কলকাতা, 26 জুলাই: বাড়ির সামনেই ছিল চিৎপুর ট্রাম লাইন। প্রতিদিন যেত ট্রাম। বেশ কয়েক বছর হল শুধু লাইনটাই রয়েছে কিন্তু ট্রামের দেখা নেই। শুধু চিৎপুর নয় কলকাতার প্রায় সিংহভাগ ট্রাম রুট এখন বন্ধ। আর প্রায় অবলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পরিবেশ বান্ধব ট্রামের স্মৃতি অমলিন রাখতেই কুমোরটুলির ভিতর ট্রামের আস্ত কামরার আদলে চায়ের দোকান তৈরি করেছেন দোকানদার (Tea Stall Made like Tram in Kumartuli)।
মদনদার চায়ের দোকান হিসেবে পরিচিত। তবে ট্রামের আদলে সাজানোর পর থেকে আশপাশের তো বটেই কলকাতার নানা প্রান্তে থেকে লোকজন আসেন এই দোকানের চায়ে চুমুক দিতে। দোকান মদন বাবুর নামে হলেও হাল কিন্তু তাঁর স্ত্রীর হাতে। কুমোরটুলির সরু পিচ রাস্তায় খানিকটা হেঁটে ঢুকলেই বিখ্যাত শিল্পী নেপাল পালের স্টুডিও। আর তার ঠিক উলটো দিকেই এই দোকান। হলুদ-সবুজ রঙের মোটা টিনের পাতে তৈরি। দূর থেকে দেখলে মনে হবে একটা ট্রাম দাঁড়িয়ে রয়েছে। দোকানে জায়গা খুবই কম। থাকে-থাকে সাজানো নানা নকশার মাটির ভাঁড় পাশে রয়েছে কাগজের কাপও।
আরও পড়ুন: চায়ের সঙ্গে কাপও খেতে পারবেন, অভিনব চা বিক্রি মেদিনীপুরের নিশীথের
এত কিছু থাকতে কেন ট্রামের আদলে তৈরি করলেন দোকান ? এই প্রশ্ন ছিল মদন বাবুর স্ত্রী মানু পালের কাছে। উত্তরে মানু দেবী বলেন, "এই দোকানের বয়স 30-40 বছর। আমিও এই এলাকারই মেয়ে। এখান থেকে একদম ঢিল ছোড়া দূরত্বে চিৎপুর ট্রাম লাইন। ছোট থেকে দেখেছি ট্রাম চলতে। সেই আওয়াজ, ট্রামের ঘণ্টা সবটাই এখনও কানে বাজে। বহুবার চড়েছি। কিন্তু বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল এই লাইনে আর ট্রাম আর চলে না। তাই কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী ট্রামের স্মৃতি যাতে আমাদের সকলের মনে অমলিন থাকে তাই এই উদ্যোগ।"
তিনি আরও বলেন, "তবে এভাবে সাজানোর পরে বহুদূর থেকে লোকজন আসছেন চা পান করতে। 2020 সালের 3 মার্চ দোকান সংস্কার শুরু করেছিলেন আমার স্বামী। এরপরই শুরু হয় লকডাউন। তারপর থেকে সবই বন্ধ ছিল। তাই ট্রামের আদল দিলেও টুকটাক সাজানোর কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সেগুলো ধীরে-ধীরে করব।"