কলকাতা, 3 এপ্রিল: ডালখোলা, শিবপুর, রিষড়ার মতো রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ৷ প্রাশসনিক ও পুলিশ সূত্রে খবর, কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণেই এই ঘটনা ঘটছে ৷ ইতিমধ্যেই এই এলাকাগুলিতে শান্তি ফেরাতে তৎপর হয়েছে পুলিশ ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আবেদন জানিয়েছেন, তাঁর উপর ভরসা রাখতে ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৷ কোনও সম্প্রদায়ের রঙ না দেখে দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন তিনি ৷
তারপরেও প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ৷ হাওড়া শিবপুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় গলদ ছিল বলে প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৃহস্পতিবারের সেই ঘটনার রেশ ফুরানোর আগেই রবিবার অশান্তি ছড়ায় হুগলির রিষড়ায় ৷ ফলে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের মতো এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে চন্দননগর পুলিশের কমিশনারেটের ভূমিকা নিয়েও ৷ হাওড়ার পার্শ্ববর্তী জেলাই হুগলি ৷ সেখানকার প্রাণকেন্দ্রে এরকম তাণ্ডব দুষ্কৃতীরা চালাল, অথচ শিবপুরের ঘটনার পরেও পুলিশ কেন তার আগাম আভাস পেল না সেই প্রশ্ন তুলছেন আম জনতা থেকে বিরোধীরা ৷
রিষড়ার রামনবমীর মিছিলের আগে পুলিশ আগাম কোনও খবর সংগ্রহের চেষ্টা করেছিল কি না সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ৷ চন্দননগর পুলিশের তরফে আগাম কোনও তৎপরতাও যে ছিল না সেই অভিযোগও উঠছে ৷ রিষড়ায় গতকাল এলাকার বহুতল বা উঁচু বাড়ি গুলি থেকে ঢিল ও কাঁচের বোতল ছুড়ে আক্রমণ চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷ প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রী নিজে যখন তাঁর ধরনা মঞ্চ থেকে বারবার শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমীর মিছিল করার আবেদন জানাচ্ছিলেন, তারপরেও কেন আরও সতর্ক হল না পুলিশ !
এই ঘটনাগুলির পর ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে প্রত্যেকটি কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকার বহুতলগুলির উপর নজর রাখতে এবং কোন এলাকায় কোন কোন ব্যক্তি অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৷ যদিও চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত জাভালগি জানিয়েছেন,পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে এবং এলাকায় পুলিশ পিকেট মজুদ রয়েছে । নেমেছে ব়্যাফ ৷ 144 ধারা জারি করা হয়েছে এলাকায় ৷
আরও পড়ুন: 'হঠাৎই উড়ে এল একের পর এক পেট্রল বোমা !' রবিবারের কথা বলতে গিয়ে আঁতকে উঠছেন রিষড়াবাসী
ভবানী ভবন সূত্রে খবর, এলাকায় নাকা চেকিং থেকে শুরু করে বহিরাগত এবং দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া গেলেই পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হবে । এছাড়াও কলকাতা পুলিশের মতো রাজ্য পুলিশকেও ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ভাবছেন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা ৷ সম্প্রতি তিলজলায় এক নাবালিকাকে অপহরণ করে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৷ সেই ঘটনা ও তার পরের অশান্তির ঘটনাতেও কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ এরপরেই কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল নির্দেশ দেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (ট্রেনিং) এর তত্ত্বাবধানে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের টিয়ারগ্যাস ফাটানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ।