কলকাতা, ১৪ মার্চ : অবিলম্বে সপ্তম পে কমিশন চালু করার দাবিতে গতকাল তিন ঘন্টার কর্মবিরতি করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী অধ্যাপকরা। গতকাল দুপুর ২ টো থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনের বারান্দায় অবস্থান করেন তাঁরা। কর্মবিরতি ও এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন JUTA, অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের যাদবপুর শাখা ও ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক শাখার সদস্যরা।
সপ্তম পে কমিশন চালুর পাশাপাশি কর্মসূচি থেকে আরও একটি দাবি তোলেন অধ্যাপকরা। তা হল, ২০১১ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কমিটিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে JUTA-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, " এটা শুধু JUTA-র প্রোগ্রাম নয়। এটা JUTA, ABUTA-র যাদবপুর শাখা এবং WBCUTA যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমারি চ্যাপ্টার, আমরা এই তিনটে সংগঠন মিলে একসঙ্গে এই প্রোগ্রামটা করছি। এই প্রোগ্রামে আমাদের বেশ কয়েকটা দাবি আছে। তবে, মূলত এক নম্বরে আছে UGC-র যে সপ্তম পে কমিশন যা ভারতবর্ষের সব কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়ে গেছে, বহু স্টেট ইউনিভার্সিটিতেও হয়ে গেছে, আমরা সেটা যত দ্রুত সম্ভব দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে এই পে কমিশন প্রকাশিত হয়েছে। আমরা চাই শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনে নির্বাচিত প্রতিনিধি আনা হোক। যা গত ২০১১ সালের পর থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে।"
এই দুটি প্রধান দাবির পাশাপাশি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, " যাঁরা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক রয়েছেন তাঁদের একটি নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো করা হোক। এর সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যের যে জনবিরোধী শিক্ষানীতি তার বিরুদ্ধেও এই অবস্থান।"
কেন্দ্র ও রাজ্যের জনবিরোধী শিক্ষানীতি বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "যেমন শিক্ষার বেসরকারিকরণ। এখন দেখা যাচ্ছে জিও ইনস্টিটিউটকে ইন্সটিটিউট অফ এমিনেন্সের তকমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে। অথচ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সেই লিস্টে থাকা সত্ত্বেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনও পর্যন্ত ইনস্টিটিউট অফ এমিনেন্সের তকমা দেওয়া হয়নি। গবেষণা খাতে দিনের পর দিন টাকা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকার এটা করছে, রাজ্য সরকারও অন্যদিকে প্রায় একই রকমভাবে বেসরকারি ইউনিভার্সিটি ও ইনস্টিটিউটগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলোকে পুরো ভেঙে দিয়েছে। দুটো জায়গাতেই দুই সরকার আক্রমণ করছে। তার বিরুদ্ধেই আমাদের আজকের এই অবস্থান।"
প্রসঙ্গত, সপ্তম পে কমিশন চালুর দাবিতে গত বছরই শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের তরফ থেকে। উপাচার্য এলে তাঁর সঙ্গে মূলত এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিল, ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল ও কোর্ট কমিটিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি আনার বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন পার্থপ্রতিম রায়।