কলকাতা, 16 মার্চ: রাজ্যে শিক্ষা এবং চাকরি দুর্নীতি নিয়ে যে একের পর এক তথ্য সামনে এসেছে এই ঘটনাক্রমকে বিষয় করে শিয়ালদা স্টেশন চত্বরে একটি অভিনব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল বঙ্গ বিজেপির উত্তর কলকাতা শাখার। যোগ্য ও মেধাযুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে রাজ্যের শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের চাকরি চুরির প্রতিবাদে, শিয়ালদা স্টেশনে এই 'চলমান প্রদর্শনী' করা হয়েছিল। সেখানেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনকে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari Slams Firhad Hakim and Debashis Sen) ৷
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও আজ এই অনুষ্ঠানে বিজেপির 15 জন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে ছিলেন 50 নম্বর ওয়ার্ডের পৌরপিতা তথা বিজেপি নেতা সজল ঘোষ, উত্তর কলকাতার বিজেপির সভাপতি তমগ্ন ঘোষও। আলিপুর মিউজিয়াম নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "হাইকোর্ট এই মিউজিয়াম করতে একটা অংশের জমি রাজ্য সরকারকে ধার দেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছিল ৷ সেই জমি একটি বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তা নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়েছে যে আলিপুর কারেকশনাল হোম একটি হেরিটেজ সাইট। অথচ এর আগে আদালতে সরকারি পক্ষের আইনজীবী বলেছিলেন যে এই জমিতে একটি জাদুঘর করা হবে। তাই রাজ্য সরকার আদালতের অবমাননা করেছে।"
আরও পড়ুন: চাঁদের কলঙ্ক থাকতে পারে মমতার কোনও দাগ নেই, দুর্নীতি প্রসঙ্গে বললেন ফিরহাদ
তিনি আরও বলেন, "সেই জাদুঘর করার পরে বাকি জমি 418 টাকায় ডায়মন্ড সিটির মালিককে দেওয়া হয়েছে। এতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 1 হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এই বিষয়টি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আমি জানিয়েছি উনি দ্রুতই এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করবে বলে জানিয়েছেন। রাজ্যপাল যদি কিছু করেন তো খুবই ভালো, নয়তো আমি চতুর্থ সপ্তাহে নিজেই এই বিষয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হব। কারণ রাজস্বের মাত্র 10 শতাংশ সরকারের কোষাগারে ঢুকছে বাকি 90 শতাংশ যে সাইফন হয়ে যাচ্ছে এই বিষয়টা নিয়ে আমি ইতিমধ্যেই টুইট করেছি। কীভাবে টাকা সাইফন হয়ে তৃণমূলের কাছে গিয়েছে এবং তৃণমূল যে ইলেক্টোরাল বন্ড কিনেছে সেখানেও দুর্নীতি হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম থেকে দেবাশিস সেন সবাই এই গেরোতে আটকাবে। এটা মাদার ডেয়ারির মতো ফসকে যাবে না।"
আগামিকাল রাজ্যে অখিলেশ যাদব আসছেন, মনে করা হচ্ছে যে তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও একটি বৈঠক হতে পারে এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "এতে কোনও লাভ হবে না 2019-এ আমি তৃণমূলে ছিলাম। ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার ডাক দিয়ে ব্রিগেডে বিশাল মিটিং করা হয়েছিল। তারপরে অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। দেশের দশটি জায়গায় তারপর দশ বড় নির্বাচন হয়েছে। তাতে কিন্তু চারিদিকে বিজেপির জয়জয়কারী শোনা গিয়েছে। তাই মিটিং করে কোনও লাভ হবে না। তাছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত যিনি ধরবেন তাকেই জেলে যেতে হবে।"
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম দিবস ! অধিকারী পাড়ায় শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শুভেন্দুর
তিনি আরও বলেন, "তদন্ত করতে করতে নিচের দিকে নামছে কেন্দ্রেই এজেন্সি কিন্তু আমি চাই তদন্ত করতে করতে উপর দিকে উঠুন। একেবারে মাথাকে গিয়ে ধরুন। কারণ এই গোটা দুর্নীতির মাথায় রয়েছেন তিনটি। এই গোড়া দুর্নীতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে উপরের দিকে উঠতে হবে। সারদার টাকা কবে মানুষ পাবে সেটা মানুষ জানতে চায়। অন্যান্য দুর্নীতির উত্তরও চান বাংলার মানুষ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।"