ETV Bharat / state

কীর্তন, ভায়োলিন, হাততালিতে রোগীরাই খুঁজে নিচ্ছেন 'ওষুধ' - musical instruments

ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল নয় । SSKM-এর রোগীরা এখন খোল-করতাল আর ভয়োলিনেই খুঁজে পাচ্ছে নিজেদের সুস্থ হওয়ার ওষুধ ।

রোগীরা মেতে সঙ্গীতে
author img

By

Published : Jun 8, 2019, 4:26 PM IST

Updated : Jun 8, 2019, 4:46 PM IST


কলকাতা, 8 জুন : কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ খোল-করতাল। কেউ বা ঘুঙুর বাঁধা পায়ে তাল দিচ্ছেন, কেউ মত্ত ভায়োলিনে। অনেকে আবার কীর্তন গাইছেন । হাতে তালি দিয়ে খুঁজে নিচ্ছেন সুর। এভাবে রোগীরা নিজেরাই মিউজিক থেরাপিতে অংশ নিচ্ছেন । নিজেরাই 'ওষুধ' খুঁজে নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন। SSKM হাসপাতাল, দেশের মধ্যে সরকারি একমাত্র এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি চালু হয়েছে এই পরিষেবা।

এই ধরনের মিউজিক থেরাপিকে বলা হয় অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি, যেখানে রোগীরা নিজেরাই কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে অথবা গান করে অংশ নেন । গত রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর দিন থেকে SSKM -র ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে এই পরিষেবা চালু হয়েছে ।‌ এই ধরনের পরিষেবা কেন চালু করা হল? এই বিভাগের অধ্যাপক রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "মাস চারেক আগের ঘটনা। আমাদের এখানে একজন রোগী দেড় মাস কোমায় ছিলেন। এই অবস্থায় ওই রোগীর চোখে হালকা আলো ফেলে মিউজিক শোনানো হয়েছিল। স্কিনে বিভিন্ন ধরনের স্টিমুলেশন দেওয়া হয়েছিল। ধীরে ধীরে রোগী চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করেছিলেন। এর পরে নাটকীয় উন্নতি হয়। এটা দেখে অন্য কয়েকজন রোগীর উপর মিউজিক থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু, এগুলি সব ছিল প্যাসিভ মিউজিক থেরাপি। ইয়ার ফোনের মাধ্যমে মিউজিক শোনানো হয়েছিল।"

বিষয়টি নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, পশ্চিমের দেশগুলিতে এসব নিয়ে কাজ হচ্ছে। সেখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেন তাঁরা। রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "আমরা যেটা করতে পারছিলাম না সেটা হল অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি। রোগীরা নিজেরা যদি কোনও ইন্সট্রুমেন্ট বাজান অথবা গান করেন, তাহলে অবস্থার ভালো উন্নতি হতে পারে।" এর জন্য চেষ্টা চলতে থাকে। যার জেরে শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে এই অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি। তিনি আরও বলেন, "এটা পরীক্ষামূলকভাবে এখন শুরু হয়েছে। আপাতত সপ্তাহে এক দিন চলছে। রোগীদের একসঙ্গে নিয়ে আসছি। বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে একসঙ্গে বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন রোগীরা। রোগীরা যাতে ব্যবহার করতে পারেন, তার জন্য বাদ্যযন্ত্রগুলি নানানরকম ভাবে তৈরি করা হয়েছে। কোনও কোনও রোগীর মিউজিকাল ব্যাকগ্রাউন্ডও রয়েছে।"

তিনি বলেন, "একজন রোগী আছেন ভায়োলিন বাজাতে পারেন। প্রথম দিন অবাক হয়ে গেছিলাম কীভাবে এত সুন্দর ভায়োলিন তিনি বাজাচ্ছেন, তা দেখে। তাঁর হাতের শক্তি খুব বেশি নেই। কিন্তু যেভাবে ভায়োলিন বাজাতে শুরু করলেন, ধীরে ধীরে তিনি ভায়োলিনের সুর তুলে দিলেন। একজন আর্থারাইটিসের রোগী। শয্যাশায়ী। কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছিল না‌। এই রোগী ডিপ্রেশনে ছিলেন। ওষুধ খাওয়ানো হলেও খুব বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "প্রথমে তিনি কোনও উৎসাহ দেখালেন না। কিন্তু তাঁকে যখন অনুরোধ করে বসানো হল, দেখা গেল ধীরে ধীরে তিনি মিউজিকের মধ্যে ঢুকে গেলেন। একটা সেশনের পরেই তাঁর উন্নতি দেখা গেল। এর পরে ধীরে ধীরে এই রোগী হাঁটতে পারলেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেলেন।"

এমন অনেক রোগীর ক্ষেত্রে তাঁরা উপকার পেতে শুরু করেছেন। একথা জানিয়ে রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "এখনও আমরা এই বিষয়টি শিখছি যে কোন ধরনের মিউজিক, কোন ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করতে পারে । ভবিষ্যতে হয়তো এগুলিকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করব যে কোনও ধরনের মিউজিক, কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।" এই বিভাগে যত রোগী আসছেন সবার উপরে অবশ্য এখনও এই অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপির প্রয়োগ শুরু হয়নি। প্রধানত এই বিভাগের ইনডোর অর্থাৎ অন্তর্বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হচ্ছে।

চিকিৎসক বলেন, "ইনডোরের দুই ধরনের রোগীদের উপর এই মিউজিক থেরাপি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এক ধরনের ব্রেন, স্পাইনাল কর্ডের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে। কারণ, ব্রেনের অনেক জায়গা যেগুলি সুপ্ত অবস্থায় থাকে, যদি বিভিন্নভাবে সেগুলিকে জাগানো যায়, তাহলে নার্ভগুলি নতুন করে কাজ করতে পারে। অন্যটি হচ্ছে পেইন। অনেকদিন ধরে যারা ব্যথা-যন্ত্রণায় কষ্ট পান তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় তাঁরা অবসাদে ভোগেন। ‌এই সমস্যায় রোগীর ক্ষেত্রে ওষুধ যাই দেওয়া হোক না কেন, অস্ত্রোপচার বা থেরাপি যাই করা হোক না কেন পুরোপুরি রেজাল্ট পাব না যদি না তাঁদের মানসিক অবস্থা ফিরে পাই। এসব ক্ষেত্রেও মিউজিক থেরাপির একটি ভূমিকা রয়েছে। এইসব রোগীকে নিয়ে আমরা কাজ করতে শুরু করেছি।" এমন কোনও রোগী কি আছেন, যিনি গান গাইতে পারেন না অথবা কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানেন না? এ ক্ষেত্রে কী করা হয়? রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "মিউজিক একটি রিদম। আমার মনে হয় এমন কোনও মানুষ নেই যাঁর মধ্যে রিদম নেই। সে মিউজিক তিনি কেমন ভাবে নিয়ে আসবেন, সেটা তিনি হাতে তালি দিয়েও নিয়ে আনতে পারেন। তাঁর ভিতর থেকে এই মিউজিকটা নিয়ে আসাটাই একজন এক্সপার্টের কাজ।"

চিকিৎসকরা দেখছেন, কোন রোগী কোন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন। কেউ হয়তো খোল-করতাল বাজাতে পারবেন। প্রথমে হয়তো তিনি খুব বেশি সুরে নাও বাজাতে পারেন। তাতেই চিকিৎসকরা উৎসাহ দিচ্ছেন । রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "আমরা অবাক হয়ে গেলাম, ভেবেছিলাম হয়তো মিউজিক জানেন না কোনও রোগী । এখন ভাবছি প্রত্যেকেই মিউজিক জানেন। তিনি কোন ধরনের যন্ত্র বাজাবেন, কীভাবে বাজাবেন, এটা তাঁকে শেখানোর ব্যাপার রয়েছে। কোনও রোগীর পায়ের দুর্বলতা রয়েছে। তাঁর পায়ে ঘুঙুর বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাতেই তিনি তালে তাল দিচ্ছেন। এটাও একটি মিউজিক।" দেশের অন্য কোনও সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের পরিষেবা চালু আছে? তিনি বলেন, "সরকারি কোনও স্থানে চালু রয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে বেসরকারিভাবে মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতাল শুরু করেছে বলে আমি জানি। অন্য আর কোথাও নিয়মিতভাবে হচ্ছে, এই বিষয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই।" আগামী দিনে কোন ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে? তিনি বলেন, "এই মিউজিক থেরাপি ব্যাপারটা ব্যবহার হচ্ছে, উন্নতি পাচ্ছে, কিন্তু এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যবহার করা যে, কতটা করা উচিত, কীভাবে করা উচিত, কোন ধরনের রোগে কোন ধরনের মিউজিক কাজে লাগতে পারে, এই তথ্যগুলিকে তুলে আনা প্রধান পরিকল্পনা। এই রিসার্চের কাজ ভবিষ্যতে করা আমাদের উদ্দেশ্য।"


কলকাতা, 8 জুন : কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ খোল-করতাল। কেউ বা ঘুঙুর বাঁধা পায়ে তাল দিচ্ছেন, কেউ মত্ত ভায়োলিনে। অনেকে আবার কীর্তন গাইছেন । হাতে তালি দিয়ে খুঁজে নিচ্ছেন সুর। এভাবে রোগীরা নিজেরাই মিউজিক থেরাপিতে অংশ নিচ্ছেন । নিজেরাই 'ওষুধ' খুঁজে নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন। SSKM হাসপাতাল, দেশের মধ্যে সরকারি একমাত্র এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি চালু হয়েছে এই পরিষেবা।

এই ধরনের মিউজিক থেরাপিকে বলা হয় অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি, যেখানে রোগীরা নিজেরাই কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে অথবা গান করে অংশ নেন । গত রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর দিন থেকে SSKM -র ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে এই পরিষেবা চালু হয়েছে ।‌ এই ধরনের পরিষেবা কেন চালু করা হল? এই বিভাগের অধ্যাপক রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "মাস চারেক আগের ঘটনা। আমাদের এখানে একজন রোগী দেড় মাস কোমায় ছিলেন। এই অবস্থায় ওই রোগীর চোখে হালকা আলো ফেলে মিউজিক শোনানো হয়েছিল। স্কিনে বিভিন্ন ধরনের স্টিমুলেশন দেওয়া হয়েছিল। ধীরে ধীরে রোগী চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করেছিলেন। এর পরে নাটকীয় উন্নতি হয়। এটা দেখে অন্য কয়েকজন রোগীর উপর মিউজিক থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু, এগুলি সব ছিল প্যাসিভ মিউজিক থেরাপি। ইয়ার ফোনের মাধ্যমে মিউজিক শোনানো হয়েছিল।"

বিষয়টি নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, পশ্চিমের দেশগুলিতে এসব নিয়ে কাজ হচ্ছে। সেখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেন তাঁরা। রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "আমরা যেটা করতে পারছিলাম না সেটা হল অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি। রোগীরা নিজেরা যদি কোনও ইন্সট্রুমেন্ট বাজান অথবা গান করেন, তাহলে অবস্থার ভালো উন্নতি হতে পারে।" এর জন্য চেষ্টা চলতে থাকে। যার জেরে শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে এই অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি। তিনি আরও বলেন, "এটা পরীক্ষামূলকভাবে এখন শুরু হয়েছে। আপাতত সপ্তাহে এক দিন চলছে। রোগীদের একসঙ্গে নিয়ে আসছি। বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে একসঙ্গে বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন রোগীরা। রোগীরা যাতে ব্যবহার করতে পারেন, তার জন্য বাদ্যযন্ত্রগুলি নানানরকম ভাবে তৈরি করা হয়েছে। কোনও কোনও রোগীর মিউজিকাল ব্যাকগ্রাউন্ডও রয়েছে।"

তিনি বলেন, "একজন রোগী আছেন ভায়োলিন বাজাতে পারেন। প্রথম দিন অবাক হয়ে গেছিলাম কীভাবে এত সুন্দর ভায়োলিন তিনি বাজাচ্ছেন, তা দেখে। তাঁর হাতের শক্তি খুব বেশি নেই। কিন্তু যেভাবে ভায়োলিন বাজাতে শুরু করলেন, ধীরে ধীরে তিনি ভায়োলিনের সুর তুলে দিলেন। একজন আর্থারাইটিসের রোগী। শয্যাশায়ী। কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছিল না‌। এই রোগী ডিপ্রেশনে ছিলেন। ওষুধ খাওয়ানো হলেও খুব বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "প্রথমে তিনি কোনও উৎসাহ দেখালেন না। কিন্তু তাঁকে যখন অনুরোধ করে বসানো হল, দেখা গেল ধীরে ধীরে তিনি মিউজিকের মধ্যে ঢুকে গেলেন। একটা সেশনের পরেই তাঁর উন্নতি দেখা গেল। এর পরে ধীরে ধীরে এই রোগী হাঁটতে পারলেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেলেন।"

এমন অনেক রোগীর ক্ষেত্রে তাঁরা উপকার পেতে শুরু করেছেন। একথা জানিয়ে রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "এখনও আমরা এই বিষয়টি শিখছি যে কোন ধরনের মিউজিক, কোন ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করতে পারে । ভবিষ্যতে হয়তো এগুলিকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করব যে কোনও ধরনের মিউজিক, কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।" এই বিভাগে যত রোগী আসছেন সবার উপরে অবশ্য এখনও এই অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপির প্রয়োগ শুরু হয়নি। প্রধানত এই বিভাগের ইনডোর অর্থাৎ অন্তর্বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হচ্ছে।

চিকিৎসক বলেন, "ইনডোরের দুই ধরনের রোগীদের উপর এই মিউজিক থেরাপি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এক ধরনের ব্রেন, স্পাইনাল কর্ডের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে। কারণ, ব্রেনের অনেক জায়গা যেগুলি সুপ্ত অবস্থায় থাকে, যদি বিভিন্নভাবে সেগুলিকে জাগানো যায়, তাহলে নার্ভগুলি নতুন করে কাজ করতে পারে। অন্যটি হচ্ছে পেইন। অনেকদিন ধরে যারা ব্যথা-যন্ত্রণায় কষ্ট পান তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় তাঁরা অবসাদে ভোগেন। ‌এই সমস্যায় রোগীর ক্ষেত্রে ওষুধ যাই দেওয়া হোক না কেন, অস্ত্রোপচার বা থেরাপি যাই করা হোক না কেন পুরোপুরি রেজাল্ট পাব না যদি না তাঁদের মানসিক অবস্থা ফিরে পাই। এসব ক্ষেত্রেও মিউজিক থেরাপির একটি ভূমিকা রয়েছে। এইসব রোগীকে নিয়ে আমরা কাজ করতে শুরু করেছি।" এমন কোনও রোগী কি আছেন, যিনি গান গাইতে পারেন না অথবা কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানেন না? এ ক্ষেত্রে কী করা হয়? রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "মিউজিক একটি রিদম। আমার মনে হয় এমন কোনও মানুষ নেই যাঁর মধ্যে রিদম নেই। সে মিউজিক তিনি কেমন ভাবে নিয়ে আসবেন, সেটা তিনি হাতে তালি দিয়েও নিয়ে আনতে পারেন। তাঁর ভিতর থেকে এই মিউজিকটা নিয়ে আসাটাই একজন এক্সপার্টের কাজ।"

চিকিৎসকরা দেখছেন, কোন রোগী কোন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন। কেউ হয়তো খোল-করতাল বাজাতে পারবেন। প্রথমে হয়তো তিনি খুব বেশি সুরে নাও বাজাতে পারেন। তাতেই চিকিৎসকরা উৎসাহ দিচ্ছেন । রাজেশ প্রামাণিক বলেন, "আমরা অবাক হয়ে গেলাম, ভেবেছিলাম হয়তো মিউজিক জানেন না কোনও রোগী । এখন ভাবছি প্রত্যেকেই মিউজিক জানেন। তিনি কোন ধরনের যন্ত্র বাজাবেন, কীভাবে বাজাবেন, এটা তাঁকে শেখানোর ব্যাপার রয়েছে। কোনও রোগীর পায়ের দুর্বলতা রয়েছে। তাঁর পায়ে ঘুঙুর বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাতেই তিনি তালে তাল দিচ্ছেন। এটাও একটি মিউজিক।" দেশের অন্য কোনও সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের পরিষেবা চালু আছে? তিনি বলেন, "সরকারি কোনও স্থানে চালু রয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে বেসরকারিভাবে মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতাল শুরু করেছে বলে আমি জানি। অন্য আর কোথাও নিয়মিতভাবে হচ্ছে, এই বিষয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই।" আগামী দিনে কোন ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে? তিনি বলেন, "এই মিউজিক থেরাপি ব্যাপারটা ব্যবহার হচ্ছে, উন্নতি পাচ্ছে, কিন্তু এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যবহার করা যে, কতটা করা উচিত, কীভাবে করা উচিত, কোন ধরনের রোগে কোন ধরনের মিউজিক কাজে লাগতে পারে, এই তথ্যগুলিকে তুলে আনা প্রধান পরিকল্পনা। এই রিসার্চের কাজ ভবিষ্যতে করা আমাদের উদ্দেশ্য।"

Last Updated : Jun 8, 2019, 4:46 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.