কলকাতা, 29 নভেম্বর: সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ‘বদমাইশ’ বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম । আর এই মন্তব্যের প্রতিবাদেই আবার ফুঁসে উঠলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Aliah University) পড়ুয়ারা ।
সম্প্রতি নবান্নে একটি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জমি আরজি কর হাসপাতালকে দেওয়ার জন্য বৈঠকে করেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ৷ সেখানে তিনি মন্তব্য করেন, "ওরা বদমাইশ ৷ ওদের সঙ্গে কথা বলে হবে না ৷ করে নিতে হবে ৷" তাই আজ ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল ক্যাম্পাসে ।
পাশাপাশি তাঁরা আরও দাবি রাখেন যে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল-সহ খেলার মাঠের সমস্যা অবিলম্বে মেটানো এবং জমিতে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে ।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাজিদুর রহমান বলেন, "আমাদের হাতে যে ভিডিয়োটি এসে পৌঁছেছে তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি আরজি কর হাসপাতালকে দেওয়ার কথা আলোচনা করার সময় পাশ থেকে একজন এহেন মন্তব্য করেন । যদিও কে এই কথাটি বলছেন, সেই ব্যক্তিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি না ৷ তবে গলা শুনে আমাদের অনুমান যে এই কথাগুলি বলছেন মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীকার হরণের সামিল বলে আমরা মনে করি । এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই । বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজন ব্যতিরেকে জমি অন্য প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তরের এই খবরে হতবাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী শুভানুধ্যায়ীদের সকলে । দায়িত্বশীল ছাত্র সমাজের অংশ হিসেবে আমরা মনে করি, ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, প্রাক্তনীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অন্য প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করার কোনও সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলে, তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে । ন্যাক মূল্যায়ন পেতে উপযুক্ত পরিকাঠামো-সহ শিক্ষার সামগ্রিক মান উন্নয়নে অবিলম্বে উপযুক্ত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ।"
অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস সংলগ্ন জমিতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য হস্টেল, খেলার মাঠ, দূরদূরান্ত থেকে আসা কর্মচারীদের জন্য স্টাফ কোয়ার্টারের প্রস্তাবিত কাজ এখনও শুরু হয়নি । নতুন ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা মেটাতে নতুন 100 ও 150 আসনের হস্টেল ভাড়া নেওয়ার কথা আগেই ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে বারবার জানানো হলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি । ছাত্রছাত্রীদের স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর বা নতুন কোর্সে ভর্তি হলে বিগত বছরগুলোতে কন্টিনিউয়েশন দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত থাকলেও, এবছর পূর্ব প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের কন্টিনিউয়েশন না দিয়ে হস্টেল ছাড়তে বলা হয়েছে । যা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যায় ফেলেছে । বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই উদাসীনতার ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিব ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন ।
সাজিদুর রহমান জানিয়েছেন যে এই সব সমস্যার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি হস্তান্তরের খবর পড়ুয়াদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে ।
আরও পড়ুন: অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে অনশনে আলিয়ার পড়ুয়াদের একাংশ, পার্কসার্কাস ক্যাম্পাসে উপাচার্য ঘেরাও