কলকাতা, 30 ডিসেম্বর: টক টু মেয়র (Talk to Mayor) অনুষ্ঠানে একের পর এক সমস্যার কথা শুনে সমাধানের পথ বলে দিচ্ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তবে শেষ অভিযোগেই কাটল তাল । আধিকারিকরা দেখে গেলেও পুকুর সংস্কার (Pond Renovation) হয়নি । অভিযোগ জানানোয় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের থেকে জুটেছে হুমকি, এমনটাই ছিল জনৈক নাগরিকের অভিযোগ । তা শুনে ক্ষুব্ধ মেয়রের মন্তব্য, "আসি যাই মাইনা পাই, এই মানসিকতায় চললে হবে না । হয় অফিসাররা থাকবেন, নয় আমি থাকব ।"
শুক্রবার শেষ ফোন (KMC News) করেন বেহালার 124 নম্বর ওয়ার্ড থেকে এক নাগরিক (Firhad Reprimands officials)। তিনি বলেন, "আমি আপনাকে নাম ঠিকানা না জানিয়ে কিছু কমপ্লেন করতে চাই । আপনাকে একটা সমস্যা নিয়ে আগেও দুবার জানানো হয়েছিল । 811 ডিএস প্রেমিসেস নম্বরে একটা জলাশয়ে আপনার লোক আসে, দেখে চলে যায় । আপনাকে দুবার জানানো হয়েছিল ৷ আমার কাছে ডকেট নম্বরও আছে । আপনার অফিসাররা দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করে নাকি দায়সারা কাজ করে । এটা জানতে চাইছিলাম । আরও একটা 847 নম্বর প্রেমিসেস জলাশয় সেখানে 80 লক্ষ টাকার কাজ হয়েছিল কর্পোরেশনের নেতৃত্বে । আপনি জলে নামতে পারবেন না ৷ রাস্তার পার রয়েছে কিন্তু ফেটে গিয়েছে । পিকে দুয়া সাহেবকে আপনি পাঠিয়েছিলেন চার মাস আগে । তিনি বলেছিলেন, আমরা আলোচনা করে দেখব ৷ এটা কীভাবে রেকটিফাই করা যায় । স্যার কিছুই জানতে পারলাম না ।"
মেয়র শুনে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন । আধিকারিকরা বলেন, অভিযোগকারী ঠিকই বলেছেন । এর পরেই অভিযোগকারী দাবি করেন, "আপনার দলের নেতারা দলের কর্মীরা আমাকে হুমকি দিয়েছেন আধিকারিক পিকে দুয়া সাহেবেরর সামনেই । কেন মেয়রকে কমপ্লেন করেছো ? আমাদের কাউন্সিলরের বদনাম হচ্ছে ৷ আমি যেন কমপ্লেন না করি আপনার কাছে । আপনাদের তৃণমূল কর্মীরা বলেছে ।"
এমন দাবিতে অস্বস্তিতে পরেন মেয়র । বলেন, "যে কেউ কমপ্লেন করতে পারেন আমার কাছে । সেই জন্যেই আমরা এই প্রোগ্রামটা করছি ।" পালটা ওই নাগরিক ফের দাবি করেন, "আপনাদের দলের কর্মী আমাকে হুমকি দিচ্ছেন । জিজ্ঞাসা করুন দশটা ছেলে আমাকে কী গালাগালি দিয়েছে ।"
এর পর মেয়র কাউন্সিলরের পাশে দাঁড়ান । বলেন, "এগুলো কাউন্সিলরের কাজ নয় । ওসব বেকার হুমকি যে দেবেন তাঁর নামে থানায় ডায়েরি করবেন । গালাগালি দেবে কেন পুকুর পরিষ্কার করা নিয়ে ।"
আরও পড়ুন: বাড়ি মেরামতেও কাউন্সিলরকে জানাতে হয়, নাগরিক অভিযোগ 'টক টু মেয়র' অনুষ্ঠানে
আধিকারিককে মেয়র জিজ্ঞাসা করেন, কন্ট্রাক্টর কি ব্ল্যাকলিস্টেড হয়েছেন ? যে পাইলিং হয়েছে, তা যখন ঠিক মতো হয়নি, পাড় বসে যাচ্ছে, তখন কন্ট্রাক্টরকে কি ব্ল্যাকলিস্টেড করা হয়েছে ? আপনি কি পাইলিং করলেন যে মাটি বসে গেল । তাহলে তো আপনার কন্ট্রাক্টরকে ব্ল্যাকলিস্টেড করবেন । নয়তো শোকজ দেবেন তো । সরকারের টাকা । সরকারি টাকা নিয়ে তো খেলা করতে পারি না । জনগণের টাকা । আপনার বা আমার রিলেটিভ নয় । রিলেটিভ হলেও যায় আসে না । কাজ ঠিকমতো না হলে তো ওই লোকটাকে শায়েস্তা করতে হবে । যে লোকটা টাকা নিয়ে নয় ছয় করে, তাকে তো শায়েস্তা করতে হবে । ফার্স্ট যে কাজটা করেছে তাঁকে আগে শোকজ করুন । করে তাঁকে ব্ল্যাকলিস্টেড করুন । না হলে তাঁকে রিপেয়ার করার চান্স দিন । রিপেয়ার করে দাও, যে জায়গাটা বসে যাচ্ছে ।"
তখন ফোনের ওপারে থাকা অভিযোগকারী বলেন, "রাজীব দাস কাউন্সিলর আমাকে খুব ভালো চেনেন আমি এই কাজ করি বলে । কিন্তু আমার কোনও কথা বা আমরা যদি কিছু বলতে যাই তিনি তা শোনেন না । আমাকে বলেছে তুই কিছু করবি না । পুকুর নিয়ে কোনও অভিযোগ করা যাবে না ।" এরপর মেয়র বলেন, "আমি রাজীবের সঙ্গে কথা বলে নিচ্ছি । আমি নিজে যাব ইন্সপেকশনে ।"