কলকাতা ও শিলিগুড়ি : কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তো আগে থেকেই কোরোনা পরিস্থিতি জটিল ছিল । এবার যত দিন যাচ্ছে, ক্রমেই জটিল হচ্ছে উত্তরবঙ্গের কোরোনা পরিস্থিতি । রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর প্রকাশিত সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এখনও পর্যন্ত মোট 1206 জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে । কিছুদিন আগে পর্যন্তও পরিস্থিতি এতটা জটিল ছিল না উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে । স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রকাশিত 25 মে-র বুলেটিনে এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র 190 ।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই আড়াই সপ্তাহে কতটা বদলেছে উত্তরবঙ্গের কোরোনা পরিস্থিতি --
- আলিপুরদুয়ার জেলায় 25 মে কোনও সংক্রমণ ছিল না । এখন সেখানে মোট 41 জন সংক্রমিত ।
- কোচবিহারে 25 মে সংক্রমণমুক্ত ছিল । এখন এই আড়াই সপ্তাহে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে 246 ।
- দার্জিলিঙে 25 মে পর্যন্ত 12 জনের শরীরে সংক্রমণের হদিস পাওয়া গেছিল । এখন সেখানে সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে 184 ।
- কালিম্পঙে 7 জন থেকে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে 39 ।
- জলপাইগুড়ি জেলায় 25 মে পর্যন্ত 4 জনের শরীরে সংক্রমণের হদিস পাওয়া গেছিল । এখন সেখানে কোরোনায় আক্রান্ত 165 জন ।
- উত্তর দিনাজপুরে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল 46 । এখন তা বেড়ে হয়েছে 214 ।
- দক্ষিণ দিনাজপুরে পাঁচ থেকে সংখ্যাটা বেড়ে 64 ছুঁয়েছে ।
- মালদায় 25 মে সংক্রমিত ছিলেন 116 জন । এখন সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে 253 ।
এদিকে দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি । রাজ্য সরকারের প্রকাশিত আজকের বুলেটিন অনুযায়ী 10 হাজার 244 । গতকাল সংখ্যাটি ছিল 9768 । আজ নতুন করে 476 জনের শরীরে মিলেছে ভাইরাসের হদিস । আজ কোরোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে ন'জন । এই নিয়ে রাজ্যে মোট কোরোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল 451 ।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে 4206 জন মানুষ কোরোনামুক্ত হয়ে উঠেছেন । শেষ 24 ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন 218 জন । রাজ্যে এই মুহূর্তে কোরোনায় সংক্রমিত হয়েছেন চিকিৎসাধীন রয়েছেন 5587 জন । রাজ্যে বর্তমানে সুস্থ হয়ে ওঠার হার 41.05 শতাংশ ।
রাজ্যে গতকাল পর্যন্ত 3 লাখ 6 হাজার 941 জনের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে । আজ 8 হাজার 758 জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয় । এপর্যন্ত মোট 3 লাখ 15 হাজার 699 জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে । প্রতি 10 লাখে 3508 জনের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে । নমুনা পরীক্ষার পর বর্তমানে কোরোনা আক্রান্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে 3.24 শতাংশ । রাজ্যে নমুনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরির সংখ্য়া 45 । এই সপ্তাহে আরও তিনটি ল্যাবরেটরি যুক্ত হয়েছে । এর মধ্য়ে একটি ল্য়াবরেটরি এখনও অনুমোদন পায়নি ।
রাজ্য়ে সরকারি কোয়ারানটিনের মোট সংখ্য়া 582 । বর্তমানে সেখানে 17 হাজার 36 জন রয়েছেন । এপর্যন্ত সরকারি কোয়ারানটিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন 77 হাজার 947 জন । এপর্যন্ত হোম কোয়ারানটিনে রয়েছেন 2 লাখ 72 হাজার 562 জন । বর্তমানে হোম কোয়ারানটিনে রয়েছেন 1 লাখ 57 হাজার 289 জন ।
ভিনরাজ্য থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের জন্য এই মুহূর্তে রাজ্যে 10 হাজার 946 টি কোয়ারানটিন সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে । বর্তমানে সেখানে 1 লাখ 5 হাজার 842 জন রয়েছেন । ছাড়া পেয়েছেন 1 লাখ 27 হাজার 695 জন । এই মুহূর্তে রাজ্যে কোরোনা হাসপাতালের সংখ্যা 69 । এর মধ্যে 16টি সরকারি ও 53টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে । কোরোনা হাসপাতাগুলিতে মোট শয্য়ার সংখ্যা 8785 । ICU যুক্ত শয্যার সংখ্যা 920 । এই মুহূর্তে হাসপাতালগুলিতে মোট ভেন্টিলেটরের সংখ্য়া 392 ।