কলকাতা, 24 মার্চ: দুয়ারে সরকার শিবির পরিচালনা করতে প্রায় 300-র বেশি শিক্ষককে নিযুক্ত করা হবে ৷ তবে, পৌর স্কুলে পঠন-পাঠনের কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা ৷ পাশাপাশি এ বিষয়ে কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিমের জবাবও চাইছে বিরোধীরা (Opposition) ৷ পালটা বিরোধীদের কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়ে গোটা বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম (Kolkata Mayor Firhad Hakim) ৷ তাঁর কথায়, "আমাদের স্কিমগুলো নিয়ে বিরোধীরা ভীত । ওরা পায়ের তলায় মাটি না-পেয়ে এই ধরনের অভিযোগ করছে।"
নতুন অর্থবর্ষের শুরুর দিন থেকে 20 এপ্রিল পর্যন্ত চলবে দুয়ারে সরকার শিবির । কলকাতায় শিবিরগুলিতে থাকবেন পৌরনিগমের প্রায় 750 পৌরকর্মী। আর তার মধ্যেই প্রায় 300-এর বেশি শিক্ষক থাকবেন। বিরোধীদের অভিযোগ, কলকাতা পৌরনিগমের শিক্ষা বিভাগে আছেই কম-বেশি 800 শিক্ষক। তার থেকে 300-এর বেশি শিক্ষককে দুয়ারে সরকারের কাজে তুলে নেওয়া হলে পৌর স্কুলগুলিতে ক্লাস চলবে কী করে? ছাত্র ছাত্রীদের পড়াবেন করা?
অন্য়দিকা, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে কারা থাকবেন, কারা শিবির চালনা করবেন সেই তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে কলকাতা পৌরনিগম। সেই তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, শুধু শিক্ষা বিভাগ নয়, কর্মীর অপ্রতুলতার জেরে পৌরনিগমের আরও কয়েকটি বিভাগের কাজের গতি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা আছে। এত শিক্ষক-শিক্ষিকা শিবিরে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার কী হবে? এবিষয় কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা বলেন, "যে সমস্ত স্কুলে পড়ুয়া কম, সেখানকার শিক্ষকদেরই মূলত এই শিবিরে পাঠানো হচ্ছে। সব পরিস্থিতি দেখেই তালিকা পাঠানো হয়েছে। 20 দিনের ব্যাপার দেখতে দেখতে কেটে যাবে। খুব একটা সমস্যা হবে না।"
মেয়র পারিষদের দাবি, অতীতেও এমন শিবিরে শিক্ষকদের নেওয়া হয়েছে। তেমন হলে কয়েকটি স্কুলে কয়েক দিনের জন্য ছুটিও দেওয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি। এই তালিকা হওয়ার পর বিরোধীরা অবশ্য় বলছেন, কার্যত স্কুলগুলি ফের ছুটির মেজাজে থাকবে। তাদের দাবি, এভাবে চললে ক্ষতি হবে পড়ুয়াদেরই। অন্য়দিকে, কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বেশিরভাগ শিবির শনিবার, রবিবার ও ছুটির দিনে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এটা এটা মানুষের পরিষেবার বিষয়। দুয়ারে সরকার শিবির মানুষের পরিষেবা দেওয়ার জন্য। মেয়রের কথায়, "বার্ধক্য ভাতা থেকে শুরু করে অনেক কিছু প্রকল্পের জন্য অনেকেই সরকারি অফিসে আসতে পারেন না। অনেকে বোরো অফিসেও যেতে পারেন না। বাড়ির কাছে ক্যাম্প হলে সেই সুবিধাগুলি যাতে সাধারন মানুষ সকলে নিতে পারেন সেই জন্যই এই ব্যবস্থা।"
আরও পড়ুন: 'সুজনের স্ত্রী পরীক্ষা দিয়েছিলেন কিনা স্পষ্ট নয় !' তদন্তের দাবি ব্রাত্যর
পাশাপশি এ প্রসঙ্গে বিরোধীদের মন্তব্যের পালটা জবাবও ছুঁড়ে দেন তিনি। ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বেশিরভাগটাই আমরা ছুটির দিনে স্কুলে অথবা স্থানীয় ক্লাবে করে থাকি। কিছু চেয়ার-টেবিল পাতা হয়। আধিকারীকরা আসেন, সেরকম কিছু খরচ হয় না। লোকাল ছেলেরাই টিফিন, কচুরি, সিঙ্গারার ব্যবস্থা করে দেয়। এটাতে যে হই হই করে খুব বেশি খরচা হয় এমনটা নয়। আসলে আমাদের স্কিমগুলো নিয়ে বিরোধীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছে। আসলে মানুষের দুয়ারে সরকার চলে গেলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। বিরোধীরা পায়ের তলায় মাটি না পেয়ে এই ধরনের অভিযোগ করছে।"