কলকাতা, 9 মে: কালজয়ী সাহিত্যক সমরেশ মজুমদার সোমবার ইএমবাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার তাঁর অনুরাগীদের ভিড়েই শবদেহ নিয়ে যাওয়া হল শেষকৃত্যের জন্য। প্রয়াত সাহিত্যিকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল খানিকটা অনাড়ম্বরেই ৷ যদিও বিদায়বেলায় সমরেশ মজুমদারকে শেষ সম্মান জানাতে ভিড় জমালেন শাসক-বিরোধী সব রাজনৈিক দলের নেতারা। ফুলের মেলায় শেষ শ্রদ্ধা জানানো হল তাঁকে। তবে শেষবেলায় আধুনিক কবি, সাহিত্যিক কিংবা লেখকদের দেখা মেলেনি উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর স্ট্রিটের বাড়িতে ৷ তিনতলা বাড়ির নীচের তলায় ছোট্ট ঘরে সাদা কাপড় ঢেকে শোওয়ানো ছিল সাহিত্যিকের মরদেহ ৷
ছোটবেলার বন্ধু থেকে, পাঠক-পাঠিকারা সকাল থেকেই এসেছেন ফুলমালা দিয়ে শেষ বিদায় জানাতে। প্রয়াত সাহিত্যিককে শেষ বিদায় জানাতে হাজির হন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, "তাঁকে হারানো শুধু সাহিত্য জগতের কাছে নয় কয়েক প্রজন্মের জন্য ক্ষতি। তাঁর সৃষ্টি, তাঁর লেখা সব প্রজন্মকে রসদ জুগিয়ে যাবে বছরের পর বছর।" মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনিও ভারাক্রান্ত মনে দুঃখ প্রকাশ করেন সমরেশ মজুমদারের মৃত্যুতে।
এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও শ্যামপুকুরের বিধায়ক শশী পাঁজা। তাঁর কথায়, যে সৃষ্টি তিনি রেখে গেলেন তাকে সযত্নে লালন করা আমাদের কর্তব্য। সেটা আমদের রক্ষা করতে হবে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, রবিন দেব, শতরূপ ঘোষ। মহম্মদ সেলিম বলেন, "শুধু সাহিত্যিক নয় সমাজ সচেতক ছিলেন। সমাজ উপযোগী করে তাঁর লেখা ছিল অসামান্য। আমরা ছাত্রাবস্থায় তাঁর লেখা পড়েছি। পরবর্তী সময়ে পড়েছি। এখনকার প্রজন্মের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয় তাঁর লেখা।
আরও পড়ুন: সমরেশ প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সাহিত্যমহল, 'ভাইকে হারালাম'-বললেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
বাংলাদেশের তরফে প্রতিনিধিরা মাল্যদান করে অন্তিম শ্রদ্ধা জানান 'কালবেলা', 'উত্তরাধিকার'-এর স্রষ্টাকে। তাঁরা বলেন, "দুই বাংলার সাহিত্য জগতের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর অকাল প্রয়াণ দুঃখের। তিনি এই বাংলার সঙ্গে ওই বলতেও সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন।" এরপর তাঁর বাসভবন থেকে মরদেহ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা মহাশ্মশানে ৷ সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর।