কলকাতা, 28 ডিসেম্বর: "রাজনীতির নামে জোকার বৃত্তি কী হারে বেড়ে গিয়েছে"! প্রজাপতি সিনেমা বিতর্কে (Prajapati Movie Controversy) ঠিক এই ভাষাতেই নাম না-করে কুণাল ঘোষকে 'জোকার' বলে কটাক্ষ করলেন সিপিএম'এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) ।
টলিউডের সুপারস্টার তথা তৃণমূল সাংসদ দেব (Dev) ও বলিউডের দাদা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) অভিনীত এবং অভিজিৎ সেনের পরিচালনায় মুক্তি পেয়েছে 'প্রজাপতি' ৷ নন্দনে এই সিনেমা স্থান পায়নি। আর তা কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গ রাজনীতিতে উত্তাপ বেড়েই চলেছে। নন্দনে স্লট না-পাওয়ায় খোদ সোশাল মিডিয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং অভিনেতা দেব । বিজেপির দাবি, মিঠুন চক্রবর্তী অভিনয় করেছেন বলেই নন্দনে সিনেমাটি মুক্তি পায়নি । কারণ রাজ্য-রাজনীতির বর্তমান সমীকরণে মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপির অন্যতম সেলেব মুখ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক প্রসঙ্গে সুর চড়িয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকে সামনে রেখে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে প্রচারের পরিকল্পনাও সেরে রেখেছে বিজেপি। এই বিতর্কে নয়ামাত্রা যোগ করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন মিঠুন চক্রবর্তীর অভিনয়ের জন্যই 'প্রজাপতি' সিনেমাটি ফ্লপ।
আরও পড়ুন: 'নন্দন এখন তৃণমূলের সিন্ডিকেট', কুণালকে জবাব দিয়ে মিঠুনের পাশে রুদ্রনীল
কুণালের কথায়,"আমি তো শুনেছি, দেব বেচারা মুখে বলতে পারছে না! ওর তো মিঠুনদাকে নেওয়াটা একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। দেব বেচারা একটা সুন্দর ছবি করতে গেল, কিন্তু মিঠুনদার অভিনয় ফ্লপ! ওখানে যদি পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতেন তাহলে ফাটাফাটি হত। ওই জায়গাটা একটু অসুবিধা হচ্ছে। ওকেও একটু বলতে হচ্ছে। মিঠুনদাকে 10 গোল দিয়ে দিয়েছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবিটা টেনে নেওয়ার জন্য হয়তো কোনও বিতর্ক তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি।"তাঁর এই মন্তব্যের পর ইটিভি ভারতের এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন বিজেপির কালচারাল সেল-এর আহ্বায়ক তথা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। শাসকদলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, নন্দন এখন তৃণমূলের সিন্ডিকেট হয়ে গিয়েছে ৷
কুণালের এই মন্তব্যের পরেই বুধবার কড়া সমালোচনা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এদিন তিনি বলেন, "নন্দনে প্রজাপতি সিনেমাটি দেখানো গেল না। যে সিনেমা মিঠুন চক্রবর্তী এবং দেব অভিনীত। যারা মনে করেছিলেন অনিক দত্ত পরিচালিত সিনেমা অপরাজিত নন্দনে দেখানো হয়নি তো কী হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের উপরে তৈরি সিনেমা নন্দনে না-দেখানোর মাধ্যমে এক প্রকার স্যাংশন করে দেওয়া হয় যে কারও সিনেমা নন্দনে দেখানো যাবে না। এটা নিয়ে তৃণমূল কী বলবে ?"
আরও পড়ুন: নন্দনে ব্রাত্য হলেও ভারতজুড়ে উড়বে প্রজাপতি, ঘোষণা দেবের
এরপর তিনি আরও বলেন, "সত্যজিৎ রায় নন্দনের উদ্বোধন করেছিলেন, পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। ওটা একটা বামপন্থার সংস্কৃতি ছিল। আর এখন যা চলছে রাজনীতিতে তা হল, যে জেল খেটে এসেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী বলেছিলেন সে সিনেমাতে মিঠুন অথবা দেব কার অভিনয় কীরকম এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই ঘটনায় বাংলার সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবেন যে রাজনীতির নামে বাংলায় জোকার বৃত্তি কীরকম বেড়ে গিয়েছে।"