ETV Bharat / state

ট্যাংরার ঘটনায় মৃতের বক্তব্য আর CCTV ফুটেজে জোর পুলিশের - ট্যাংরাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য

ট্যাংরার ঘটনায় অপরহরণের তথ্য থেকে এক চুল সরতে নারাজ যুবতি ৷ অপরদিকে, ধৃতদের 18 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত৷

tangra followup
গোপালবাবুর মৃত্যুকালীন বক্তব্য
author img

By

Published : Feb 7, 2020, 12:11 AM IST

Updated : Feb 7, 2020, 6:27 AM IST

কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি : ট্যাংরার ঘটনায় পরতে পরতে রহস্য ৷ দাবি, পালটা দাবিতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, সেই রাতে যুবতিকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়নি ৷ যদিও যুবতির জোরালো দাবি, তাঁকে অপহরণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল৷

যুবতির এই বক্তব্যের ফলে এখন কড়া চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে৷ লালবাজারের হাতে এখন দুটি অস্ত্র, এক কলকাতা পুলিশের তৃতীয় নয়ন CCTV ফুটেজ ও গোপাল প্রামাণিকের মৃত্যুকালীন বক্তব্য ৷ তবে, এই দুইয়ের মাঝেও কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা৷

ট্যাংরার এই ঘটনার সঙ্গে কিছুটা হলেও মিল রয়েছে পঞ্চসায়রের গণধর্ষণের ঘটনার৷ প্রাথমিকভাবে সেক্ষেত্রেও পুলিশের বিভ্রান্ত হচ্ছিল, কিন্তু সবশেষে সাফল্য আসে৷ হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সের সাহায্যেই সেক্ষেত্রে পুলিশ সফলতা পেয়েছিল৷ এক্ষেত্রেও হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সই পুরো ঘটনার জট খুলবে বলে ধারণা লালবাজারের৷

উল্লেখ্য, পুলিশের নিছক দুর্ঘটনার তথ্য মানতে নারাজ ওই যুবতি ৷ শুধু অপহরণ নয়, শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করা হয় বলে পালটা অভিযোগ তাঁর ৷ অপরদিকে, মৃতের যে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পুলিশ এমন দাবি করছে তা পুলিশের লেখা ৷ তাতে তাঁর শ্বশুরের আঙুলের ছাপ রয়েছে মাত্র৷ তাঁকে যে অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাতে তাঁর পক্ষে কতটা ঠিকঠাক বলা সম্ভব, এ বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন ওই যুবতি ৷ এছাড়াও বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ যুবতির প্রশ্ন, যে অবস্থায় তাঁর শ্বশুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে কেন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে কেন জবানবন্দী নিতে এতটা তৎপর হয়ে উঠল পুলিশ? নিজের নামে কেন তিনি অসম্মানজনক অভিযোগ আনবেন, এমনও প্রশ্ন তোলে ওই যুবতি৷

আদালত সূত্রের খবর, পুলিশ যে কেস আইডি পেশ করেছে তার মধ্যে রয়েছে গোপালবাবুর বক্তব্য৷ সেই বক্তব্যে গোপালবাবু বলেছেন, “ আমার শ্যালিকার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য আমি আমার পরিবারের লোকজন সমেত গোবিন্দপুর পূর্বাঞ্চল স্কুলের মাঠে গিয়েছিলাম। খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। রাত 11 টা 50 থেকে 55 নাগাদ হঠাৎ আমাদের থেকে বিপরীতগামী সাদা রঙের অ্যাম্বুলেন্স অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আমাকে হঠাৎ করে ধাক্কা মেরে কিছুদূর টেনে হিঁচড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরফলে আমার ডান পা সম্ভবত ভেঙে যায়। আমার সারা শরীরে প্রচন্ড চোট-আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে আমার সঙ্গে থাকা আত্মীয়রা আমায় NRS হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য এবং আমি চিকিৎসাধীন। আমি ওই সাদা অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার এর বিরুদ্ধে করা আইনি পদক্ষেপ চাই।"

গোপালবাবুর স্টেটমেন্টের কাগজ বলছে, সেটি রেকর্ড করেছেন সাব-ইন্সপেক্টর রাজীব রায়। সেই সময় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন চিকিৎসক অনির্বাণ দাস। সঙ্গে রয়েছে গোপালবাবুর হাতের ছাপ। পুলিশের প্রশ্ন যদি তিনি তাঁর পুত্রবধূকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন, তবে মৃত্যুকালীন জবানবন্দীতে সেটা তিনি বললেন না কেন? তবে কি পুত্রবধূ কিছুটা এগিয়ে থাকায় অন্ধকারে হাত ধরে টানাটানি বিষয়টি দেখতে পাননি গোপালবাবু? গৃহবধু চিৎকার চেঁচামেচি করাতে ভয় পেয়ে পালাতে গিয়ে দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে ওই অ্যাম্বুলেন্স? এমনি প্রশ্নে আপাতত দিশাহীন তদন্তকারীরা৷ অন্যদিকে, পুলিশ CCTV ফুটেজে কিছু পাওয়া যায়নি বলে দাবি করলেও, ওই গৃহবধূর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স থেকে কিছু করা হয়েছে কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য এখনও পর্যন্ত বাইরে আসেনি। সূত্র জানাচ্ছে, পুলিশের কাছে দুর্ঘটনার CCTV ফুটেজ থাকলেও, তার আগের ফুটেজ নাকি নেই। কিংবা থাকলেও সেটা সামনে আসেনি। সেই কারণেই প্রশ্নটা ক্রমশ জটিল হচ্ছে। তবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ হাত গুটিয়ে বসে নেই। তারা ওই গৃহবধূর জোরদার দাবির পর, অন্য সবকটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখার চেষ্টা করছে। গোয়েন্দা কর্তারা তদন্তকারীদের হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সের বিষয়টিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।


অপরদিকে, লালবাজার সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে গোপালবাবুর মৃত্যুকালীন জবানবন্দীকেই অভিযোগ হিসেবে ধরা হয়েছিল৷ কিন্তু ওই গৃহবধূর জোরদার দাবির পরই সেই বিষয়টির উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে৷ সেই সূত্র ধরেই আজ ভারতীয় দণ্ডবিধির 204 ধারার পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধির 341, 357 ও 34 ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে৷ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেই তদন্ত ভার নিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা৷

দুই অভিযুক্তকে পুলিশি হেপাজত দেওয়ার জন্য শিয়ালদা আদালতে জোরদার সাওয়াল করা হয়৷ তার ভিত্তিতেই ওই 2 অভিযুক্তকে 18 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি : ট্যাংরার ঘটনায় পরতে পরতে রহস্য ৷ দাবি, পালটা দাবিতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, সেই রাতে যুবতিকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়নি ৷ যদিও যুবতির জোরালো দাবি, তাঁকে অপহরণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল৷

যুবতির এই বক্তব্যের ফলে এখন কড়া চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে৷ লালবাজারের হাতে এখন দুটি অস্ত্র, এক কলকাতা পুলিশের তৃতীয় নয়ন CCTV ফুটেজ ও গোপাল প্রামাণিকের মৃত্যুকালীন বক্তব্য ৷ তবে, এই দুইয়ের মাঝেও কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা৷

ট্যাংরার এই ঘটনার সঙ্গে কিছুটা হলেও মিল রয়েছে পঞ্চসায়রের গণধর্ষণের ঘটনার৷ প্রাথমিকভাবে সেক্ষেত্রেও পুলিশের বিভ্রান্ত হচ্ছিল, কিন্তু সবশেষে সাফল্য আসে৷ হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সের সাহায্যেই সেক্ষেত্রে পুলিশ সফলতা পেয়েছিল৷ এক্ষেত্রেও হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সই পুরো ঘটনার জট খুলবে বলে ধারণা লালবাজারের৷

উল্লেখ্য, পুলিশের নিছক দুর্ঘটনার তথ্য মানতে নারাজ ওই যুবতি ৷ শুধু অপহরণ নয়, শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করা হয় বলে পালটা অভিযোগ তাঁর ৷ অপরদিকে, মৃতের যে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পুলিশ এমন দাবি করছে তা পুলিশের লেখা ৷ তাতে তাঁর শ্বশুরের আঙুলের ছাপ রয়েছে মাত্র৷ তাঁকে যে অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাতে তাঁর পক্ষে কতটা ঠিকঠাক বলা সম্ভব, এ বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন ওই যুবতি ৷ এছাড়াও বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ যুবতির প্রশ্ন, যে অবস্থায় তাঁর শ্বশুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে কেন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে কেন জবানবন্দী নিতে এতটা তৎপর হয়ে উঠল পুলিশ? নিজের নামে কেন তিনি অসম্মানজনক অভিযোগ আনবেন, এমনও প্রশ্ন তোলে ওই যুবতি৷

আদালত সূত্রের খবর, পুলিশ যে কেস আইডি পেশ করেছে তার মধ্যে রয়েছে গোপালবাবুর বক্তব্য৷ সেই বক্তব্যে গোপালবাবু বলেছেন, “ আমার শ্যালিকার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য আমি আমার পরিবারের লোকজন সমেত গোবিন্দপুর পূর্বাঞ্চল স্কুলের মাঠে গিয়েছিলাম। খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। রাত 11 টা 50 থেকে 55 নাগাদ হঠাৎ আমাদের থেকে বিপরীতগামী সাদা রঙের অ্যাম্বুলেন্স অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আমাকে হঠাৎ করে ধাক্কা মেরে কিছুদূর টেনে হিঁচড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরফলে আমার ডান পা সম্ভবত ভেঙে যায়। আমার সারা শরীরে প্রচন্ড চোট-আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে আমার সঙ্গে থাকা আত্মীয়রা আমায় NRS হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য এবং আমি চিকিৎসাধীন। আমি ওই সাদা অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার এর বিরুদ্ধে করা আইনি পদক্ষেপ চাই।"

গোপালবাবুর স্টেটমেন্টের কাগজ বলছে, সেটি রেকর্ড করেছেন সাব-ইন্সপেক্টর রাজীব রায়। সেই সময় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন চিকিৎসক অনির্বাণ দাস। সঙ্গে রয়েছে গোপালবাবুর হাতের ছাপ। পুলিশের প্রশ্ন যদি তিনি তাঁর পুত্রবধূকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন, তবে মৃত্যুকালীন জবানবন্দীতে সেটা তিনি বললেন না কেন? তবে কি পুত্রবধূ কিছুটা এগিয়ে থাকায় অন্ধকারে হাত ধরে টানাটানি বিষয়টি দেখতে পাননি গোপালবাবু? গৃহবধু চিৎকার চেঁচামেচি করাতে ভয় পেয়ে পালাতে গিয়ে দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে ওই অ্যাম্বুলেন্স? এমনি প্রশ্নে আপাতত দিশাহীন তদন্তকারীরা৷ অন্যদিকে, পুলিশ CCTV ফুটেজে কিছু পাওয়া যায়নি বলে দাবি করলেও, ওই গৃহবধূর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স থেকে কিছু করা হয়েছে কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য এখনও পর্যন্ত বাইরে আসেনি। সূত্র জানাচ্ছে, পুলিশের কাছে দুর্ঘটনার CCTV ফুটেজ থাকলেও, তার আগের ফুটেজ নাকি নেই। কিংবা থাকলেও সেটা সামনে আসেনি। সেই কারণেই প্রশ্নটা ক্রমশ জটিল হচ্ছে। তবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ হাত গুটিয়ে বসে নেই। তারা ওই গৃহবধূর জোরদার দাবির পর, অন্য সবকটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখার চেষ্টা করছে। গোয়েন্দা কর্তারা তদন্তকারীদের হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সের বিষয়টিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।


অপরদিকে, লালবাজার সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে গোপালবাবুর মৃত্যুকালীন জবানবন্দীকেই অভিযোগ হিসেবে ধরা হয়েছিল৷ কিন্তু ওই গৃহবধূর জোরদার দাবির পরই সেই বিষয়টির উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে৷ সেই সূত্র ধরেই আজ ভারতীয় দণ্ডবিধির 204 ধারার পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধির 341, 357 ও 34 ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে৷ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেই তদন্ত ভার নিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা৷

দুই অভিযুক্তকে পুলিশি হেপাজত দেওয়ার জন্য শিয়ালদা আদালতে জোরদার সাওয়াল করা হয়৷ তার ভিত্তিতেই ওই 2 অভিযুক্তকে 18 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

Intro:কলকাতা, ৬ ফেব্রুয়ারি: ট্যাংরার ঘটনায় পরতে পরতে রহস্য। দাবি, পাল্টা দাবিতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সেই রাতে গৃহবধূকে অপহরণের চেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছিল লালবাজার। কিন্তু গৃহবধূর জোরালো দাবিতে পুলিশের বক্তব্যকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। লালবাজারের হাতে এখন দুটো অস্ত্র। কলকাতা পুলিশের তৃতীয় নয়ন সিসিটিভি ফুটেজ এবং গোপাল প্রামানিকের মৃত্যুকালীন জবান বন্দি। এই দুয়ের মাঝে কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা। অনেকটা পঞ্চসায়র গণধর্ষণ মামলার মতো। সেক্ষেত্রেও প্রাথমিকভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু সবশেষে সাফল্য আসে। সেক্ষেত্রেও পুলিশকে সাহায্য করেছিল হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স। লালবাজারের ধারণা ট‍্যাংরাতেও জট খুলবে সেই হিউম‍্যান ইন্টেলিজেন্স।


Body:একদিকে, পুলিশ যখন ট‍্যাংরার ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা বলে মামলার ইতি টানতে চাইছে, তখন ওই গৃহবধূ পুলিশকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাবি করছেন তাকে অপহরণ চেষ্টায় শুধু হয়নি, শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটেছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে শশুরকে। সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যে জবানবন্দীর প্রেক্ষিতে পুলিশ এমন দাবি করছে, সেই জবানবন্দি তো একজন পুলিশের লেখা। তাতে শশুরের আঙ্গুলের ছাপ রয়েছে মাত্র। তিনি যে অবস্থায় হাসপাতালে গেছেন, তার পক্ষে কতটা ঠিকঠাক বলা সম্ভব ছিল তা অনুমান করাই যায়। ফলে পুলিশ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে, তার জবানবন্দি নিতে এতটাই তৎপর হয়ে উঠল কেন? ওই গৃহবধূর অভিযোগ, নিজের নামে কেন তিনি অসম্মানজনক অভিযোগ আনবেন? একটা দুর্ঘটনা ঘটলে অপহরণের চেষ্টার কথা বলবেন? পুলিশের এতটা তাই না কেন? এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্তে আসাই বা কেন?

যদিও আজ আদালতে পুলিশ জেকে সিআইডি পেশ করেছে তার মধ্যে রয়েছে গোপাল বাবুর মৃত্যুকালীন জবান বন্দি। আদালত সূত্রে খবর তেমনটাই। সেই জবানবন্দিতে গোপালবাবু বলেছেন, “ আমার শালির মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য আমি আমার পরিবারের লোকজন সমেত গোবিন্দপুর পূর্বাঞ্চল স্কুলের মাঠে গিয়েছিলাম। খাওয়া-দাওয়া সেরে দক্ষিণমুখী বাড়ি ফিরছিলাম। রাত 11 টা 50 থেকে 55 নাগাদ হঠাৎ আমাদের থেকে বিপরীতগামী সাদা রঙের অ্যাম্বুলেন্স অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আমাকে হঠাৎ করে ধাক্কা মেরে কিছুদূর টেনে হিঁচড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরফলে আমার ডান পা সম্ভবত ভেঙে যায়। আমার সারা শরীরে প্রচন্ড চোট-আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে আমার সঙ্গে থাকা আত্মীয়রা আমায় এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য এবং আমি চিকিৎসাধীন। আমি ওই সাদা অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার এর বিরুদ্ধে করা আইনি পদক্ষেপ চাই।"


Conclusion:গোপাল বাবুর স্টেটমেন্টের কাগজ বলছে, সেটি রেকর্ড করেছেন সাব-ইন্সপেক্টর রাজীব রায়। সেই সময় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন চিকিৎসক ডাঃ অনির্বাণ দাস। সঙ্গে রয়েছে গোপালবাবুর হাতের ছাপ। পুলিশের প্রশ্ন যদি তিনি তার পুত্রবধুকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন, তবে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে সেটা তিনি বললেন না কেন? তবেকি পুত্রবধূ কিছুটা এগিয়ে থাকায় অন্ধকারে হাত ধরে টানাটানি বিষয়টি দেখতে পাননি গোপালবাবু? গৃহবধু চিত্কার চেঁচামেচি করা ভয় পেয়ে পালাতে গিয়ে দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে ওই অ্যাম্বুলেন্স? তদন্তকারীদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্নগুলো। অন্যদিকে, পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে কিছু পাওয়া যায়নি বলে দাবি করলেও, ওই গৃহবধূর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স থেকে কিছু করা হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য এখনো পর্যন্ত বাইরে আসেনি। সূত্র জানাচ্ছে, পুলিশের কাছে দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও, তার আগের ফুটেজ নাকি নেই। কিংবা থাকলেও সেটা সামনে আসেনি। সেই কারণেই প্রশ্নটা ক্রমশ জটিল হচ্ছে। তবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ হাত গুটিয়ে বসে নেই। তারা ওই গৃহবধূর জোরদার দাবির পর, অন্য সবকটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখার চেষ্টা করছে। গোয়েন্দা কর্তারা তদন্তকারীদের হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সের বিষয়টিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর। গোয়েন্দাদের ধারণা, তাতেই পাওয়া যাবে সূত্র। সমাধান হবে পুরো ঘটনার।

Last Updated : Feb 7, 2020, 6:27 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.