কলকাতা, 10 মার্চ: রাজ্যের মন্ত্রীকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে (Suvendu Adhikari) । অভিযোগ ওঠে শুক্রবার বিধানসভায় পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট নিয়ে বক্তৃতার সময় শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে (Bengal Minister Partha Bhowmick) এক মাসের মধ্যে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন । বিষয়টিকে মন্ত্রী অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Assembly Speaker Biman Banerjee) নজরেও এনেছেন ।
মন্ত্রীর দাবি, বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্যের পর তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন । এরপরই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই । বিরোধী দলনেতা এমন কথা বিধানসভার ভিতরে বলতে পারেন না । বিধানসভায় সেই কথা বলা যায় না, যে কথা রাজপথে বলা যায় । তিনি বিষয়টিকে রেকর্ডে রাখার অনুমতি দিয়েছেন । একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রী চাইলে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে প্রিভিলেজও আনতে পারেন ।
এদিন যাবতীয় ঘটনার সূত্রপাত, তৃণমূলের (Trinamool Congress) বিধায়ক সওকত মোল্লার টিপ্পনীর পর । শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্য রাখার সময় তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বিজেপির (BJP) বিধায়ক সংখ্যা কত !’’ জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘যে বিধায়করা এই মুহূর্তে বিজেপির ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন, তাঁরা কেউ হলপ করে বলতে পারবেন এই মুহূর্তে তাঁরা তৃণমূলে আছেন । বিধানসভায় তাঁরা যেমন বলেন এই মুহূর্তে তারা বিজেপিতেই আছেন, অধ্যক্ষও বলেন তাঁরা বিজেপির ।’’
এরপর সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আর বক্তব্য জারি রাখতে পারেননি বিরোধী দলনেতা । তিনি বসে যান ৷ এরপর বিধানসভার ভিতরেই মাইক ছাড়া সেচ মন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতাকে পরস্পরের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে দেখা যায় । কিন্তু তারা কী বলছেন যেহেতু মাইক বন্ধ ছিল, তাই তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়নি ।
পরে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষের বাইরে এসে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক অভিযোগ করেন, বিধানসভায় দাঁড়িয়েই তাঁকে হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা । তিনি গোটা বিষয়টি অধ্যক্ষের নজরে এনেছেন । অধ্যক্ষের ওপর ভরসা রাখছেন তিনি । একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, যদি এভাবে বিধানসভার বাইরে আক্রমণ করতেন বিরোধী দলনেতা, তাহলে আদালতের দ্বারস্থ হতেন তিনি ।
যদিও বিধানসভার বাইরে এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি বিরোধী দলনেতা । তাঁর বক্তব্য, তিনি যা বলেছেন সবটাই রেকর্ডে রয়েছে । এর বাইরে তিনি কিছু মন্তব্য করতে চান না । এই অবস্থায় এটা দেখার বিরোধী দলনেতার এই হুমকি বিতর্কের জল শেষ পর্যন্ত কতদূর গড়ায় ! শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনও প্রিভিলেজ নিয়ে আসে কি না শাসক পক্ষ ।
এদিকে এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে অস্ত্র করেছে তৃণমূল । এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি যে বিজেপির কথায় পরিচালিত হচ্ছে, তা রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কথায় আরও একবার প্রমাণিত হল । মুখ্যমন্ত্রী-সহ দেশের 8 বিরোধী দলের নেতৃত্ব সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে যে চিঠি দিয়েছেন, সেই অভিযোগ অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণ করলেন বিরোধী দলনেতা । এদিন তৃণমূলের মুখপাত্র বিধায়ক তাপস রায়ের হুঁশিয়ারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ছাড়া তাঁদের সব বিধায়ককেও যদি বিজেপি জেলে ঢুকিয়ে দেয়, তাহলেও মমতা একাই যথেষ্ট । তিনিই সব সামলে নিতে পারবেন ।
আরও পড়ুন: মমতার জন্য সারদায় টাকা হারিয়েছেন বাংলার 3 কোটি মানুষ, তোপ শুভেন্দুর