কলকাতা, 24 জানুয়ারি: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এ যাবতকালের নজিরবিহীন ঘটনা (saraswati puja pandel decorated on school service Commission Recruitment scam )। আদালতের নির্দেশে চলছে সিবিআই তদন্ত । আর সেই তদন্তে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । এরপর তদন্ত যত এগিয়েছে রাজ্যবাসীর চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে । প্রাক্তন মন্ত্রী ও বান্ধবীর একাধিক ফ্ল্যাটের হদিশ মিলেছে ৷ সেখান থেকে মিলেছে কোটি কোটি টাকা । যা অযোগ্য প্রার্থীদের শিক্ষক পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বললেও ভুল হয় না ৷ এবার সরস্বতী পুজোর থিমে উঠ এল 'শিক্ষা ক্ষেত্রের দুর্নীতি' থিম ৷
এই দুর্নীতির ঘটনা এবার থিম হিসেবে উঠে এসেছে বিদ্যার দেবী আরধনায় । কাঁকুরগাছি রেল ব্রিজ লাগোয়া একটি মণ্ডপের সরস্বতী পুজোর থিম এটাই । এই মণ্ডপের আয়োজক বিশ্বজিৎ সরকার । তিনি ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রয়াত বিজেপি সমর্থক অভিজিৎ সরকারের দাদা। শ্রী শ্রী সরস্বতী ও কালীমাতা মন্দির পরিষদ নামেই এই সরস্বতী পুজো । এই মণ্ডপের সামনে ফ্লেক্সে লেখা 'বঙ্গে বিক্রি বিদ্যা' । তাঁর কাথায়, থিমের নামেই প্রতিবাদের ভাষা প্রকাশিত । এই মণ্ডপ তিনি নিজেই সাজিয়ে তুলেছেন । মণ্ডপের থিম ভাবনাও তাঁর ৷
এই মণ্ডপে তিনটি ভাগ করা হয়েছে ৷ এক জায়গায় সাজানো হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবীর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি । সামনে দাড়িপাল্লা ৷ এক দিকে 500 টাকা, 2000 টাকার নোট আর সোনার গয়না । যার ভারে হালকা হয়েছে শিক্ষা । বলা যায় দাড়ি পাল্লার একদিকে বিদ্যার দেবী সরস্বতী । কিন্তু টাকার ভারে বিদ্যারদেবী হালকা ৷ তার পিছনে ফ্লেক্স লেখা এখানে সুলভ মূল্যে ফেলু মাস্টারদের সরকারি শিক্ষক বানানো হয় । আপা এডুকেশন সেন্টার । যা মানে, আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ অনেকটা 'সামাজদারকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যয়' ৷ মণ্ডপের আরেক পাশে তৈরি হয়েছে ধর্ণমঞ্চ । সেখানে ধর্না দিচ্ছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা । তাদের দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড হতে । আর মাঝে আছে সরস্বতী মূর্তি । তার সামনে দুটি খাঁচা রাখা। একটিতে বাক্দেবী বন্দি । অন্যটিতে বই খাতা বন্দি ।
আরও পড়ুন: এবছর বসন্ত পঞ্চমীর পুজো করা যাবে দু'দিন
থিমের স্রষ্ঠা বিশ্বজিৎ সরকার জানান, রাজ্যে শিক্ষিত বেকারদের সঙ্গে এই সরকার যে দুর্নীতি প্রতারণা করেছে সেই ঘটনাকেই তুলে ধরা হয়েছে । তাই আমরা বিষয় ভাবনার নাম দিয়েছি আমাদের প্রতিবাদের ভাষা । যোগ্য প্রার্থীরা দিনরাত পরিবার ছেড়ে রাস্তায় ৷ তাঁরা ন্যায় পাবে চাকরি পাওয়ার পরেই ৷ আর শাসকদল নেতা মন্ত্রীরা দেদার টাকা নিয়ে অযোগ্য লোকজনকে ঢুকিয়েছেন । শিক্ষিতদের চোখের জল বিক্রি করে হয়ে গিয়েছে অযোগ্যদের কাছে ।