নয়াদিল্লি, 19 মে: রামনবমী নিয়ে গোলমালের ঘটনায় এনআইএ-র হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷ শুক্রবার সেই আবেদনের ভিত্তিতে এনআইএ তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করতে অস্বীকার করল সুপ্রিম কোর্ট ৷
এ দিন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পি এস নরসীমা ও কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয় ৷ সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে এনআইএ তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু শীর্ষ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ৷ আদালত জানিয়েছে, গ্রীষ্মাবকাশের পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৷
এই বছর রামনবমীতে হাওড়ার শিবপুর ও হুগলির রিষড়ায় ব্য়াপক গোলমাল হয় ৷ এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুু অধিকারী ৷ তিনি এনআইএ তদন্তের দাবিতে ওই মামলা দায়ের করেন ৷ সেই মামলাতেই কলকাতা হাইকোর্ট এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল ৷ আদালতের নির্দেশের পর তদন্তের কাজ শুরুও করেছেন সন্ত্রাসবাদ দমনকারী এই তদন্তকারী সংস্থা ৷ ইতিমধ্যে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে এনআইএ-র তরফে ৷
এ দিন সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হয়ে সওয়াল করেন রাজ্যসভার সাংসদ কংগ্রেসের অভিষেক মনুসিংভি এবং গোপাল শঙ্করনারায়ণ ৷ তাঁদের দাবি, আদালত চন্দননগরের একটি ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে আদালত ৷ বাকি পাঁচটি অভিযোগের ক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ তদন্ত করতে পারে আদালত নির্দেশ দিতে ৷
সিংভির বক্তব্য, এনআইএ-র তদন্তের ক্ষেত্র একেবারে সুস্পষ্ট করা আছে ৷ তারা সাধারণ হিংসার ঘটনাকে এর মধ্যে আনতে পারে না, যতক্ষণ না এটা দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক হয় ৷ তাই হয় পুলিশ আধিকারিকদের এনআইএ-র তলব করা নিয়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক অথবা হাইকোর্টের রায়ের উপরই স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক ৷
আদালত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবীদের জানায়, ‘‘ধরে নিচ্ছি যে উচ্চ আদালত একটি এফআইআর উল্লেখ করেছে ৷ কিন্তু এই সমস্ত ঘটনা একই বিষয়ের অন্তর্গত ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে এবং উচ্চ আদালত তার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মনে যে এর তদন্ত এনআইএ-কে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ।’’
এনআইএ-র হয়ে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা ৷ তিনি জানান, এনআইএ মামলা দায়ের করেছেন ৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে নথি চাওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু তা এখনও দেওয়া হয়নি ৷ শীর্ষ আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে ৷ শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষের আইনজীবী মুকুল রোহতগি ও পিএস পটওয়ালিয়া আবেদন করেন, হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হলেও এনআইএ-কে তদন্ত চালিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়া হোক ৷
শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘বিস্ফোরক ব্যবহার একটি নির্ধারিত অপরাধ, যার জন্য এনআইএ-কে তদন্ত করার জন্য ডাকা যেতে পারে । হাইকোর্ট তার আদেশে রেকর্ড করেছে যে সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত এফআইআরগুলিতে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে বিস্ফোরক পদার্থ আইনের কথা বাদ দিয়েছে ৷’’
আরও পড়ুন: রামনবমীর অশান্তির ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের