ETV Bharat / state

SSC Recruitment Scam : 'লড়াইটা কঠিন তবে হাল ছাড়িনি', আদালতের রায়ে আশার আলো বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক ইতিবাচক রায় আশার আলো দেখাচ্ছে এসএসসি ও এসএলএসটি মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরি বঞ্চিত আন্দোলনকারীদের (SSC Recruitment Scam) ।

SSC Recruitment Scam
এসএসসির পক্ষে রায় আশার আলো বিক্ষোভকারীদের
author img

By

Published : May 21, 2022, 10:59 PM IST

কলকাতা, 21 মে : কথায় আছে যার শেষ ভাল তার সব ভাল । সেই ভালর স্বাদ কিছুটা হলেও পাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনরত এসএসসি ও এসএলএসটি মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরি বঞ্চিত প্রার্থীরা (SSC Recruitment Scam)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক ইতিবাচক রায় আশার আলো দেখাচ্ছে আন্দোলনকারীদের । নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি-সহ বাকি গ্রুপের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, কর্মশিক্ষা ও শরীরশিক্ষার নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল, তার থেকে একে একে পর্দা সরছে ৷

সংসারের অভাব অনটন ৷ মা-বাবা আশায় বুক বেঁধে ছিলেন যে সন্তান সরকারি চাকরি পেলে পরিস্থিতি ঘুরবে ৷ তাই সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুত করাতে কাল ঘাম ছুটলেও সব যন্ত্রণা হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন তাঁরা । দিনরাত এক করেও পরীক্ষা দিয়ে ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করেও চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া হয়তো আর কিছুই করা সম্ভব ছিল না ৷ কিন্তু মাথা চাপড়ে যে লাভ হবে না তা বুঝে গিয়েছিলেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা ৷

চাকরি যে তাঁদের হবেই সেই আশায় 2019 সালে প্রেস ক্লাবের সামনে একটা ছোট ত্রিপল টাঙিয়ে বিক্ষোভে বসেন হাতে গোনা কয়েকজন । দিনে দিনে বাড়তে থাকে সেই জমায়েত । সেই সময় লাগাতার অনশন চালানোর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় সাময়িকভাবে আন্দোলন তুলে দেন তাঁরা । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সমস্যা সমাধানের জন্য চাকরি প্রার্থীদের পাঁচজন ও শিক্ষা দফতরের পাঁচ সদস্যদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয় । তবে তারপরেও বন্ধ হয়নি দুর্নীতি ।

এসএসসির পক্ষে রায় আশার আলো বিক্ষোভকারীদের

আরও পড়ুন : সিবিআই তদন্তের মধ্যেই 6961 পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এসএসসির

ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সোমা দাস । বাড়ি বীরভূমের নলহাটি গ্রামে । বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা ও এক বেকার ভাইকে নিয়ে সংসার । মায়ের একটি ছোটখাটো চাকরির টাকা দিয়ে কোনও মতে চলছিল সংসার । আর পড়াশোনা করতে করতে কয়েকজনকে টিউশন পড়াতেন সোমা দাস । এরই মধ্যে তাঁর শরীরে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে । চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল অর্থ । তাই পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেও একরকম ভুলেই গিয়েছিলেন চাকরির কথা সোমা । প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাকিদের সঙ্গে সেই আন্দোলনে যোগ দেন । সোমা বলেন, "প্রথমদিকে যখন আমরা প্রথম ধরনা অবস্থান শুরু করি তখন আমার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ । কিন্তু তখন প্রতিদিন মনকে বুঝিয়েছি এই কষ্টের একদিন নিশ্চয়ই অবসান ঘটবে । নিজের অসুস্থতা, ঝড় বৃষ্টি, তীব্র রোদ উপেক্ষা করে দাঁতে দাঁত চেপে আমরা লড়াই চালিয়ে গিয়েছি । তখন আমাদের পাশে কাউকে পায়নি । তবে আজ আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে ।"

সম্প্রতি তাঁর শারীরিক ও আর্থিক অবস্থার কথা জানতে পেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে অন্য বিভাগে চাকরি দেওয়ার পরামর্শ দেন । কিন্তু সোমা তা নিতে অস্বীকার করেন । সোমা বলেন, "আমরা সবাই মিলে এই সংগ্রামে সামিল ছিলাম প্রথম থেকেই । তাই আজ যখন কিছুটা হলেও তার ফল মিলছে তা আমি একা নিতে পারি না । নিয়োগ পেলে আমরা সবাই পাব ।"

রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা শুভদীপ মান্না উচ্চতায় বেশ লম্বা । শনিবার ঝড়ের মধ্যেই কোনও রকমে ত্রিপলটা সবার মাথার উপরে তাঁকেই ধরে থাকতে দেখা গেল । তিনি বললেন, "লড়াইটা দীর্ঘ ছিল । কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি । আমরা জানতাম সত্যের পথে থাকলে জয় আমাদেরই হবে ।"

কলকাতা, 21 মে : কথায় আছে যার শেষ ভাল তার সব ভাল । সেই ভালর স্বাদ কিছুটা হলেও পাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনরত এসএসসি ও এসএলএসটি মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরি বঞ্চিত প্রার্থীরা (SSC Recruitment Scam)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক ইতিবাচক রায় আশার আলো দেখাচ্ছে আন্দোলনকারীদের । নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি-সহ বাকি গ্রুপের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, কর্মশিক্ষা ও শরীরশিক্ষার নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল, তার থেকে একে একে পর্দা সরছে ৷

সংসারের অভাব অনটন ৷ মা-বাবা আশায় বুক বেঁধে ছিলেন যে সন্তান সরকারি চাকরি পেলে পরিস্থিতি ঘুরবে ৷ তাই সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুত করাতে কাল ঘাম ছুটলেও সব যন্ত্রণা হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন তাঁরা । দিনরাত এক করেও পরীক্ষা দিয়ে ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করেও চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া হয়তো আর কিছুই করা সম্ভব ছিল না ৷ কিন্তু মাথা চাপড়ে যে লাভ হবে না তা বুঝে গিয়েছিলেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা ৷

চাকরি যে তাঁদের হবেই সেই আশায় 2019 সালে প্রেস ক্লাবের সামনে একটা ছোট ত্রিপল টাঙিয়ে বিক্ষোভে বসেন হাতে গোনা কয়েকজন । দিনে দিনে বাড়তে থাকে সেই জমায়েত । সেই সময় লাগাতার অনশন চালানোর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় সাময়িকভাবে আন্দোলন তুলে দেন তাঁরা । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সমস্যা সমাধানের জন্য চাকরি প্রার্থীদের পাঁচজন ও শিক্ষা দফতরের পাঁচ সদস্যদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয় । তবে তারপরেও বন্ধ হয়নি দুর্নীতি ।

এসএসসির পক্ষে রায় আশার আলো বিক্ষোভকারীদের

আরও পড়ুন : সিবিআই তদন্তের মধ্যেই 6961 পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এসএসসির

ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সোমা দাস । বাড়ি বীরভূমের নলহাটি গ্রামে । বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা ও এক বেকার ভাইকে নিয়ে সংসার । মায়ের একটি ছোটখাটো চাকরির টাকা দিয়ে কোনও মতে চলছিল সংসার । আর পড়াশোনা করতে করতে কয়েকজনকে টিউশন পড়াতেন সোমা দাস । এরই মধ্যে তাঁর শরীরে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে । চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল অর্থ । তাই পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেও একরকম ভুলেই গিয়েছিলেন চাকরির কথা সোমা । প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাকিদের সঙ্গে সেই আন্দোলনে যোগ দেন । সোমা বলেন, "প্রথমদিকে যখন আমরা প্রথম ধরনা অবস্থান শুরু করি তখন আমার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ । কিন্তু তখন প্রতিদিন মনকে বুঝিয়েছি এই কষ্টের একদিন নিশ্চয়ই অবসান ঘটবে । নিজের অসুস্থতা, ঝড় বৃষ্টি, তীব্র রোদ উপেক্ষা করে দাঁতে দাঁত চেপে আমরা লড়াই চালিয়ে গিয়েছি । তখন আমাদের পাশে কাউকে পায়নি । তবে আজ আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে ।"

সম্প্রতি তাঁর শারীরিক ও আর্থিক অবস্থার কথা জানতে পেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে অন্য বিভাগে চাকরি দেওয়ার পরামর্শ দেন । কিন্তু সোমা তা নিতে অস্বীকার করেন । সোমা বলেন, "আমরা সবাই মিলে এই সংগ্রামে সামিল ছিলাম প্রথম থেকেই । তাই আজ যখন কিছুটা হলেও তার ফল মিলছে তা আমি একা নিতে পারি না । নিয়োগ পেলে আমরা সবাই পাব ।"

রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা শুভদীপ মান্না উচ্চতায় বেশ লম্বা । শনিবার ঝড়ের মধ্যেই কোনও রকমে ত্রিপলটা সবার মাথার উপরে তাঁকেই ধরে থাকতে দেখা গেল । তিনি বললেন, "লড়াইটা দীর্ঘ ছিল । কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি । আমরা জানতাম সত্যের পথে থাকলে জয় আমাদেরই হবে ।"

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.