কলকাতা, 8 অক্টোবর: টানা পাঁচ ঘণ্টা সিবিআই তল্লাশি চলে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের ভবানীপুরের বাড়িতে। রবিবার টানা তল্লাশি চালানোর পর বেরিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই-এর মুখোমুখি হওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে এসে মদন মিত্র বলেন, "জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের চাকরির জন্য লড়াই করব ৷ কোথাও আমার সঙ্গে দুর্নীতির যোগ আছে প্রমাণ করতে পারলে গলায় দড়ি দিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেব।"
এদিন দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর ভবানীপুরে বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মদন মিত্র ৷ সেখানে তিনি বলেন, "সামনে কিন্তু মায়ের মঞ্চ বাধা রয়েছে। মা দুর্গা আসছেন। মা দুর্গার আসাটা বোধহয় সিবিআই-ইডি ঠেকাতে পারবে না। ওরা এসেছেন যা যা জানতে চেয়েছেন আমরা জানিয়েছি। যা চেয়েছেন দিয়েছি। এখন আমি শুনছি ওরা দক্ষিণেশ্বরের বাড়িতেও গিয়েছে। একটা কথা বলি, যখন এই চাকরি হয়েছে পৌরসভায়, প্রথমত তখন আমি বিধায়ক ছিলাম না। দ্বিতীয়, আমি তখন কাস্টডিতে ছিলাম। কীভাবে একজন ব্যক্তি কাস্টডিতে বসে সবকিছু মনিটর করতে পারে ! যদি এত পাওয়ার থাকে তাহলে তো আমরা গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছি। একজন বিধায়ক না থাকা ব্যক্তি জেল থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ! এরপর তো আর কিছু বলার নেই।"
মদন মিত্র আরও বলেন, "দক্ষিণেশ্বর হল আমার অফিস। একজন বিধায়কের অফিস মানে একজন পিয়ন থাকে সেখানে ৷ বিধায়ক থাকুন অথবা না থাকুন। অনেকেই সেখানে চাকরির জন্য আসেন। আমরা এই বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষ। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাইলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে পারে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা তা পারি না। যদি আমাদের কাছে একজন ভিখারিও আসে তাদের আমরা একটু চাল, একটু জল, মিষ্টি দিই। বাচ্চারা দেখা করতে আসলে তাদের একটা চকোলেট দিই। কেউ আমাদের কাছে চাকরির আবেদন নিয়ে এলে আমরা তাদের ডান্ডা মেরে তাড়িয়ে দিতে পারি না। আমার অবর্তমানে হতে পারে হাজার হাজার আবেদন এই ধরনের জমা পড়েছে। কিন্তু দেখতে হবে এই হাজার হাজার আবেদনের মধ্যে হাজার হাজার আবেদনের চাকরি হয়েছে কি না। সেই হাজার হাজার চাকরিতে আমার কোন হাত ছিল কি না দেখতে হবে। তার কোনও প্রমাণ আছে কি না ! ধরে নেয়া হল আমার এখানে আবেদন করেছিল এমন কেউ চাকরি পেয়েছে, তাকে জেরা করা হোক সে দুর্নীতি করে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে কি না।"
আরও পড়ুন: 144 ধারার মধ্যে মঞ্চ বেঁধে কীভাবে অভিষেকদের ধরনা ? মুখ্যসচিবকে চিঠি রাজ্যপালের
এদিন মদন মিত্র বলেন, "যদি শীল আর ঝিল দেখে তোমরা আসো তাহলে মুশকিল। আমার সঙ্গে এসব কোনও কারবার ছিল না। আমি মদন মিত্র বুকের পাটা ফুলিয়ে বলছি। ছেলে মেয়েদের চাকরির জন্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করব। তাতে যদি কেউ এক ইঞ্চি দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে আমাকে বারবার প্রয়োজন পড়বে না। নিজে গলায় দড়ি দিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেব।"