়েছে । ইতিমধ্যেই তাঁর এমআরআই করা হয়েছে । হাসপাতাল সূত্রের খবর, আজই তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হবে ।
আরও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু পড়ুয়ার, মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ বেহালায়
রণক্ষেত্র বেহালা: শুক্রবার সকাল ছটা নাগাদ বেহালায় চৌরাস্তায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনাকে ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধে । ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা । যান কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল এবং কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (ট্রাফিক) রূপেশ কুমার । লালবাজার সূত্রের খবর, উন্মত্ত জনতার হাতে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ।
এলাকায় মোতায়েন পুলিশ: গোটা ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা । প্রায় তিন ঘণ্টা পর ডায়মন্ডহারবার রোড থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয় । বেলা 11টা নাগাদ ডায়মন্ডহারবার রোডে শুরু হয় যান চলাচল । এলাকায় যাতে নতুন করে অশান্তির আঁচ ছড়াতে না পারে, তার জন্য মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশ ।