কলকাতা, 31 মে: কোমায় চলে গিয়েছে রাজ্যের পরিবহণ শিল্প । তাই অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি তুলল বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি । আগামী 14 জুনের মধ্যে যদি রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ না করে, তাহলে আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধির পথেই হাঁটবে বাস সংগঠনগুলি । বুধবার তাদের তরফে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, 2018 সাল থেকে বাড়েনি বেসরকারি বাসের ভাড়া । তবে এই কয়েক বছরের মধ্যে একাধিকবার বেড়েছে জ্বালানির দাম থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুর । ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটস, বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটস, মিনিবাস ওনার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি এবং ইন্টার-ইন্ট্রা রিজিওনাল বাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযোগ নিয়ে আজ এই পাঁচটি বেসরকারি বাস সংগঠন একত্রিতভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন । 11 দফা দাবিদাওয়া নিয়ে আজ তারা পরিবহণ দফতরে গিয়ে পরিবহণ সচিবের কাছে ডেপুটেশন জমা দেয় ।
তাদের 11 দফা দাবির মধ্যে মূল দু’টি দাবি হল, 15 বছরের পুরনো বাস বাতিল না করে সেই বাসেই নতুন ইঞ্জিন বসিয়ে চালাতে দিতে হবে এবং বেসরকারি বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করতে হবে । জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মানব দেহে যদি অকেজো কিডনি বা লিভার প্রতিস্থাপন হতে পারে, তাহলে পুরনো বাসে নতুন ইঞ্জিন বসিয়েই সে গাড়ি কেন চালানো যাবে না ? কারণ বর্তমানে পরিবহণ শিল্প কোনও মতে নিঃশ্বাস নিচ্ছে । তাই পুরনো বাস বাতিল করে তার জায়গায় 30 থেকে 35 লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাস মালিকদের পক্ষে নতুন বাস নামানো সম্ভব নয় । আর সম্পূর্ণ গাড়ি দূষণ সৃষ্টি করে না । দূষণ সৃষ্টি করে ইঞ্জিন । তাই ইঞ্জিন বদলালেই যথেষ্ট । এমনটাই দাবি করা হয় ।
আরও পড়ুন: জ্বালানির দাম বাড়ায় বাস চালানো অসম্ভব, পরিবহন দপ্তরের দ্বারস্থ মালিক সংগঠন
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, 2018 সালের পর থেকে বেসরকারি বাসের ভাড়া আর বাড়েনি । তাই পরিবহণ শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেন অবিলম্বে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ।
তাঁদের বাকি দাবিদাওয়াগুলি হল - জেলায় বর্ধিত টোল ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে, ডিজেলের দাম বাড়াতে হবে এবং তাতে জিএসটি বসাতে হবে, পুলিশের অতিরিক্ত ফাইন প্রত্যাহার করতে হবে, জেলায় অবৈধভাবে অটো ও টোটো চলা বন্ধ করতে হবে, কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিক্যাল আইন পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং বাস ও মিনিবাসে ভিএলটিএস বসানোর ক্ষেত্রে অনুদান দিতে হবে ।
আরও পড়ুন: এখনই বাড়ছে না বেসরকারি বাসের ভাড়া, কড়া বার্তা নবান্নের
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও তার আগে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করা সত্ত্বেও সুরাহার কোনও পথ বেরোয়নি । তাই পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে শেষ বৈঠক অনুসারে আগামী 14 জুন পর্যন্ত সময় নিচ্ছে সংগঠনগুলি । আর তারপরেও যদি রাজ্য সরকারের টনক না নড়ে তাহলে রাস্তায় বাসের সঙ্গে এক লাফে অনেকটাই নেমে যাবে বলে তাদের হুঁশিয়ারি ।