কলকাতা, 18 জুন: হেলিকপ্টার নিয়েও রাজ্য-রাজভবন সংঘাত । এর আগে উপাচার্য থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ থেকে এখন নির্বাচনী হিংসা নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘাত দেখা দিয়েছে । সেই তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে হেলিকপ্টার বিতর্ক ৷ এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ।
রাজভবন সূত্রের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় কম সময়ে দ্রুত পৌঁছনোর মাধ্যম হল হেলিকপ্টার ৷ সেই জন্য কপ্টার চেয়ে ইতিমধ্যে রাজভবনের তরফে 4 বার রিকুইজিশন পাঠানো হয় পরিবহণ দফতরকে । কিন্তু তারপরেও হেলিকপ্টার পাওয়া যায়নি । কেন পরিবহণ দফতর হেলিকপ্টার দিতে পারছে না বা দেবে না এ বিষয়ে কোনও সদুত্তর বা জবাব রাজভবনে পৌঁছয়নি ।
বাধ্য হয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে সময় বেশি লাগলেও গাড়ি করেই যেতে হচ্ছে রাজ্যপালকে । কিন্তু, 100 বা 150 কিলোমিটারের বেশি গাড়ি করে যাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছে রাজভবন। কারণ অতটা পথ গিয়ে আবার কাজ মিটিয়ে একই দিনে রাজভবনে ফিরে আসাটা বেশ কষ্টকর। আর এখানেই কপ্টার প্রয়োজন। তবে তা এখনও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ভোটের হিংসার জের, জনসাধারণের অভিযোগ শুনতে রাজভবনে খোলা হল 'শান্তি কক্ষ'
জানা গিয়েছে, আগামী 24 এবং 25 জুন হেলিকপ্টার প্রয়োজন লিখে রাজভবনের তরফে আবারও একটি রিকুইজিশন পাঠানো হয়েছে পরিবহণ দফতরকে । ওই দিন আদৌ হেলিকপ্টার পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে রাজভবন । শনিবার দক্ষিণ 24 পরগনা ক্যানিং গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস । প্রাক নির্বাচনী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন তিনি । স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক সারেন রাজ্যপাল । আজ 18 জুন উত্তরবঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল সিভি আনন্দ বোসের । সূত্রের খবর, আদৌ যাবেন কি না সে বিষয়ে সকাল এগারোটা পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি রাজভবন ।
যদিও 17 এবং 18 জুনের কর্মসূচির জন্য রাজ্যপালের হেলিকপ্টার প্রয়োজন ৷ সঠিক সময়ে তা ব্যবস্থা করার আর্জি নিয়ে আগেই রাজভবন থেকে রিকুইজিশন পৌঁছয় রাজ্য পরিবহণ দফতরের সচিবের ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে । রাজভবন সূত্রের দাবি, শনিবার রাত পর্যন্ত তার কোনও জবাব পাওয়া যায়নি । কেন পরিবহণ দফতর রাজভবনকে হেলিকপ্টার দিচ্ছেন না, সে বিষয়ে কোনো সঠিক উত্তরও নেই তাদের কাছে । কারণ হেলিকপ্টার কাকে দেওয়া হবে এবং কাকে দেওয়া হবে না, তা পরিবহণ দফতর এবং রাজ্য সরকারই ঠিক করে ।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ-শেক্সপিয়র আওড়ে ক্যানিংয়ে গিয়ে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি রাজ্যপালের
এর জেরে ফের আরও একবার রাজ্য ও রাজভবনের সংঘাত তৈরি হয়েছে বলেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি । কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলেই হেলিকপ্টার পান । অথচ রাজভবন বা রাজ্যপাল চাইলে হেলিকপ্টার কেন পাওয়া যাচ্ছে না, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । তবে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যপাল যেই হেলিকপ্টার ব্যবহার করুক তার খরচ এবং যাতায়াতের সমস্ত দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসন ও সরকারকেই বহন করতে হয় । এমতাবস্থায় নানা ইসুতে রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে যে সংঘাত হয়েছে সেই তালিকায় এবার হেলিকপ্টারও ঢুকে পড়ল ।