কলকাতা, 7 জুলাই: সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না ৷ এখন এই আপ্তবাক্যই সম্ভবত আওড়ে যাচ্ছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তারা ৷ একদিকে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ ৷ অন্যদিকে, ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগেও রাজ্যে এসে পৌঁছল না প্রায় 200 কোম্পানিরও বেশি বাহিনী ৷ যার জেরে সেই সশস্ত্র রাজ্য পুলিশ বসিয়েই ভোট করানোর পক্ষে ঝুঁকছে কমিশনও ৷ কিন্তু তাতে আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধাচারণ হবে না তো, সেই চিন্তাতেই রয়েছে কমিশন ৷
বাকি ছিল 485 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ শুক্রবার তাও ধীরে ধীরে রাজ্য়ে আসতে শুরু করেছে ৷ কিন্তু এখনও 222 কোম্পানি বাহিনী এসে পৌঁছয়নি বলেই জানা যাচ্ছে ৷ এর মধ্যেই অবশ্য পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা ভেবে রেখেছে কমিশন ৷ কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী একান্তই নির্দিষ্ট সংখ্যায় না-এলে, সেক্ষেত্রে বুথে একজন করে সশস্ত্র রাজ্য পুলিশের কর্মী মোতায়েন থাকবে ৷ আর কমিশনের এই প্ল্যান-বি নিয়েই উঠতে শুরু করেছে বিস্তর প্রশ্ন ৷
এদিন বিকেলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে শেষ 485 কোম্পানির মধ্যে 263 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ধাপে ধাপে এসে পৌঁছেছে রাজ্যে। রাতের মধ্যেই চলে আসবে বাকি বাহিনীও। তবে 485-এর মধ্যে এখনও রাজ্যে আসা বাকি 222 কোম্পানি বাহিনীর। তাই এখন প্রশ্ন একটাই, যে আগামিকাল অর্থাৎ শনিবার ভোটের দিন ঠিক সকল সাতটার সময় যখন নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে, সেই সময়ের মধ্যে এসে পৌঁছতে পারবে কি বাকি বাহিনী? যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে সময়ের আগেই এসে পৌঁছে যাবে বাহিনী। অর্থাৎ রাতের মধ্যেই কম বেশি 600 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে যাওয়ার কথা। কমিশন সূত্রে খবর, যেমন যেমন বাহিনী আসছে তেমন মোতায়ন করে দেওয়া হচ্ছে। আর সেই দ্বায়িত্ব পালন করছেন বিএসএফ-এর আইজি এসসি বুদাকোটি।
অন্যদিকে ভোটে রাজ্য পুলিশ কীভাবে কাজ করবে, সেই মর্মে গাইডলাইনও প্রকাশ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রতি বুথে থাকবে একজন করে সশস্ত্র পুলিশ কর্মী ৷ প্রত্যেক সেক্টরে একজন অফিসার থাকবেন। প্রত্যেক আরটি মোবাইলে থাকবে একজন ইন্সপেক্টর এবং একজন সশস্ত্র কনস্টেবল। তেমনই প্রত্যেক এইচআরএফএস-এ একজন করে ইন্সপেক্টর, দু'জন সশস্ত্র কনস্টেবল, একজন গ্যাস গান কনস্টেবল, একজন লাঠিধারি কনস্টেবল থাকবে। অন্যদিকে, স্ট্রংরুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে দু'জন অফিসার, আটজন সশস্ত্র কনস্টেবল।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে নিল কমিশন
এবার 60 হাজার 593 বুথ থাকছে রাজ্যে ৷ তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, রাতের মধ্য়ে বা শনিবার ভোরেও বাহিনী এসে পৌঁছলে হিসাব অনুযায়ী সব বুথে রাখা যাবে না কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। তবে সে ক্ষেত্রে, সেই সব বুথে রাজ্য পুলিশের নূন্যতম একজন সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সেক্ষেত্রেও আগে প্রধান্য দিতে হবে স্পর্শকাতর বুথগুলিকে। তারপর বাকি বুথে মোতায়ন করা যেতে পারে বাহিনী।