ETV Bharat / state

'বহিরাগত' BJP-ই কাঁটা একুশে ! আক্রমণে মমতা

author img

By

Published : Jul 21, 2020, 6:43 PM IST

Updated : Jul 21, 2020, 6:54 PM IST

এবারের ভার্চুয়াল সভা থেকে NRC, NPR, কয়লা খনির বেসরকারিকরণ সহ একাধিক ইশুতে BJP কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাপাধ্যায় । তাঁর বার্তা 2021 বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় উন্নয়ন বজায় রাখতে তৃণমূল কংগ্রেসকেই সরকার হিসেবে বেছে নেবে বাংলার মানুষ ।

মমতা
মমতা

কলকাতা, 21 জুলাই : পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই রকম প্ল্যাটফর্ম থেকে একুশের একুশে জুলাইকে 'ঐতিহাসিক' সভায় রূপ দিতে মমতা কোন তাস ফেলেন সেদিকে নজর ছিল বাংলার ৷ কোভিড পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ কি হয়ে উঠতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেসের একুশ জয়ের প্ল্যাটফর্ম? সে প্রশ্নও উঠছিল ৷ একুশের ভোটযুদ্ধ পর্যন্ত BJP বিরোধিতার রাশ যে কোনওমতেই আলগা করছেন না, ভার্চুয়াল মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় তা বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দল এবং একইসঙ্গে বিরোধী দল BJP-কে বার্তা দিলেন, বাংলায় বহিরাগতদের নো এন্ট্রি ৷ ছুঁয়ে গেলেন NRC, NPR-কেও ৷ বার্তা দিলেন, বাংলায় সরকার ফেলার চক্রান্ত বরদাস্ত করবেন না ৷ ডাক দিলেন BJP-র জামানত বাজেয়াপ্ত করার ৷ কর্মীদের মনোবল বাড়াতে BJP টনিকের পাশাপাশি তাঁর নতুন দাওয়াই - ''চিন্তা করবেন না, হাম হ্যায় না ৷''

কোরোনা ঝড়। তার সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সুপার সাইক্লোন আমফান। লড়াই চলছে এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর। তার উপর গেরুয়া শিবিরের তরফে আনা একের পর এক অভিযোগ । এর জেরে বারবার বিপাকে পড়েছে মা-মাটি-মানুষের সরকার । কখনও কাটমানি । কখনও আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি । কখনও বা নানা রাজনৈতিক সংঘর্ষ, জল-বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, রেশন দুর্নীতি-সহ একাধিক ক্ষেত্রে যথাযথ পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ । তালিকায় রয়েছে চাকরির পরীক্ষা, বেকারত্বও । এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কিছুটা হলেও ব্যকফুটে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ৷ কিন্তু মমতার কথায়, "মনে রাখবেন আহত বাঘ আরও ভয়ংকর।"

আজকের সভায় শুরু থেকেই BJP-কে নিশানা করেন মমতা । প্রত্যাশা অবশ্য এটাই ছিল । তাঁর স্পষ্ট বার্তা, "2019-এ কটা আসন পেয়ে লম্ফ-ঝম্প শুরু করেছে BJP ৷ তবে গুজরাত বাংলাকে চালাবে না । বহিরাগতরা নয়, বাংলার লোকই বাংলা চালাবে । কারণ BJP দেশকে বিষাক্ত করেছে ৷ দেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র নষ্ট করেছে ৷ " মমতার কথায় BJP- কে ভোট দিলে সম্মান নষ্ট হয়ে যায় । যার উদাহরণ ভাটপাড়া, গাইঘাটা, নৈহাটি । তাই আজ বারবার সবাইকে তিনি তৃণমূলে ফিরে আসার কথা বলেছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তৃণমূলই একমাত্র জায়গা । এখানে শোষণ নেই, শাসন আছে । তাই টাকার লোভে BJP-কে ভোট দেবেন না । এরা রাজনীতি, অর্থনীতি, গণতন্ত্র সব শেষ করে দিয়েছে ।"

মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের প্রসঙ্গ টেনে BJP-র রাজনীতিকে তুচ্ছ বলেন মমতা । তিনি জানান, এক অদ্ভুত অবিশ্বাস্য দল BJP। এটা দুঃখের, BJP দেশ শাসন করছে । BJP শুধু টাকা লুট করে, টাকা চুরি করে ৷ নির্বাচনের সময় টাকা দেয় ৷ টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করে এরা । রাজস্থানে, কর্নাটকে, মধ্যপ্রদেশে টাকা দিয়ে সরকার ভাঙা চলছে । বাংলায়ও চক্রান্ত চলছে। তবে বারবার বাংলার মানুষের উপর ভরসা রেখেছেন তিনি । পোডিয়ামের ওপার থেকে ওই দৃঢ় কণ্ঠ বলে উঠেছে, "মনে রাখবেন আপনারা লড়াই করে 35 বছরের CPI(M) সরকারকে সরিয়েছেন । BJP কেও সরাতে পারবেন । তাই বহিরাগতরা নয়, বাংলার লোক বাংলা চালাবে ৷" দিয়েছেন সতর্কবার্তাও । BJP-কে ভরসা করলে যে বিপদ হতে পারে, সেই বিষয়টি বারবার স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছেন । তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, "BJP যা করছে তাতে রাজনীতি একটা নোংরা খেলায় পরিণত হয়েছে । কোনও নির্বাচন কমিশন নেই । কোনও নিয়ম নেই । সব রাজ্যে শুধু শাসন চালাতে চায় BJP । যেন ওয়ান নেশন ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি । ওদের ভুল করলে সব যাবে । জীবন-জীবিকা সব যাবে ।"

উঠে এসেছে NRC, NPR ইশুও । এই কোরোনা পরিস্থিতিতে BJP-র নেওয়া নানা পদক্ষেপ যেন কেউ ভুলে না যান । আজকের একুশের সভায় তা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বলেন, "অসমে NRC-র নাম করে অত্যাচার চলছে ৷ কোরোনা চলছে বলে CAA, NRC ভুলে যাব, এটা ভাববেন না ৷ দেশজুড়ে তাণ্ডব চলছে ৷ দেশে ভয়ে অনেকে কথা বলতে চাইছেন না ৷ অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চান না ৷ কোথাও এনকাউন্টার চলছে , কোথাও খুন করা হচ্ছে । " তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায় সরকার চালাতে কার্যত ব্যর্থ BJP সরকার । তাঁর সংযোজন, "রেল, কয়লা খনি সব বিক্রি করে দেওয়া হল ৷ বলা হচ্ছে, কর্মীরা পাঁচ বছরের জন্য ছুটি নিন ৷ সেই নেতা নেতা হয়, যে সবাইকে নিয়ে চলে ৷ যে সংস্থা দিয়ে দেশ চালায়, সে নেতা নয় ৷"

বক্তৃতার শেষের দিকেই যেন সেই লড়াকু নেত্রীকে, সেই হার না মানা দিদিকে আর একবার ফিরে পেয়েছিলেন তৃণমূলের দলীয় কর্মীরা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস "ভয় পাওয়ার কারণ নেই । চিন্তা করার কারণ নেই । হাম হ্যায় না । আসুন বাংলাকে বাঁচাই । একসঙ্গে কাজ করি । নতুন করে বাঁচি । " দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তাঁর মন্ত্র হল আবার লড়াই করতে হবে । BJP-র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে । এবার বদলা নিতে হবে । এর বদলা মানবিকতাকে জয় করে নেওয়া হবে । পাশাপাশি এক হয়ে উন্নয়নের কাজে সামিল হতে হবে । আবারও সেই চেনা ছন্দে বলে ওঠেন, "আমি বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে জানি ৷ আমি জেল, বন্দুক, গুলি এসবে ভয় পাই না ৷" পাশাপাশি জনগণের উদ্দেশে বার্তা, কোথাও দুর্নীতি হলে স্থানীয় প্রশাসনে অভিযোগ জানান । সময় দিন । আর ভরসা রাখুন ।

কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, সমব্যথী সহ নানা প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরে বাংলার মানুষের প্রতি মমতার বার্তা একমাত্র তৃণমূল সরকারই এভাবে উন্নয়নের কাজ করতে পারে । মমতা বলেন, "শুধু আগামী বছর 21 জুন পর্যন্ত নয় ৷ তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে সারাজীবন বিনামূল্যে রেশন, পড়াশোনা, চিকিৎসা পাবে রাজ্যবাসী ৷ বাংলায় কত রেশন দোকান ৷ কেউ গন্ডগোল করলে সরকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে ৷ আগামী বছর 21 জুন পর্যন্ত নয়, সারা জীবন বিনামূল্যে রেশন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন ৷ অনেক রাজ্যে সরকারি কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না । একমাত্র বাংলায় সবাই বেতন পাচ্ছে ৷ দেশে কোরোনার নামে অনেকের চাকরি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ৷ দারিদ্র দূরীকরণে, ক্ষুদ্র শিল্পে এক নম্বরে রয়েছে বাংলা ৷ দিদিকে বলো-তে শুনে ছয় লাখ মানুষের পেনশন করে দিয়েছি ৷ বাংলায় বেকারের হার 40 শতাংশ কমেছে ৷ কিন্তু দেশে বেকারের হার 45 শতাংশ বেড়েছে ৷"

কোরোনা পরিস্থিতিতেও সরকারের তরফে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে । আজ সেইবিষয়েও দীর্ঘ তালিকা তুলে ধরেন মমতা । বলেন, "আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের 1 লাখ টাকা করে দিয়েছি ৷ সবার ট্রেনের ভাড়া দিয়েছি ৷ তাঁদের থাকা, খাওয়া সব খরচ দিয়েছি ৷ কোথাও ছাত্রছাত্রীদের বাসে করে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছি ৷"

মমতার দৃঢ় বিশ্বাস BJP -কে ক্ষমতায় এনে ভুল করবেন না বাংলার মানুষ । আজকের সভা থেকেই যেন একুশের নির্বাচনে ফিরে আসার বার্তা দিয়ে গেলেন মমতা । তাঁর কথায়, " আগামী বছর 21 জুলাই সবচেয়ে বড় সভা হবে ৷ বিধানসভা ভোটের পর সবচেয়ে বড় সভা হবে ৷ "

কলকাতা, 21 জুলাই : পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই রকম প্ল্যাটফর্ম থেকে একুশের একুশে জুলাইকে 'ঐতিহাসিক' সভায় রূপ দিতে মমতা কোন তাস ফেলেন সেদিকে নজর ছিল বাংলার ৷ কোভিড পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ কি হয়ে উঠতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেসের একুশ জয়ের প্ল্যাটফর্ম? সে প্রশ্নও উঠছিল ৷ একুশের ভোটযুদ্ধ পর্যন্ত BJP বিরোধিতার রাশ যে কোনওমতেই আলগা করছেন না, ভার্চুয়াল মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় তা বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দল এবং একইসঙ্গে বিরোধী দল BJP-কে বার্তা দিলেন, বাংলায় বহিরাগতদের নো এন্ট্রি ৷ ছুঁয়ে গেলেন NRC, NPR-কেও ৷ বার্তা দিলেন, বাংলায় সরকার ফেলার চক্রান্ত বরদাস্ত করবেন না ৷ ডাক দিলেন BJP-র জামানত বাজেয়াপ্ত করার ৷ কর্মীদের মনোবল বাড়াতে BJP টনিকের পাশাপাশি তাঁর নতুন দাওয়াই - ''চিন্তা করবেন না, হাম হ্যায় না ৷''

কোরোনা ঝড়। তার সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সুপার সাইক্লোন আমফান। লড়াই চলছে এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর। তার উপর গেরুয়া শিবিরের তরফে আনা একের পর এক অভিযোগ । এর জেরে বারবার বিপাকে পড়েছে মা-মাটি-মানুষের সরকার । কখনও কাটমানি । কখনও আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি । কখনও বা নানা রাজনৈতিক সংঘর্ষ, জল-বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, রেশন দুর্নীতি-সহ একাধিক ক্ষেত্রে যথাযথ পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ । তালিকায় রয়েছে চাকরির পরীক্ষা, বেকারত্বও । এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কিছুটা হলেও ব্যকফুটে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ৷ কিন্তু মমতার কথায়, "মনে রাখবেন আহত বাঘ আরও ভয়ংকর।"

আজকের সভায় শুরু থেকেই BJP-কে নিশানা করেন মমতা । প্রত্যাশা অবশ্য এটাই ছিল । তাঁর স্পষ্ট বার্তা, "2019-এ কটা আসন পেয়ে লম্ফ-ঝম্প শুরু করেছে BJP ৷ তবে গুজরাত বাংলাকে চালাবে না । বহিরাগতরা নয়, বাংলার লোকই বাংলা চালাবে । কারণ BJP দেশকে বিষাক্ত করেছে ৷ দেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র নষ্ট করেছে ৷ " মমতার কথায় BJP- কে ভোট দিলে সম্মান নষ্ট হয়ে যায় । যার উদাহরণ ভাটপাড়া, গাইঘাটা, নৈহাটি । তাই আজ বারবার সবাইকে তিনি তৃণমূলে ফিরে আসার কথা বলেছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তৃণমূলই একমাত্র জায়গা । এখানে শোষণ নেই, শাসন আছে । তাই টাকার লোভে BJP-কে ভোট দেবেন না । এরা রাজনীতি, অর্থনীতি, গণতন্ত্র সব শেষ করে দিয়েছে ।"

মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের প্রসঙ্গ টেনে BJP-র রাজনীতিকে তুচ্ছ বলেন মমতা । তিনি জানান, এক অদ্ভুত অবিশ্বাস্য দল BJP। এটা দুঃখের, BJP দেশ শাসন করছে । BJP শুধু টাকা লুট করে, টাকা চুরি করে ৷ নির্বাচনের সময় টাকা দেয় ৷ টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করে এরা । রাজস্থানে, কর্নাটকে, মধ্যপ্রদেশে টাকা দিয়ে সরকার ভাঙা চলছে । বাংলায়ও চক্রান্ত চলছে। তবে বারবার বাংলার মানুষের উপর ভরসা রেখেছেন তিনি । পোডিয়ামের ওপার থেকে ওই দৃঢ় কণ্ঠ বলে উঠেছে, "মনে রাখবেন আপনারা লড়াই করে 35 বছরের CPI(M) সরকারকে সরিয়েছেন । BJP কেও সরাতে পারবেন । তাই বহিরাগতরা নয়, বাংলার লোক বাংলা চালাবে ৷" দিয়েছেন সতর্কবার্তাও । BJP-কে ভরসা করলে যে বিপদ হতে পারে, সেই বিষয়টি বারবার স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছেন । তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, "BJP যা করছে তাতে রাজনীতি একটা নোংরা খেলায় পরিণত হয়েছে । কোনও নির্বাচন কমিশন নেই । কোনও নিয়ম নেই । সব রাজ্যে শুধু শাসন চালাতে চায় BJP । যেন ওয়ান নেশন ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি । ওদের ভুল করলে সব যাবে । জীবন-জীবিকা সব যাবে ।"

উঠে এসেছে NRC, NPR ইশুও । এই কোরোনা পরিস্থিতিতে BJP-র নেওয়া নানা পদক্ষেপ যেন কেউ ভুলে না যান । আজকের একুশের সভায় তা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বলেন, "অসমে NRC-র নাম করে অত্যাচার চলছে ৷ কোরোনা চলছে বলে CAA, NRC ভুলে যাব, এটা ভাববেন না ৷ দেশজুড়ে তাণ্ডব চলছে ৷ দেশে ভয়ে অনেকে কথা বলতে চাইছেন না ৷ অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চান না ৷ কোথাও এনকাউন্টার চলছে , কোথাও খুন করা হচ্ছে । " তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায় সরকার চালাতে কার্যত ব্যর্থ BJP সরকার । তাঁর সংযোজন, "রেল, কয়লা খনি সব বিক্রি করে দেওয়া হল ৷ বলা হচ্ছে, কর্মীরা পাঁচ বছরের জন্য ছুটি নিন ৷ সেই নেতা নেতা হয়, যে সবাইকে নিয়ে চলে ৷ যে সংস্থা দিয়ে দেশ চালায়, সে নেতা নয় ৷"

বক্তৃতার শেষের দিকেই যেন সেই লড়াকু নেত্রীকে, সেই হার না মানা দিদিকে আর একবার ফিরে পেয়েছিলেন তৃণমূলের দলীয় কর্মীরা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস "ভয় পাওয়ার কারণ নেই । চিন্তা করার কারণ নেই । হাম হ্যায় না । আসুন বাংলাকে বাঁচাই । একসঙ্গে কাজ করি । নতুন করে বাঁচি । " দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তাঁর মন্ত্র হল আবার লড়াই করতে হবে । BJP-র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে । এবার বদলা নিতে হবে । এর বদলা মানবিকতাকে জয় করে নেওয়া হবে । পাশাপাশি এক হয়ে উন্নয়নের কাজে সামিল হতে হবে । আবারও সেই চেনা ছন্দে বলে ওঠেন, "আমি বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে জানি ৷ আমি জেল, বন্দুক, গুলি এসবে ভয় পাই না ৷" পাশাপাশি জনগণের উদ্দেশে বার্তা, কোথাও দুর্নীতি হলে স্থানীয় প্রশাসনে অভিযোগ জানান । সময় দিন । আর ভরসা রাখুন ।

কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, সমব্যথী সহ নানা প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরে বাংলার মানুষের প্রতি মমতার বার্তা একমাত্র তৃণমূল সরকারই এভাবে উন্নয়নের কাজ করতে পারে । মমতা বলেন, "শুধু আগামী বছর 21 জুন পর্যন্ত নয় ৷ তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে সারাজীবন বিনামূল্যে রেশন, পড়াশোনা, চিকিৎসা পাবে রাজ্যবাসী ৷ বাংলায় কত রেশন দোকান ৷ কেউ গন্ডগোল করলে সরকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে ৷ আগামী বছর 21 জুন পর্যন্ত নয়, সারা জীবন বিনামূল্যে রেশন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন ৷ অনেক রাজ্যে সরকারি কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না । একমাত্র বাংলায় সবাই বেতন পাচ্ছে ৷ দেশে কোরোনার নামে অনেকের চাকরি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ৷ দারিদ্র দূরীকরণে, ক্ষুদ্র শিল্পে এক নম্বরে রয়েছে বাংলা ৷ দিদিকে বলো-তে শুনে ছয় লাখ মানুষের পেনশন করে দিয়েছি ৷ বাংলায় বেকারের হার 40 শতাংশ কমেছে ৷ কিন্তু দেশে বেকারের হার 45 শতাংশ বেড়েছে ৷"

কোরোনা পরিস্থিতিতেও সরকারের তরফে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে । আজ সেইবিষয়েও দীর্ঘ তালিকা তুলে ধরেন মমতা । বলেন, "আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের 1 লাখ টাকা করে দিয়েছি ৷ সবার ট্রেনের ভাড়া দিয়েছি ৷ তাঁদের থাকা, খাওয়া সব খরচ দিয়েছি ৷ কোথাও ছাত্রছাত্রীদের বাসে করে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছি ৷"

মমতার দৃঢ় বিশ্বাস BJP -কে ক্ষমতায় এনে ভুল করবেন না বাংলার মানুষ । আজকের সভা থেকেই যেন একুশের নির্বাচনে ফিরে আসার বার্তা দিয়ে গেলেন মমতা । তাঁর কথায়, " আগামী বছর 21 জুলাই সবচেয়ে বড় সভা হবে ৷ বিধানসভা ভোটের পর সবচেয়ে বড় সভা হবে ৷ "

Last Updated : Jul 21, 2020, 6:54 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.