কলকাতা, 8 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যে চলছে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ (Road Safety Week)। তাই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দু চাকা এবং চার চাকার চালকদের সচেতন করতে শহরের 25টি ট্রাফিক গার্ড-সহ রাজ্যের জেলা পুলিশ কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছে । তবে অন্যান্য বছর রাজ্য তথা শহরের বিভিন্ন ছোট-বড় রাস্তায় এই কর্মসূচি পালন করা হলেও পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও কম করতে এ বার তৎপর কলকাতা ট্রাফিক পুলিশও । এই বছর পথ নিরাপত্তা দিবসে দু চাকার গাড়ির চালক থেকে শুরু করে বাসচালক এবং পুলকার চালকদেরও সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে (Private operators reaction on Road Safety Week)।
সবকটি ট্রফিক পুলিশ গার্ড (Kolkata Traffic News) নিজেদের মতো করে কর্মসূচি পালন করছে । সম্প্রতি পথ নিরাপত্তা দিবসের সূচনা করে নগরপাল বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন যে, আগের চেয়ে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটা কমেছে । তবে চালক এবং পথচারীদের আরও বেশি সচেতন ও তৎপর হতে হবে । ট্রাফিক আইন, কীভাবে রাস্তা পারাপার করতে হয়, এই ধরনের একেবারে মৌলিক বিষয়গুলি সম্বন্ধেও সচেতন করা হবে ।
ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বেসরকারি পরিবহণ মালিকরা । অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আগে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ মানে বাসমালিক ও চালকদের কাছে একটা আতঙ্ক ছিল । মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে যেন এই সপ্তাহটা অতিরিক্ত কর আদায়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে । তবে মনে হয়, এত দিনে সম্বিত ফিরেছে ট্রাফিক বিভাগের । এই বছর ট্রাফিক আইন মেনে চলার বিষয়ে বাস এবং অন্যান্য গাড়ির চালকদের পাঠ দেওয়া হচ্ছে । আমরা ট্রাফিক বিভাগের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই ।"
তিনি আরও বলেছেন, "পুলিশ একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে । এর ফলে সমগ্র রাজ্যের ট্রাফিক অবস্থার নিঃসন্দেহে উন্নতি হবে । তবে এটা যদি শুধু এই সাতদিন মান্যতা দেওয়ার পাশাপাশি বছরের বাকি দিনগুলিতেও মান্যতা দেওয়া হয়, তাহলে সেটাই হবে কাজের কাজ । এর ফলে আইনভঙ্গের সংখ্যা-সহ জরিমানার পরিমাণও কমবে এবং কর্মচারীদের মধ্যেও একটা দায়বদ্ধতা আসবে ।"
আরও পড়ুন: আসানসোল পুলিশের অভিনব উদ্যোগ, 30 শতাংশ ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে হেলমেট
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে, ট্রাফিক পুলিশ নিজেদের কোটা পূরণের জন্য যেভাবে অনৈতিক জরিমানা করে সেটাও বন্ধ হতে হবে । আর যদি কেউ বলেন যে, কোটা ব্যবস্থা নেই তবে তিনি একটি ধ্রুব সত্য কথাকে অসত্য বলছেন ।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায় বলেন, "একটি শিশু যেমন জন্মেই রাস্তা চলতে পারবে না, তাকে হাত ধরে চলা ও বলা শেখানো হয়, তেমনভাবেই স্কুলস্তর থেকেই ট্রাফিক নিয়ম সম্বন্ধে বাচ্চা থেকে বড় সকলকেই সচেতন করতে হবে । প্রতিদিন আমাদের রাস্তায় বেরোতে হয় । তাই রাস্তায় কীভবে চলবে কিংবা বাস বা গাড়ির চালকদের ক্ষেত্রে কীভাবে গাড়ি চালাব, সেটা তাঁদের হৃদয়ঙ্গম করতে হবে । তাই বছরের শুধু সাতদিন নয় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও এই ধরনের সচেতনতার পাঠ দিতে হবে ।"
তিনি আরও বলেন, "বাস চালকদের প্রতি আমার অনুরোধ যে, তাঁরা যেন যে গতি নির্ধারিত রয়েছে সেই গতিতেই গাড়ি চালান ৷ অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে রেষারেষি করা একেবারে বাঞ্ছনীয় নয় ৷ রেষারেষি করে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে ৷ যাত্রীরা উঠলেন বা নামলেন কি না সেই বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হবে এবং গাড়ি চালাবার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার একেবারে বন্ধ করতে হবে ।"
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে প্রয়াত প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর আমলে সারা রাজ্যজুড়ে লাগাতার ন'বছর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত ভাবে এই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবির করা হত বলেও জানান তপন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷