কলকাতা, 1 জুন: ফের তীব্র গরমের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রীষ্মকালীন ছুটি। বুধবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে নতুন সিদ্ধান্ত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করেন, স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি থাকবে 15 জুন পর্যন্ত। আবহাওয়া দফতর থেকে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা প্রকাশ্যে আসতেই সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এই ছুটির জেরে চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বছরশেষে সিলেবাস শেষ হবে কী করে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষামহল ৷
অনির্দিষ্টকালের গরমের ছুটি কবে শেষ হবে, তা জানতে চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ চিঠি দিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতরকে। তারপরেই 5 জুন উচ্চ প্রাথমিক স্কুল এবং 7 তারিখ প্রাথমিক স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। তবে আবারও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হাওয়া অফিস সতর্কতা জারি করায় মুখ্যমন্ত্রী গরমের ছুটি বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন ৷ তবে এই বিষয় নিয়ে চিন্তিত পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা ৷ তিনি বলেন, "স্কুল খুলবে শুনে আমরা একটু খুশি হয়েছিলাম। কারণ অতিরিক্ত ছুটি পড়লে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে সত্যিই একটু সমস্যা হয়। অন্যদিকে গরমও রয়েছে ৷ কিন্তু যদি অতিরিক্ত ক্লাস দিয়ে এখন যে ঘাটতি হচ্ছে তা মেটানো সম্ভব হয়, তাহলেই বছরের শেষে সিলেবাস শেষ করা যেতে পারে।"
এই বিষয়ে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি জানান,"বারে বারে গরমের নামে এই ছুটির প্রহশন কোনওমতেই শিক্ষা জগতে কাম্য নয়। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে গরমের ছুটির মধ্যে। ছাত্রছাত্রীরা তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষা কর্মীর সাহায্য পাচ্ছে না। উচ্চমাধ্যমিকের পঠন-পাঠন মে মাসের প্রথম সপ্তাহে হওয়ার কথা। আগামী অগস্ট মাস থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমে মূল্যায়ন চালু হওয়ার কথা পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের। ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার বাইরে চলে যাচ্ছে। স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। নাবালিকা বিয়ের সংখ্যা বাড়ছে। বিদ্যালয়ে আসার ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের অনীহা তৈরি হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত গরমের ছুটি, প্রতিবাদে পথে নামল শিক্ষকরা
এই বিষয়ে তীব্র নিন্দা করছে শিক্ষাবিদেরাও। অনেকের মতে যদি স্কুলের সময় এগিয়ে নিয়ে আসা যেত তাহলেও সুবিধা হত। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় নিন্দা করে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, "সব রানির খেয়ালে চলছে। লেখাপড়াটাকে রাজ্য থেকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা। অতিরিক্ত গরমের ছুটি মানে অর্থহীন। এতে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাচ্চাদের একদম চলে যাবে।"